somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক ব্লগারের কথা (উৎসর্গ: অনন্ত)

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৃত্যুর পরও আমার লাশ নিয়ে রঙ-তামাশায় মেতে উঠলো অনেক ভন্ড প্রতারক। আমার শেষকৃত্য করার পর কিছু দিন পত্র-পত্রিকা কিংবা টক শো-তে আমাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সময় আবারও একটি লাশ পরবে, প্রগতিশীলদের কাঙ্কিত(!) মৃত্যু নিয়ে সরব হবে জাতি- সমাজ, ও দেশ-বিদেশের প্রচার মাধ্যম।
কিন্তু আর কত প্রগতিশীল আমার মত লেখক, ব্লগার মারা গেলে জাতি প্রকৃত অর্থে সজাগ হবে। মানুষের (মৃত মানুষদের) এই কাপুরুশোচিত নিরবতার জন্য একদিন এই দেশ ধ্বংস হবে, জয় হবে জঙ্গিবাদের। শুধু তাই নয় মনে হয় নিরব-নিথর, অন্ধ-বধির, জাতি-গোষ্টির জীবদ্দশায় দেশের কোন পরিবর্তন হবে না ।দেশ ও জাতির প্রতি আমার বলার নেই, চাওয়ারও নেই। । অন্ধকারে থাকার অভ্যাস, গুলামি মনোবৃত্তি এখনও যায়নি। আগে ধর্মীয় প্রবক্তাদের, পরে রাজা-বাদশাদের, এক সময় ইংরেজদের, পর্যায়ক্রমে পাকিস্তান, এখন দেশের শাসক গোষ্টীর। ধর্মের নামে ওরা মানুষকে বিভ্রান্ত করে একজনকে দিয়ে অন্যকে গলা কেটে, রগ কেটে হত্যা করাচ্ছে। গুম, হত্যা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় রূপ নিচ্ছে। ধরণীতে এহেন কর্মকান্ডে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও(!) বিব্রত। যে ‘আমি সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে এই মানুষ তৈরী করেছিলাম। মনে হচ্ছে সব কীটপতঙ্গ।

এখানে মানুষজন পুশুর মতো খাওয়া ,সঙ্গম-সন্তান জন্ম দেয়া ছাড়া আর কিছুই করতে জানে না। কে মরল কে বাচল তার খবর নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। দার্শনিক লেখক বুদ্ধিজীবীরা জীবনের ঝুঁকি দিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন মানব জাতিকে আলোর পথ দেখাতে চেয়েছিলেন, আমিও আমার সতীর্থরা সময়ের অন্ধত্ততা, বধীরতা, নীরবতা দূর করতে চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আমার জীবন প্রদীপ নিবিয়ে দেয়া হল। অনেকেই যারা জ্ঞান-প্রগতির প্রমাণপত্র নিয়ে গর্ব করে তাদের অধিকাংশই কাপুরুষ। আবার অনেকেই ভীরুতা, কাপুরুষতা সহ্য করতে না পেরে কলম হাতে নিয়েছে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য। অনেকে পুরোপুরী না হলেও অন্ধকারে আলোর স্ফুলিঙ্গের মত জায়গা করেছিল, তাও জঙ্গি, শোষক সমাজপতিসহ কিছু লোকের সহ্য হয়নি। তাই আমি ও আমরা মত অনেককে এই সমাজ-রাষ্ট্রের অন্ধকার প্রকোষ্ট থেকে চির বিদায় নিতে হল। আমরা তৃপ্ত, সন্তুষ্ট। মনে রেখ কিন্তু, তোমাদের এই নিরবতা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ধ্বংসের কারণ হয়ে থাকবে। দেশের আইনজ্ঞ, পুলিশ, নেতা-নেত্রী সকলেই তারা এক জোট। বিলাশী জীবন যাপনের জন্য তারা নৈতিকতা জলাঞ্জলী দিয়েছে। অনেক সময় তাদের মধ্যে মারামারী হানাহানিতে লিপ্ত থাকে। দেশের জন্য তারা কি আর করবে। যদিও তারা আমাদের দেশে বসবাস করে তবে তাদের আহার, পোশাক-পরিচ্ছদ সবকিছুই বিদেশ থেকে আমদানীকৃত। শুধু কি তাই, অনেকের সকালের নাস্তার উপাদান ফলমূল সব ফরমালীন মুক্ত নিরাপদ বিদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে দেশ প্রেম কি খুজা যায়?
উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী ব্যক্তি-গোষ্টী-দল দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর প্রাণান্তর চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই তারা একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যার মত বর্তমানে সুপরিকল্পিতভাবে দেশপ্রেমিক প্রগতিশীলদের হত্যা করে যাচ্ছে। তারা খুব ভালো করা জানে যে এই দেশ এখন মৃতদের দেশ। এখানে মুক্তবুদ্ধি, স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার চর্চা নেই। দেশপ্রেম পত্র-পত্রিকা, বই-খাতা আর ইতিহাসের পাতায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও বেশী করে প্রচারিত হলেও অন্তরে কততুকু? আর বিশ্বাসেই বা---। তাই আমাদের ঐক্য-শক্তি ধ্বংস করে তাদের মতো করে দেশকে রামরাজ্য বানানো খুব সহজই মনে করে। তারা আরও জানে যে “বুদ্ধিজীবীরা এখন বিভক্ত তিন গোত্রে: ভন্ড, ভন্ডতর, ভন্ডতম।” তাই তারা দেশকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য হিন্দু-বৌদ্ধ, মুসলমান, সিয়া-সুন্নি, হাসিনা-খালেদা-জামায়াত-মুসলমান এ সমস্থ শব্দ বাক্য দিয়ে বিভক্তি তৈরী করে রাখছে। দেশ ও মানবপ্রেমকে আড়াল রেখে নিজেদের মধ্যে সংঘাত ক্রমাগত সৃষ্টি করে তাদের আখের গোছাচ্ছে। তারা জানে এখন আর স্বপ্ন দেখানীয়া চিত্তজাগানিয়া মহৎ হৃদয়ের মানুষ থাকছে না। আজ একজন কাল অন্যজন এরকম করেই মৃত্যুর দিনক্ষণ গুণতে হবে একেক জনকে। এভাবেই একের পর এক প্রগতিশীলরাই মরবে। জানি অনেকে ভাবছে। বিভ্রান্ত একাটার পর একাটা পাগলের মৃত্যু হচ্ছে। কিছুদিন পর এরকটার গর্দান যাবে। এভাবেই চলবে--- না

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×