সুফিবাদের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে এবং প্রতিটি বিভাগকে নিজস্ব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য দ্বারা আলাদা করা হয়েছে। রুমি ছিলেন এক বিশেষ ধরনের সুফিবাদের অনুসারী যা ‘আনন্দময় সুফি’ নামে সুপরিচিত। এর মানে হল যে, তিনি বিভিন্ন আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে অতীন্দ্রিয় পরমানন্দের অবস্থা বা ঈশ্বরের সাথে মিলনের ধারণা অর্জন করেছিলেন।
রুমির জন্য, সঙ্গীত, কবিতা এবং নৃত্য ছিল এই লক্ষ্য অর্জনের মূল উপায়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে- যখন কেউ আনন্দময় অবস্থায় থাকে, তখন সে ঈশ্বরের সাথে উপলব্ধি এবং ঐক্যের একটি স্তরে পৌঁছাতে পারে যা অন্যথায় অপ্রাপ্য। রুমির কবিতা ঈশ্বরের প্রতি তার গভীর ভালবাসা এবং ঈশ্বরের সাথে একত্রিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষার উল্লেখে পরিপূর্ণ।
নানাভাবে তাঁর কবিতাকে কীভাবে অতীন্দ্রিয় পরমানন্দ অর্জন করা যায় তার একটি গাইড বই হিসেবে দেখা হোয়। তিনি তাঁর লেখায় কীভাবে বর্তমান মুহুর্তে নিজেকে হারানো যায় এবং ঐশ্বরিক প্রেমের অভিজ্ঞতায় নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত করার জন্য কীভাবে সমস্ত পার্থিব উদ্বেগ ত্যাগ করা যায় সে বিষয়ে উল্লেখ করে গিয়েছেন। রুমির চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিলো: সম্পূর্ণরূপে নিজেকে ছেড়ে দেওয়া এবং ঈশ্বরের সাথে একত্রিত হওয়া।
রুমী ‘মছনবী’ এবং ‘দিওয়ান-ই শামস তাবরীজী’ কবিতা সংকলনের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। রুমীর কবিতা বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং সারা বিশ্বের অগণিত মানুষকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
পরিশেষে আবারো বলা উচিৎ, জালালুদ্দিন রুমিকে একজন মহান সুফি কবি ছিলেন। তাঁর কবিতা আজও জনপ্রিয়। রুমি একজন আধ্যাত্মিক নেতা ছিলেন, তাঁর কবিতা প্রায়ই মানুষের আত্মা সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি এনে দেয়।
তাঁর কবিতাগুলি উপমা এবং রূপক দিয়ে পূর্ণ যা একজন পাঠককে নিজ আবেগ এবং অভিজ্ঞতা বুঝতে সাহায্য করে। রুমিকে তাঁর কবিতার সৌন্দর্য ও গভীরতার কারণে প্রায়শই শ্রেষ্ঠ সুফি কবি বলে অভিহিত করা হয়।
আগের পর্বঃ
১) যে কারণে জালালউদ্দিন রুমিকে শ্রেষ্ঠ সুফি কবি বলা হয়
২) সুফিবাদীদের চোখে রুমি যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ