একজন বেশ্যা যদি বলে "না"।আপনার স্ত্রীও যদি বলে "না"।
তবে তাদের সাথে মেলামেশার চেষ্টা করাও ধর্ষণ।
অর্থ কিংবা ক্ষমতা অথবা বিবাহ নামক সার্টিফিকেট নিয়ে আপনি ক্রমাগত অত্যাচার করে যাবেন।কিংবা অত্যাচারের পক্ষ নিবেন।এমন মস্তিষ্ক বিকৃত পশুদের সমাজে কোন প্রয়োজন নেই।
যারা ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে চাচ্ছেন-এত রাতে মেয়েগুলো সেখানে গেল কেনো?মেয়েগুলোর অপরাধ।তাদের বলবো-বিবেক দিয়ে চিন্তা করুন।
একশ্রেণী বলতেছে-দেশে ইসলামী শরিয়াহ আইন থাকলে এমন হোত না।ইমাম কর্তৃক মসজিদে ধর্ষণ,হুজুর কর্তৃক মাদ্রাসায় শিশুকে যৌন নিগ্রহ করা।এসব ব্যাপারে তাদের কোন বক্তব্য পাচ্ছি না।নাকি তারা সেটাও কোন না কোন ভাবে জায়েজ করার ধান্ধায় আছেন।
এই যে ধার্মিকরা 'গে কিংবা লেসবিয়ান' অর্থাৎ সমকামীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা পোষণ করছে।আপনারা বলছেন,ধর্মে এসব বেদায়াতী কর্মকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।নিশ্চয়ই আপনাদের জানা প্রয়োজন,অধিকাংশ আবাসিক মাদ্রাসার শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছে।
যারা ধর্ষনের জন্য নারীদের পোষাকে দায়ী করছেন।তবে বলবেন কি?তিন বছরের শিশুর শারিরীক এবং পোষাকে কি এমন কিছু ফুটে উঠেছে যে,তাকে ধর্ষণ করতে হবে?নিশ্চয়ই ধর্ষিত সেই শিশুটির কথা জানেন।যার যোনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে রাতভর ধর্ষণ করা হয়েছে।
এমন বিকৃত নৃশংসতা কিভাবে করতে পারে তারা? শুনলেই তো শরীর কাঁটা দিয়ে যায়।
প্রতিদিন সকালে অনলাইনে ঢুকলেই দুই-একটি ধর্ষণের ঘটনা চোখে পড়ছে।যেগুলো শুধুমাত্র মিডিয়ায় আসছে।এছাড়া আরও কত ঘটনা চাপা পড়ে আছে অন্তরালে স্রষ্টাই ভাল জানে।
প্রসাশনের উপর নির্ভর করে।আমরা ১%ও নিশ্চিত থাকতে পারি না।ভিকটিম পুলিশের কাছে গেলে মামলা নিতে চায় না।বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে টাকাপয়সা দিয়ে ঝামেলা মেটানোর পরামর্শ দেয়। নারীদের সম্মান-সম্রমের মূল্য কি অর্থ মূল্যে নির্ধারণ করা যায়?শেষ পর্যন্ত মিডিয়া কিংবা আদালতের সরনাপন্ন হয়ে ভিকটিমকে আভিযোগ দাখিল করতে হয়।প্রসাশন তদন্ত এবং বিচারের নামে দীর্ঘসূত্রিতা শুরু করে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় প্রসাশন অপরাধীকে আটক করেছে।তদন্তও চলছে।দেখা যাক ঘটনার জল কোন দিকে গড়ায়।
বহুল আলোচিত তনু হত্যার বিচার কি আমরা পেয়েছি?ক্যান্টনমেন্টের মত স্হানে তনু ধর্ষিত ও হত্যা হল।আমরা কিছুদিন আন্দোলন করলাম।কিবোর্ড চাপলাম।কিন্তু,ফলাফল শূন্য।
আমাদের প্রতিবাদটাও সবার জন্যে ঠিক গর্জে ওঠে না।হযরত আলী এবং তার ছোট্ট মেয়ের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই।ধর্ষণের বিচার না পেয়ে বাবা-মেয়ে আত্মহুতি দিয়েছিল ট্রেনের নিচে।বিচার তো দূরে থাক।প্রতিবাদও হয়নি ঠিকমত।
কতটা অসহায় হলে,একজন বাবা মেয়েসহ আত্মহুতি দিতে পারে?
বিচারহীনতা এবং বিবেক এতটা পঙ্গু হয়ে গেল আমাদের।
আমরা প্রতিবাদ করছি।প্রসাশন একটু আধটু দৌড়-ঝাঁপ দিচ্ছে।মিড়িয়া উঠে পড়ে লাগছে।অথচ,ধর্ষণ কি বন্ধ হচ্ছে?
আমাদের সমস্যার গভীরে যেতে হবে।কেন?কী কারণে?ক্রমাগত ধর্ষণ বেড়ে চলছে।
প্রথমত,সমাজে মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে।যতক্ষণ না পর্যন্ত মূল্যবোধ এবং দৃষ্টিভঙ্গির শুদ্ধতা না আসবে।ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি প্রতিবাদ করে।বিচার করে।সভা-সেমিনার করে।ধর্ষণ ঠেকাতে পারবেন না।
দ্বিতীয়ত,বিচারহীনতার নোংরা সংস্কৃতি প্রচলন।কতটি ধর্ষণের বিচার হয়েছে আজ পর্যন্ত?কতজন ভিকটিম নিরাপদে আছে?প্রসাশন কতটুকু তৎপর মানুষের নিরাপত্তা দিতে?এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদের চোখের সামনে প্রতীয়মান।যদি সঠিক এবং সময়মত বিচার হোত।তাহলে ধর্ষকেরা ভয় পেত।সব কুকুরকে পিটাতে হয় না।দুই-একটা কুকুরকে ঠিকমত পিটালে সবগুলো ভয় পেত।আমরা কতটুকু বিচার পাচ্ছি?
তৃতীয়ত,পারিবারিক এবং অভিবাবকের সচেতনতা।আপন জুয়েলার্সের মালিক ধর্ষক সাফাতের পিতা দিলদার কি তার ছেলেকে সামলাবেন।তিনি নিজেই ধর্ষকের ভূমিকা পালন করছেন।তাহলে সন্তানের ভূমিকা কি হবে।বলা হয়,পরিবার হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র।পরিবার থেকে মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়া দরকার।আমাদের পরিবারগুলোতে একাত্বতা নেই।সম্পর্ক নেই।অন্যদিকে,পরিবার কখনো বলে না যে,তুমি ধর্ষণ করো।কিন্তু,পরিবার এবং অভিবাবকে অবশ্যই সন্তানের খোঁজখবর এবং দেখাশোনা করতে হবে।