
কথায় আছে-''ঠেলার নাম বাবাজী।'' কথাটা মজা করে বলা হলেও যারা জীবনে এমন ঠেলা বা ধাক্কা খেয়েছেন তারা যদি একটু পিছু ফিরে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে, সেই ধাক্কা না খেলে জীবনের অনেক কিছুই অপূর্ণ থেকে যেত। সেই ধাক্কাই জীবনের চলার পথে মানুষকে এগিয়ে দেয়।
ঈগলের দিকে লক্ষ্য করে দেখেছেন কি? কিভাবেই না ঈগল মা তার ছানাদের একে একে বাসা থেকে ধাক্কা দিয়ে শুন্যে ভাসিয়ে দেয়, মৃত্যুর ঝুঁকি থাকা সত্যেও!
ঈগল মা-এর মনে তখন সন্দেহের দোলা- ''পারবে তো তার ছানাগুলো বাতাসে ভাসতে?'' সব সন্দেহ ঝেড়ে ফেলে নিজের মায়ের কাছ থেকে ছোটবেলায় শেখা শিক্ষাগুলো কাজে লাগায় সে। নিজ মাথা দিয়ে ঠেলে বাতাসে ভাসিয়ে দেয় ছানাদের। মা হিসেবে এটাই হয়তো তার সর্বোচ্চ উপহার!
অন্যদিকে, বাচ্চাগুলোর মনে অবস্থা চিন্তার করে দেখুন। যে জন্মদাত্রী মা মুখে তুলে এতোদিন খাইয়েছে, সেই মা-ই তাদেরকে উঁচু বাসা থেকে এভাবে ঠেলে ফেলে দিচ্ছে!
নিচে কঠিন জমি। সেখানে পড়লে নির্ঘাত প্রাণ যাবে। মনটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় তাদের মায়ের কাছ থেকে একে একে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাওয়া বাচ্চাগুলো প্রথমে বুঝতে পারে না কি করবে। নিরেট পাথরের মতো পড়ে যেতে থাকে মাটির দিকে যেখানে মৃত্যু অপেক্ষা করছে। বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টায় শূণ্যে কখনো চরকির মতো পাক খেতে থাকে তাদের দেহ,আবার কখনো ডান বা বামে কাত হয়ে সেই বাচ্চাগুলো ডান ঝাপ্টিয়ে চেষ্টা করতে থাকে বাঁচার।
প্রবল বাতাসের ধাক্কায় কুলিয়ে উঠতে পারে না তাদের কচি ডানাগুলো। মাটি আর মাত্র কয়েক গজ দূর। এ সময় তাদের বেঁচে থাকার প্রবল চেষ্টা নিজেদের মাঝে থাকা সহজাত প্রবৃত্তি থেকে বের করে আনে কিভাবে বাতাসে ভেসে থাকতে হয় সেই শিক্ষা।
ঈগল ছানা বাতাসে ডানা মেলে পরিপূর্ণ ভাবে। বেঁচে থাকার আনন্দে পাহাড়ী প্রান্ত জুড়ে তার উল্লাসের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে- 'চিহ্হ্হ্!'
মুক্ত আকাশে ডানা মেলে নতুন এক শিকারী।
়,
মোহাম্মদ ফাছিহ-উল ইসলাম শাইয়্যান
আই,টি উদ্যোক্তা, ব্লগার, লিডারশীপ কোচ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




