somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অশুভ ছায়ার বৃত্তে আমাদের বাসঃ নৈতিকতার পাটমন্দির থেকে পাঠ গ্রহণ করুন

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ প্রকৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গের সাথে সংগ্রাম করে পৃথিবীকে তার বাসযোগ্য করে। কিন্তু তা বেশি দিন স্থায়ী থাকতে পারেনি। সমাজ, সময় ও মানুষের ক্রমবর্ধমান উচ্ছ্বাসার ফলে মানুষের মধ্যে পাশবিকতার স্পষ্ট লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি পৃথিবীর স্বাভাকি প্রকৃতিকে তারা বিনষ্ট করে ফেলে। ফলে শুরু হচ্ছে প্রকৃতির সাথে মানুষের নতুন করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম। “যোগ্যরাই ঠিকে থাকবে” এই নীতির বাস্তবতায় মানুষ মানবিক ঐক্যের পরিবর্তে নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ের দিকে চলে গেছে। মনে হচ্ছে সমগ্র মানব জাতি একটি অপচ্ছায়ার বৃত্তে বার বার ঘোরপাক খাচ্ছে। পশ্চিমারা ঠিকে থাকার জন্য এশিয়া-আফ্রিকাকে দাস বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ জনগোষ্ঠীকে এক প্রকার গিনিপিক বানিয়ে ফেলছে। তাদের পাশবিকতা দেখে গরিব দেশগুলোর ( বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম) মধ্যে শক্তিমান জনগুষ্ঠি আরও বেশি করে পাশবিকতার চর্চা করে যাচ্ছে। যার ফলে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে শোষণ পিড়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক, আই.এম.এফ, আন্তর্জাতিক আদালত, মানবাধিকার, জনস্বার্থ, রাষ্ট্র-সমাজ, রাজনীতি, পুলিশ, র‌্যাব, সংবাদপত্র-গণমাধ্যম; স্থান-কাল ও পাত্র ভেদে প্রতিষ্ঠানগুলোর অপপ্রয়োগ হচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর। শোষিত জনগোষ্ঠির অচেতনতা ও অনৈক্যের ফলে ছোট ছোট পাশবিক মানব প্রজাতির দানব তুল্য ক্ষমতার দাপট চোখে পড়ে। এ সমস্ত দানব শ্রেণীর প্রচলিত মানবিক কাঠামোর সংজ্ঞা-ব্যাখা অকেজো ও অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাচ্ছে। খুন, দুর্নীতি, ঘুষ, চাটুকারী, দালালি, চাঁদাবাজি, অপরাজনীতি, হলুদ সাংবাদিকতা, শিক্ষক রাজনীতি, পুলিশি নির্যাতন, নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, এরকম অসংখ্য অনৈতিক ক্রিয়াকলাপ আমাদের সমাজে সহনীয় হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে সমাজকে এখন আর আগের মতো মানবিক, সামাজিক বা নৈতিক মূল্যবোধের সমাজ বলা যাচ্ছে না। আমাদেরই পূর্ব পুরুষ, আমাদের জন্য এই সমাজ রাষ্ট্র তথা পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার জন্য যারপরনাই ত্যাগ করে গেছেন। তাদের মেধা-বুদ্ধি-স্বপ্ন-চিন্তা, ঘাম-রক্তের প্রতিদান হচ্ছে বর্তমান অনৈতিক সমাজ-রাষ্ট্র। যার পালক-প্রতিপালকরা থাকে অমানবিক,পাশবিক। বর্তমানে আমাদের রাষ্টের নির্মম প্রহসন দেখলে মনে হবে আমরা কোথায় আছি। দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিকদের দুবৃত্তায়নের ফলে দেশের মানুষের দেশে থাকার চিন্তাটাই নাভিশ্বাসে রূপ নিচ্ছে। আমাদের এক নেত্রীর সকল সন্তানেরা বিদেশে থাকেন। এমনকি পিতার মৃত্যুতে তারা দেশে আসতে পারেন না, অথচ ঐ নেত্রী নিজেকে তার চেয়ে বেশী দেশ প্রেমিক কেউ নেই দাবি করেন। আর অন্যজন দুই পুত্রকে এমন কোন হেন কাজ নেই করার সুযোগ দেন নি। বাকি যারা দেশের জন্য মায়া কান্না করেন তাদের অবস্থা আরও করুন। আমার অভিযোগে তাঁদের প্রতি নয়। হয়ত তাঁদের প্রতি করুণা হচ্ছে। আমার অভিযোগ অনুযোগ হচ্ছে তাদের প্রতি যারা নিজেদের শিক্ষিত-বুদ্ধিদীপ্ত ডক্টর, লেখক, বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ইমাম, পুরোহিত মনে করেন। তাদেরকে আমরা বলতে ইচ্ছে করছে দালালি, চাটুকারি বাদ দিয়ে মানুষের মঙ্গলের জন্য নৈতিকতার পাটমন্দির থেকে পাঠ গ্রহণ করুন। অসততা ও ভন্ডামি পরিহার করুন।
আমরা যারা নৈতিক মূল্যবোধের কথা চিন্তা-ভাবনা করি এবং যাদেরকে অনেকে মনে করি পিছিয়ে পড়া শ্রেণী বা অসচেতন শ্রেণী তাদেরকে নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে এবং শেখাতে হবে, বুঝাতে হবে অতীত, বর্তমান ও আমাদের ভাবি প্রজন্মের ভবিষ্যত। অতীতের সামগ্রিক মূল্যবোধের ভালো ও কল্যাণের নীতি আদর্শের কার্যকর দিক জানাতে হবে। যারা নৈতিকতা শিক্ষা থেকে দূরে, যারা চারপাশ থেকে শিক্ষা নিতে পারেনি তাদেরকে আদর্শিক মূল্যবোধে জাগ্রত করা খুবই জরুরী। এমনিতে হারিয়ে যাচ্ছে আশৈশব লালিত পারস্পরিক দায়বোধ। আসুন পুঁজির আগ্রাসনে মেকি সভ্যতার এই শোষণ-পীড়ন থেকে বেরিয়ে এসে মানবিক সমাজ তথা সকল মানুষের জন্য মানবীয় সমাজ বিনির্মাণ করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×