অন্য ফসলের তুলনায় মসলা জাতীয় পণ্য চুইঝালের আবাদে পরিশ্রম কম, রোগবালাইও নেই বললেই চলে। সেই সঙ্গে চাষাবাদের জন্য আলাদা জমিরও প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙিনা কিংবা বাগানের যেকোনো গাছের সঙ্গে সহজেই চাষ করা সম্ভব। এককথায়, স্বল্প ঝামেলা ও স্বল্প ব্যয়ে উৎপাদন করে চাহিদা থাকায় বিক্রিতে ঝামেলা পোহাতে হয় না। এসব সুবিধার কারণে নড়াইলে চুইঝালের আবাদ বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, ভৌগোলিক কারণেই জেলাটির মাটি মসলা জাতীয় এই পণ্য চাষের জন্য বেশ উপযোগী।
সংশ্লিষ্ট চাষিদের মতে, বেলে–দোআঁশ মাটিতে চুইঝালের চারা রোপণ করলে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া যায়। একটি গাছ থেকে কাটিং পদ্ধতিতে নতুন করে চারা উৎপাদন করা যায়। ফলে বারবার চারা কেনার প্রয়োজন হয় না। গাছ রোপণের পর জৈব সার ও পর্যাপ্ত পানি দিলেই হয়। বাড়তি তেমন কোনো যত্নের প্রয়োজন নেই। দুই বছর পর থেকে গাছ বিক্রি করা যায়। গাছের ওজন হিসেবে এর দাম নির্ধারণ হয়। গাছের বয়স যত বাড়ে, দামও বাড়তে থাকে। ১০ বছরে একেকটি গাছ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়।
চুইঝালের চাষ এই জেলায় বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, চারা উৎপাদন এর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। অতীতে, চুইঝালের চারা নড়াইলের নার্সারিতে উৎপাদিত হতো না। মালিকেরা খুলনার ফুলতলা ও ডুমুরিয়া থেকে চারা এনে খুচরা বিক্রি করতেন, তবে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। দুই বছর ধরে নড়াইলে চুইগাছের চারা উৎপাদিত হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে চুইঝাল চাষে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার পরই নড়াইলের অবস্থান। গত বছরের তুলনায় এ বছর এর উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫ টন। কৃষি সংশ্লিষ্ট তাই সকলের আশা, জেলায় চুইঝাল উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাক, এতে করে উদ্বৃত্ত ফসল বিদেশে রপ্তানি করাও সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫০