মাইন্ড এইডে এ এস পি হত্যাকাণ্ডে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জাতীয় মানসিক হাসপাতালের রেজিস্ত্রারের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করেছে ।তিনিই নাকি এ এস পিকে মাইন্ড এইডে রেফার করেছিলেন । তিনি এখন রিমান্ডে । মানসিক হাসপাতালের ডাক্তার কর্মচারীরা সকালে কর্মবিরতি পালন করছিলেন । তারা বলছেন তারা অনিরাপত্তায় ভুগছেন । কেন তারা অনিরাপত্তায় ভুগবেন ? অনিরাপত্তায় গোটা দেশের ব্লাডি সিভিলিয়ান । তাদের কোন হাসপাতালে কখন কনুই দিয়ে মেরে ফেলা হয় কেউ জানেনা । ওয়াশ রুমে যেতে চাইলে রোগীকে কিলিং রুমে নিয়ে যাবেন , কি একটা তামাশা । করোনাকালিন দুঃসহ ঘটনাবলীর কিসসা আমরা জানব শিঘ্রিই তখন ডাক্তাররা কোথায় দাড়িয়ে বিরতি নেবেন । জাহিদুর রহমান ক্ষোভের সাথে নিচের কথা ফেসবুকে লিখেছেন । ওগুলো আমার না বলা কথার সাথে মিলে যাচ্ছে তাই ছেপে দিলাম ।
##বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্সে থাকা অবস্থায় কতিপয় মেডিকেল অফিসার এবং কনস্যালটেন্ট দের শুধুমাত্র বহির্বিভাগে খুঁজে পাওয়া যেত। এরা ভর্তি রোগি দেখায় নাই, ক্লাসে নাই, রাউন্ডে নাই, সেমিনারে নাই (শেষের দিকে অবশ্য খাবারের প্যাকেটটা নিতে আসে।) তবে সকাল সাড়ে ৮ টার মধ্যে আউটডোরে রোগি দেখতে ঠিকই হাজির হওয়ার যান। বসার সিট নিয়ে অনেক সময় হাতাহাতিও হয়। এদের কাজ একটাই, দালালের মাধ্যমে রোগি ভাগানো এবং ওষুধ কোম্পানির চাঁদা খাওয়া। কর্মচারীদের দিয়ে "মুরগি" মানে রোগি ধরে আশপাশের ক্লিনিক গুলোতে চালান করে দেয়। যুগ যুগ ধরে এমন হয়ে আসছে।
ব্যস্ততার কারণে আপডেট নিতে না পারায় কিছুদিন আগে এই হাস্পাতালেরই জনৈক ইএনটি কনস্যালটেন্ট আমার রেফার করা রোগিকে এক দুই নম্বর হাসপাতালে নিয়ে অপারেশন করে ১৫ হাজার টাকার বিল ৩২ হাজার টাকা নিয়ে দেখি চুপচাপ বসে আছেন। রোগি দেখা থেকে শুরু করে অপারেশন করে ছুটি দিয়ে দেয়া পর্যন্ত একবারের জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করেননি। পরবর্তীতে দ্বিগুন টাকা রাখার কারণ জানতে চাইলে পারলে সে আমাকেই রোগির দালাল বানিয়ে দেয়। আমি রোগিকে বলছিলাম, আপনি ক্লিনিক থেকে বিলের একটা কপি আনেন আগে। কারণ সার্জন বিলের টাকা হাতে হাতে নিয়েছিল(!)। গতকাল রোগির স্বজন কল দিয়ে বলে, "ভাই, আপনি ***স্যারকে বকাবকি করছেন নাকি? উনি দেখি আমাকে ৫ হাজার টাকা বিকাশ করল?" এখন তাহলে ইজ্জতটা কার গেল? যদিও ইজ্জত জিনিসটা নাই বলেই জানোয়ারগুলো নির্দ্বিধায় এসব চালিয়ে যায়।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে আরো খারাপ অবস্থা। আমরা ইমারজেন্সি ডিউটির নাম শুনলে পালাইতাম। আর এখন এক বেলা ডিউটি কয়েক হাজার টাকায় বেচাকেনা হয়। টেস্ট করালে কমিশন, আইসিইউতে রোগি পাঠালে কমিশন, এন্ডোস্কোপিতে কমিশন, কৌটা কোম্পানির কমিশন, ইত্যাদি। এসব নিয়ে সারা বছর মানুষ ডাক্তারদের গালি দেয়। যার টাকা আছে ভারত যায়, পাঁচ তারকা প্রাইভেট হাসপাতালে যায়। যার নাই, সে বিএসএমএমইউ কিংবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
সব ডাক্তার এই দূর্নীতিগুলো করে না। তবে কোন ডাক্তারই এগুলোর প্রতিবাদ করেন না। এগুলো যে আসলে দূর্নীতি, সেটাই অনেক ডাক্তার মানতে চান না। ঢাকা মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার গ্রেফতার হওয়াতে যারা কান্না ধরছেন, তারা জেনে রাখুন। এটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। বন্যা আসলে সবার ঘরই তলিয়ে যায়। যে পাপ করছে, তারটাও যায়, যে না করছে তারটাও যায়। দুর্নীতির বন্যায় বাঁধ তৈরি করেন অথবা বন্যায় কেউ ভেসে গেলে তার জন্য মায়াকান্না বন্ধ করেন। আপনি জুতা কেনার সময় ব্র্যান্ড খুঁজেন, ফাস্ট ফুড খাওয়ার সময় ব্র্যান্ড খুঁজেন, আর প্রাইভেট চেম্বার দেওয়ার সময় সেখানকার কাগজপত্র দেখবেন না? আপনি কি ফিডার খান? আজকে যে জুনিয়র ডাক্তারগুলো আকাম না করেও জেলে যাচ্ছে, এর পিছনে কি লোভী বুড়ো অধ্যাপকগুলোর কোন দায় নাই? ##
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৪