
শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া সিলেটের শিক্ষার্থীটি আমার পা ছুঁয়ে সালাম করলো! এর আগে আমাকে কে কে পা ছুঁয়ে সালাম করেছে মনে করার চেষ্টা করলাম। ঈদগুলোতে আমার ছোট ভাই ও তাদের স্ত্রী, আমার মামাতো-খালাতো বোনেরা আর আমার বিবিজান ছাড়া কেউ আমাকে পা ছুঁয়ে সালাম করে নাই। ঈদের সময় ছাড়া অন্য কোন সময়ে এইসব নিকটাত্মীয়েদের কাছ থেকে আমি এইভাবে সালাম পাই নাই! তাই, ছেলেটার কাছ থেকে সালাম পেয়ে আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। মাথা ছুঁয়ে দোয়া করলাম, যাতে সে ভবিষ্যতে অনেক বড় হয়।
আজকে সিলেটে আমাদের পাঠাগারের পক্ষ থেকে আয়োজিত শিক্ষাবৃত্তি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এরকম অনেক ঘটনাই ঘটলো। আরেকজন ছেলে পকেট থেকে একটি কলম বের করে আমাকে উপহার দিলো। সে এক অসাধারণ অনুভূতি!
জান্নাতুল ফেরদৌস নামের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্যে আমার মনটা এখনও দুঃখিত হয়ে আছে। তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন কিছু দিন হলো। মেয়েটার মা আমাকে এটা জানালেন। জান্নাতুল ফেরদৌস যাওয়ার সময়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়ালো। নিজের মোবাইলফোন মায়ের হাতে দিয়ে বললো - "মা আমাকে স্যারের সাথে একটা ফোটো তুলে দাও।" সে আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। তার মা কিছুটা কুণ্ঠিত হয়ে আমাদের ফোটো তুলে দিলেন।
জান্নাতুল ফেরদৌসের মতো সাফওয়ানেরও বাবা কয়েক মাস আগে মারা গিয়েছেন। এরপরে, তার মা এখনো বাসা থেকে বের হওয়া শুরু করেন নাই। আজকের অনুষ্ঠানে সবার আগে নিজের স্কুল ড্রেস পড়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে সাফওয়ান যখন দেখলো আমি একলা অর্গানাইজ করছি, আমার টিম তখনো আসে নাই, সে আমার সামনে এসে বললো - "স্যার, আমি কি আপনাকে সাহায্য করতে পারি?" পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে সে আমাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে গিয়েছে।
মহান খোদা জাতির এইসব উজ্জ্বল নক্ষত্রদের ভালো রাখুন এবং অনেক বড় হওয়ার সুযোগ করে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



