গ্রাম দেশে কাঠের খুঁটিকে ঘুন পোকা থেকে রক্ষা করতে মেটে তেল যা আলকাতরা আর কেরোসিন মেশানো মিশ্রন ব্যাবহার হয় । তো ইংরেজিতে বার্নট সিয়েনা বা গাড় বাদামি রঙের ছড়া ছড়ি বেবুলের ছবির প্রায় সর্বত্র লক্ষিত । বেবুল নিরব হয়েছে ২০২০ সালে । আমরা খবরে পড়েছি । বেবুলের সাথে দেখা হয়না দেড় যুগের বেশি সময় । কিডনি নষ্ট হয়ে বেবুল চিকিৎসাধীন ছিল অনেকদিন । দেখা হয়নি কথা হয়েছে । আমাদের খিস্তি খেঁউড় বেশিই হতো , তো তাই হয়েছিল টেলিফোনে । তারপর বেবুলের আত্মা অপেক্ষমাণ ট্রেনে উঠে আমাদের পরিচিত জগত থেকে হারিয়ে গেল । ২০১৫ থেকে ২০ পর্যন্ত অসুস্থ শরীরে একপ্রকার নিরব গর্জন করেছে ক্যানভাসে । বাদামি রঙের খেলায় মত্ত বেবুল কি খুজছিল ক্রমস আঁধার হয়ে যাওয়া হরাইজেনটাল ফর্মে , ঘরের কোনে , মাঠে , চরাচরে আর আধো চাদের মধ্যে । একটা বিশাল ঘড়ি কোন সময়ের নির্দেশ করছে জানা হয়নি । ঘড়ির পেছনে ট্রেন দৃশ্যমান , ট্রেন সময়মত এসেছে কি আসবে , যাত্রীরা সবাই কি চড়েছে বা প্লাটফর্মে দণ্ডায়মান । খুব চাপা স্বভাবের বেবুল কাউকে সম্ভবত বলেনি , যা প্রকাশ তা ক্যানভাসে , বুঝে নেবার দায়িত্ব আপনার নিজের । আমি কোন কোন ছবিতে যীশুর ক্রুশ দেখতে পাচ্ছি , কি যন্ত্রনায় ক্রুশ একেছিল , জানা নেই । চতুষ্কোণ লম্বাটে ফর্ম কি ঘর বাড়ি , কুড়ে ঘরে , দরজা , কি জানালা , কি খোলা প্রান্তে , বৃক্ষের অবয়বে, দুহাত ছড়িয়ে কবি অর্জন করে তার কাব্য উৎসব । গোটা দুই ছবিতে চীনাদের জলরঙের এফেক্ট দৃশ্যমান । বেবুল ,আমি , সাইদ একসাথে ৮২ সালে প্লেনে চড়েছিলাম চীনাদের দেওয়া স্কলারশিপে পড়াশুনা করতে । আমার ধারনা ছিল বেবুল ক্ষীণ হলেও চীনা ধারায় ছবি আকবে । নাহ , বেবুল একেবারে সেমি বিমূর্ত ধারায় পশ্চিমকে অনুসরন করল কিন্তু তাও উজ্জ্বল হয়েছে । আকিয়ে স্বাধীন তার চিন্তা চেতনা আর ভাব প্রকাশে । বেবুল তার গুরু কিবরিয়াকে এড়াতে পারেনি বিবিধ ফর্ম আর রঙে । স্কুল অফ কিবরিয়া একারনেই বিখ্যাত তার ভাব শিস্য দের মাঝে ।
দি এজ গ্যালারি , গুলশানে ( বারিধারা যাওয়ার ব্রিজের বা হাতে ) দি সাউনড অফ সাইলেন্স শিরোনামে শিল্পী গোলাম ফারুক বেবুলের একক প্রদর্শনী চলবে আরও চারদিন - সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:০৮