গতবছর একই সময়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল আমাদের অসাধু ব্যাবসায়িদের চক্রান্তে । ঐ সময় ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছিল । ৩০০ টাকা কেজি পেঁয়াজ খাইয়েছে আমাদের ব্যাবসায়িরা । এবার বর্ডারে ট্রাক এনে এল সির শর্ত ভেঙ্গে ৩০০ ডলারের পেঁয়াজ ৮০০ ডলার হাকাচ্ছে । আন্তঃজাতিক পরিমণ্ডলে এই কুকর্ম কেউ করেনা । এল সির বিপরীতে পেঁয়াজ দিয়ে দাও তারপর দাম বাড়াও । আমি জানিনা শিপিং ডকুমেন্ট দেখিয়ে পেমেন্ট নেওয়া হয়েছে কিনা , হলে তা ভারি অন্যায় ।
প্রথমত আমাদের লুইচ্চা ব্যাবসায়িদের ছাড় দেওয়া যাবেনা । বাজারে গনতন্ত্র থাকবেনা । একদামে বেচতে পারলে বেচুন নাহয় ব্যাবসা ছাড়ুন ।
গেলবার বিবিধ দেশ থেকে পেঁয়াজ এসেছিল দেরিতে । আমাদের উচিত ওইসব ভেনুতে সবসময়ের জন্য কথা বলে রাখা আগামীর সংকট নিরসনের জন্য । ভারত এখন আমাদের অবিশ্বস্ত প্রতিবেশী যে গলায় ছুরি ধরে পয়সা আদায় করছে । আমাদেরও বিকল্প ব্যাবস্থা রাখা উচিত । আমাদের জুম এলাকায় বার মাসি পেঁয়াজ চাষে মনোযোগ দিতে হবে । এটি সরকার ছাড়াও বিবিধ এন জি ও করতে পারে । চীন , মিশর আমাদের সহযোগী হতে পারে । এই মুহূর্তে দেশে ছয় লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে যা আগামি তিনমাস চালিয়ে নেয়া যাবে কিন্তু পেঁয়াজ ব্যাবসায়িরা দাম বাড়িয়েছে সবাইকে এক হাত দেখিয়ে দেবার উদ্দেশ্যে । কাল রাতে পেঁয়াজের দাম ৪৮ থেকে ৬০ আর ৬০ থেকে ৮০ টাকা উঠেছে । অভিযান শুরু হলে অভিমানী বিক্রেতারা বিক্রি বন্ধ করে দেন । এই মুহূর্তেই পেঁয়াজ ১০০ টাকা খুচরা বিক্রি হচ্ছে । বাজার কারা নিয়ন্ত্রন করে এখন এটাই বড় প্রশ্ন । তারা এক ঘণ্টায় ২০ টাকা দাম বাড়ায় কাদের ইন্ধনে । বানিজ্যমন্ত্রী বা পরিকল্পনা মন্ত্রীর বার্তায় আমরা আস্থা রাখতে পারছিনা । হার্ড অ্যাকশন চাই না হলে বাজারের দায়িত্ব পাবলিক কমিটি নিয়ে নিক । এরচে ভদ্রচিত উপায় দেখছি না । গেল বছরের পেঁয়াজ কেলেঙ্কারির কোন সুরাহা হয়নি আজ পর্যন্ত ।
রান্নায় পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি খায় চীনারা । আমাদের বাংলাদেশে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষ পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি খায়। আমাদের ব্লগে অনেক ব্লগার হিন্দু সমাজের । তারা খুব ভাল করেই জানেন এই পদ্ধতি , আমি নিজেও বন্ধুদের বাড়িতে ভোজন সেরে বাকবাকুম করেছি । দিন কিছু রেসিপি , ইউ টিউব হলেও চলবে । আমার খুব কাছেই খালের উপর বস্তি । হাজার পাচেক মানুষ থাকেন সেখানে । আশ্চর্য হচ্ছে গেল মার্চ থেকে আজতক তাদের করোনা হয়নি , তারা কিছুকাল মাস্ক ব্যাবহার করে ছেড়ে দিয়েছেন । এখন এই পেঁয়াজের দুর্গতিতে তারা পেঁয়াজ খাওয়াও ছেড়েছেন । কি দারুন তাইনা । কিন্তু আমরা মধ্যবিত্তরা সবচে ট্রাবলসাম । আমাদের এটা না হলে চলেনা ওটা না হলে গেলা যায়না , খাদি না হলে গায়ে চড়ানো যায়না, এপেক্স না হলে পায়ে গলে না ইত্যাদি ।
আমাদের পেঁয়াজ বাজারে ব্রাম্মনবাড়িয়ার সেই দুপক্ষকে দরকার । যারা স্যানিটাইজার মাখিয়ে লাঠি বাগিয়ে এক ঘণ্টায় পেয়াজবাজার নিয়ন্ত্রণে আনবেন ।
আপাতত মাইরের উপর ওষুধ নাই ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৯