somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মহাকাশে টাট্টি খানা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






হুম এই বিষয়টির দিকে একদম নজর দেয়া হয়নি অথচ মঙ্গল ঘুরে এলাম । টাট্টি দক্ষিন বঙ্গের শব্দ যার মানে টয়লেট বা ওয়াশ রুম । রকেটে টয়লেট আছে কি নেই তা নিয়ে ভাবনা ছিল না । কিন্তু একবার একটি দুর্ঘটনা ঘটে যাবার পরেই এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হল । সেই গল্পই বলব আজ । এক মহাকাশ বিশেষজ্ঞ মজা করে বলেছেন, ‘‘রাতের আকাশ যদি তারাখসা দেখেন, তবে সেটি উল্কাপাত হতে পারে, আবার অন্য কিছুও হতে পারে।’’ কী সেই ‘অন্য কিছু’? তার উত্তর মিলবে এই প্রতিবেদনের শেষে। তার আগে বরং একটি গল্প বলা যাক।
মহাকাশে গিয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যে ফিরে আসা। এটুকুই কাজ ছিল। লঞ্চপ্যাডে মহাকাশযানের ভিতর অপেক্ষা করছিলেন মহাকাশচারীও। নানা কারণে উৎক্ষেপণে দেরি হচ্ছিল। প্রায় দু’ঘণ্টা পেরিয়ে যেতে হঠাৎ শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ল মহাকাশচারীর। অথচ মহাকাশযানে কোনও শৌচালয় নেই!যে কোনও মুহূর্তে উড়তে পারে রকেট। প্রয়োজনের কথা জানাতেই এল কড়া নির্দেশ। চেপে বসে থাকো। ১৫ মিনিটের ব্যাপার। একটু পরেই রকেট উড়বে...।মহাকাশচারীর গায়ে তখন স্পেসস্যুট। সেই পোশাক ছেড়ে মহাকাশযান ছেড়ে বেরিয়ে লঞ্চ প্যাডে নামা, তার পর সেখান থেকে মাইলখানেক দূরে শৌচাগারে যেতেই আধ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যাবে! ফিরতেও সময় লাগবে ততটাই। ‘সামান্য’ কাজের জন্য দেশের মহাকাশ অভিযানের সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেবেন, এমন মানুষ নন মহাকাশচারী অ্যালান শেপার্ড। ‘অর্ডার’ শুনে তাই তিনিও ‘চেপে বসে থাকা’রই সিদ্ধান্ত নিলেন।কিন্তু ‘সামান্য’ কাজটি যে মোটেই সামান্য নয়, তা বুঝলেন মিনিট দশ পেরোনোর পরই। তখনও মহাকাশযান রওনা হয়নি। তখনও চলছে প্রস্তুতি। অ্যালান বুঝলেন আগামী ১৫ মিনিটের একটি মুহূর্তও তিনি কোনও কাজে মন দিতে পারবেন না, যদি এই মুহূর্তে ভারমুক্ত না হন।১৯৬১ সালের ঘটনা। ওই বছরই মহাকাশে প্রথম মানুষ পাঠিয়েছিল নাসা। অ্যালান ছিলেন বিশ্বের প্রথম মহাকাশচারী। ঐতিহাসিক মুহূর্তের আগে নাসার হয়ে তাঁর প্রথম মহাকাশ ভ্রমণের আগেই ঘটে এই ঘটনা। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছিল।
সে দিন লঞ্চপ্যাডে মহাকাশযানের ভিতর অপেক্ষা করতে করতেই নিজের প্যান্ট ভেজাতে বাধ্য হয়েছিলেন অ্যালান। চিরতরে সিক্ত হয়েছিল মানুষের মহাকাশ ছোঁয়ার ইতিহাস। তবে ওই ঘটনার পরই নাসার টনক নড়ে।মহাকাশযানে মহাকাশচারীদের জন্য শৌচালয় রাখা কতটা জরুরি, তা বুঝতে পারেন বিজ্ঞানীরা। শুরু হয় শৌচালয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা। হাজার হোক বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া যতটা জরুরি, শরীরে জমে থাকা ক্লেদ বিসর্জনের ওই কাজ দু’টিও তো ততটাই জরুরি!সেই নাসাই সম্প্রতি ২ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার ব্যয় করে শৌচাগার বানিয়েছে মহাকাশচারীদের জন্য। কী কী আধুনিক ব্যবস্থা আছে তাতে?





নাসার তথ্য অনুযায়ী অ্যাপোলো ১১ চন্দ্রাভিযানে ১৯৬৯ সালের মাঝামাঝি চাঁদে পদার্পণ করেছিলেন নিল এবং বাজ। তাঁদের শৌচের জন্য পিছনে আঠা দিয়ে সেঁটে নিতে হত বর্জ্য সংগ্রহের ব্যাগ।আর মূত্র সংগ্রহের জন্য ছিল এক ধরনের যন্ত্র। যা আসলে একটি পাইপের মুখে আটকানো কন্ডোম বা নিরোধের মতো দেখতে প্যাকেট। জরুরি কাজ শেষ হলে স্রেফ একটি নব ঘোরালেই সংগৃহীত তরল পৌঁছে যেত মহাশূন্যে।দীর্ঘ দিন মহাকাশচারীদের পিছনে ব্যাগ আটকানোর এই পদ্ধতি চালু ছিল। কিন্তু এই ব্যাগগুলি কোথায় যেত? এই সব ব্যাগ কি নিয়ে ফিরে আসতেন মহাকাশচারীরা? না কি মহাশূন্যে ফেলে আসতেন?আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন তৈরি হওয়ার পর শৌচাগার তৈরিতে মন দেয় নাসা। তৈরি হয় মহাকাশযানে ব্যবহারের বিশেষ ধরনের শৌচাগার। যাতে থাকবে বর্জ্য টেনে নেওয়া জোরালো ক্ষমতা। তার পর দ্রুত তাকে ব্যাগবন্দি করে সরিয়ে ফেলার ক্ষমতাও।মহাকাশ স্টেশনে মাধ্যাকর্ষণ কাজ করে না। ফলে তরল বা কঠিন যে কোনও বস্তু আলগা থাকলেই তা ছিটকে যেতে পারে যে কোনও প্রান্তে। তাই টয়লেটে বসার সময় মহাকাশচারীদের বেল্ট দিয়ে বেঁধে রাখতে হত নিজেকে। তবে এই পদ্ধতি আরও উন্নত হয় ২০১৮ সালের পর।পৃথিবীর মাটিতে যেমন ছোটখাটো ‘পাবলিক টয়লেট’ থাকে এখন মহাকাশ স্টেশনেও রয়েছে তেমনই চারপাশ ঘেরা দরজা বন্ধ করার সুবিধা সম্পন্ন টয়লেট। এই টয়লেটগুলোই ১৯০ কোটি ১১ লক্ষ টাকার সমান অর্থ ব্যয় করে বানিয়েছে নাসা।নাসা জানাচ্ছে, এই বর্জ্যগুলিকে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করে ব্যাগে ভরে রেখে দেওয়া হয় মজুতের জায়গায়। পরে তা ফিরিয়ে আনা হয় পৃথিবীতে। মহাকাশ স্টেশনের ক্ষেত্রে পৃথিবী থেকে জিনিসপত্র নিয়ে আসে রাশিয়ার তৈরি প্রোগ্রেস স্পেসক্র্যাফট। তাতেই তুলে দেওয়া হয় ওই সমস্ত ব্যাগ।কিন্তু পৃথিবীতে এনে কী করা হয় ওই ব্যাগগুলি? নাসা বলছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তবে আগুন লাগিয়ে নয়। পৃথিবীর আবহাওয়া মণ্ডলে প্রবেশ করার মুহূর্তে মহাকাশযান থেকে ফেলে দেওয়া হয় সেগুলি। আবহাওয়া মণ্ডলের ঘর্ষণেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় ব্যাগগুলি।এক মহাকাশ বিশেষজ্ঞ এ প্রসঙ্গেই মজা করে বলেছেন, ‘‘রাতের আকাশ যদি তারাখসা দেখেন, তবে সেটি উল্কাপাত হতে পারে। আবার মহাকাশচারীদের জ্বলন্ত বিষ্ঠাও হতে পারে’’!






আনন্দবাজার
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×