টাকা পাচারকারীদের ধরা খুব মুশকিল বলে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, টাকা পাচারকারীদের যদি কোনোভাবে ধরতে পারেন, তাহলে ছাড় দেবেন না। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, ‘পাচারকারীরা হচ্ছে শয়তানের মতো। শয়তান শিরা–উপশিরায় যায়, তাকে দেখা যায় না। শয়তানের কর্মকাণ্ড, দুর্ভোগ মানুষ ভোগ করে। পাচারকারীদের জন্য আমরা দুর্ভোগ ভোগ করছি। পাচারকারীকে যদি আমার কোনো না কোনোভাবে ধরতে পারি, আমরা ছাড় দেব না।’
দুদকের এই কমিশনার বলেন, যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত, অর্থ পাচারকারী, তাঁরা অবৈধভাবে নেওয়া টাকা হুন্ডি করে বাইরে পাঠিয়ে দেন। আর রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশে আনান। পরে তিনি রেমিট্যান্সযোদ্ধা হয়ে যান।
টিউলিপ সিদ্দিক গণমাধ্যমে যেসব কথা বলেছেন, সেগুলোর জবাব ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। তিনি বলেন, ‘জবাব হলো এই যে বাংলাদেশের আদালতে এসে তিনি নিজেকে ডিফেন্ড (অভিযোগ খণ্ডন ও নিজের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরবেন) করবেন।’ কোনো কারণে তিনি না এলে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতে বিচার চলবে।
দুদকের পক্ষ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে দুদকের এই কমিশনার বলেন, ‘না না, কেন যোগাযোগ করা হবে, আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে করব? তার নির্ধারিত ঠিকানাতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তার তো ঠিকানা আছে একটা। ইতিমধ্যে সেখানে নোটিশ গেছে। কেউ রিসিভ (গ্রহণ) করেছে কি না, তা জানি না। দুদক বিচারপ্রক্রিয়া কোর্টে দিয়ে দেবে। কোর্ট বিচার করবে।’
অর্থ পাচার রোধে দুদকের টাস্কফোর্স কী করছে জানতে চাইলে মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, ‘নিবিড়ভাবে যোগাযোগ চলছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। দুদকের একার পক্ষে অর্থ ফেরত আনা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা এর সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
আদালতে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আদালতের স্বাধীনতা আছে। আদালত বিচার করবেন, রায় দেবেন। সেই রায়ে যাঁরা সংক্ষুব্ধ হবেন, তাঁরা আপিল করবেন।’
দুদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রসঙ্গে দুদকের এই কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কোনো স্মেল (গন্ধ) যদি পাই, তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আগে আমরা ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনে (শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা) যাচ্ছি। ডেফিনেটলি তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।’
দুদকের ‘ক্যামেরা’ যত দূর সম্ভব বিস্তার করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তাদের আমরা রিশাফল (রদবদল) করছি, মফস্সলে যারা চৌকস কর্মকর্তা আছে, তাদের হেডকোয়ার্টারে (প্রধান কার্যালয়) আনছি। হেডকোয়ার্টারে যারা ঝিমুচ্ছে, তাদেরকে মফস্সলে পাঠাচ্ছি। যাদের কাজে শিথিলতা দেখছি, তাদেরকে মফস্সলে পাঠানো হচ্ছে।’
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৫