যে সময়ে ফার্সী এবং উর্দু ভাষায় সাহিত্য লেখার প্রচলন ছিলো, সেই সময়ে সৈয়দ সুলতান কাব্য রচনা করতেন বাংলা ভাষায়। নিজের ভাষার প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিলো অতি গভীর। তিনি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মুসলমানদের ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজনীয়তা নিজের মন থেকে উপলব্ধি করেছিলেন। তাই তো তিনি লিখেছেন-
আল্লাহএ বুলিব তোরা আলিম আছিলা
মনুষ্যে করিতে পাপ নিষেধ না কৈলা ।
গুরু ভেটিলাম গুরু না জানাইল মোরে
কাজেই- দেশেত আলিম থাকি যদি না জানাএ
সে আলিম নরকে যাইবে সর্বথাএ
এহি ভএ ভাবিয়া রচিল নবীবংশ
শুনি পাপীগণে যেন পাপে নহে ধ্বংস।
ড. মুহাম্মদ এনামুল হক সৈয়দ সুলতানের লেখা 'নবী বংশ' কাব্যটিকে ‘ম্যাগনাস ওপাস’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রায় পচিশ হাজার পংক্তিতে লেখা এই কাব্যে তিনি লিখেছেন-
প্রথমে প্রণমি প্রভু অনাদি নিধান
নিমিষে সৃজিছে যেই এ চৌদ্দ ভুবন ৷
আদি অন্ত নাহি তার নাহি স্থান স্থিত ৷
খন্ডন বর্জিত রূপ সর্বত্রে ব্যাপিত।
পনেরো হাজারেরও বেশি পংক্তিতে লেখা নবী বংশ’ এর দ্বিতীয় খণ্ডে মুহাম্মদ (সা.) ও হযরত খাদিজা (রা.)'র সঙ্গে বিয়ে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লিখেছেন-
সুজনি চাদর দিলা বসিতে বিবিগণ
হীরা জরি চান্দোয়া যে মাণিক্য পোখম
চিনি আদি সর্করা আঙ্গুর খোরমান
ঘৃত মধু দধি দুগ্ধ অমৃত সমান
খাসী বকরী দুম্বা আর উটযে প্রধান
মেজায়ানী করিলেন্ত এবাজ সমান।
সৈয়দ শাহ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ)-এর জীবনী'র উপরে আমরা যে ডকুমেন্টারী বানাচ্ছি, তাতে হবিগঞ্জের স্বনামধন্য সুলতানশী হাবেলীতে যেতে হয়েছিলো আমাদের শুটিং টিমকে। এই ছবিতে ১৬০০ শতাব্দী'র মহাকবি সৈয়দ সুলতানের সমাধির সামনে আমি কিছুক্ষণ ছিলাম। তাঁরই এক বংশধর বর্তমান গদিনশীন পীর সৈয়দ রফিক হোসেইন চিশতী ভাইয়ের একটি ইন্টারভিউ আমাদের ডকুমেন্টারীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১২