জীবনের একটা সময় গিয়েছে, ইসলামী রাজনীতি'র জন্যে জান কবুল করেছিলাম। ইসলামী রাষ্ট্র তথা খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্যে অনেক কিছুই করেছি। সেজন্যে অত্যাচারিতও হয়েছি, জেল-জুলুম সবই ছিলো এর মাঝে। কিন্তু, যখন থেকে জেনেছি, ইসলামের শেষ নবী (সাঃ)-এর বংশধররাই রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার আসল দাবীদার আর তাঁদের উপর অত্যাচারকারীরা হলো মুসলমানদের পূর্বের রাষ্ট্রনায়ক তথা খলিফাগণ, সেদিন থেকে ইসলামী রাজনীতি থেকে দূরে সরে এসেছি।
কি অত্যাচারই না খলিফারা করেছে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ )-এর বংশের উপর। কারাগারে অন্তরীন করে রাখা থেকে বিষ খাইয়ে খুন, সবই করা হয়েছে। আমি আজ সেসবের কিছু বর্ণনা দিবো-
হযরত হাসান (রাঃ )-কে দিয়ে শুরু করি। তাঁর সময়ে খলিফা ছিলেন হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ )। খলিফার নির্দেশে হযরত হাসান (রাঃ )-কে বিষ প্রয়োগ করে খুন করেন তাঁর স্ত্রী।
হযরত হুসেইন (রাঃ ) ছিলেন হাসানের ভাই এবং হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ )-এর নাতী। হুসেইনকেও খুন করা হয় কারাবালার মাটিতে। মুসলমানদের তখনকার রাষ্ট্রনায়ক ইয়াজিদের নির্দেশে।
হযরত হুসেইন (রাঃ )-এর ছেলে ছিলেন হযরত আলী ইবনে হুসেইন (রা) । তিনি জয়নাল আবেদীন বা 'উপাসকদের অলঙ্কার' নামে অভিহিত হতেন। তাঁকেও খলিফা প্রথম আল-ওয়ালিদের নির্দেশে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়।
জয়নাল আবেদীনের ছেলে ছিলেন মুহাম্মদ ইবনে আলী (রা)। তাঁকে 'জ্ঞানের উদ্বোধক' উপাধীতে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন একজন ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ। তাঁর হাত ধরেই অনেক বড় বড় ইসলামী জ্ঞানীদের যাত্রা শুরু। মুহাম্মদ ইবনে আলীকেও খলিফা হিশাম ইবনে আব্দুল মালিকের নির্দেশে বিষ প্রয়োগে হতা করা হয়েছিলো।
মুহাম্মদ ইবনে আলী'র ছেলে ছিলেন জাফর আস সাদিক (রা)। জাফরও ছিলেন বিখ্যাত জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব। ইমাম আবু হানিফা (র) ছিলেন তাঁরই ছাত্র। তাঁকেও খলিফা আল মনসুরের নির্দেশে খুন করা হয়।
মুসা আল কাযিম ছিলেন জাফর আস সাদিক (রা)-এর ছেলে। তাঁকে প্রথমে কারাগারে অন্তরীন করা হয়, পরে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয় খলিফা হারুন আর রশিদের নির্দেশে।
এভাবে মুসলমানদের পরবর্তী ইমামদেরও হত্যা করে খলিফারা। শুধু ইমাম ইবনে হাসান আল-কাইয়িম (রা) আত্মগোপন করে বেঁচে যান। তাঁকেও হত্যা করার জন্যে সৈন্য প্রেরণ করা হয়েছিলো।
এই অত্যাচারীদের উত্তরসূরীরাই সামু'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা গুলশান ফেরদৌস জানা আপা'র উপর মানসিক নির্যাতন করেছিলো কয়েক বছর আগে। এটা আমার উপলব্ধি।
জানা আপা ব্লগে আগের মতো ফিরে আসুন, এই কামনাই করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৩