হিন্দা ছিলো ছোট্ট এক কিশোরী। স্কুলে যাওয়া-আসা করতো লম্বা ও শালীন পোষাক পরে। কিন্তু এ-পোষাকে শিক্ষিকা ওকে দেখলেই রাগ করে বলতেন-
' এ সব চলবে না। তোমাকে সবার মত
খাটো পোষাকে স্কুলে আসতে হবে। বুঝলে?'
একদিন শিক্ষিকা একটু বেশীই রেগে গেলেন। হিন্দার মন ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। ও কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরলো। এসে মাকে জানালো-
'শিক্ষিকা আমাকে লম্বা পোষাকের জন্য স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে।'
মা বললেন-
' আমার মা মণি! মন শক্ত রাখো! তুমি যে পোষাক পরেছো তা আল্লাহর হুকুম। শিক্ষিকা রাগ করুক আর যাই করুক- এ পোষাক তুমি ছাড়তে পারো না।'
'তা তো বুঝলাম! কিন্তু শিক্ষিকা যে মানছেন না?'
'ভেবে দেখো, কার কথা শুনবে তুমি-শিক্ষিকার কথা না আল্লাহর কথা! আল্লাহ্ তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সুন্দর আকৃতি দান করেছেন। তোমাকে অসংখ্য নেয়ামত দান করেছেন। মানতে হলে আল্লাহর হুকুমই মানতে হবে-কোনো মানুষের হুকুম নয়! মানুষ তোমার কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারবে না- আল্লাহ্ না চাইলে।'
মেয়েটি তখন মাকে জানালো-
' আমি আল্লাহর কথাই শুনবো। তাঁরই হুকুম পালন করবো।'
পরদিন মেয়েটি স্কুলে গেলো। আগের সেই লম্বা ও শালীন পোষাক পরেই। শিক্ষিকা ওকে দেখা মাত্রই কড়া ভাষায় ভৎসনা শুরু করলেন। মেয়েটি কেঁদে ফেললো। বললো-
'জানি না, আমি কার আনুগত্য করবো? আপনার না তাঁর!'
শিক্ষিকা বললেন-
' তাঁর মানে কার?'
কিশোরীটি তখন বললো-
" আল্লাহর! আমি যদি আপনার আনুগত্য করি তাহলে আমার আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট হবেন আর আমার আল্লাহর কথা মানলে আপনি অসন্তুষ্ট হবেন। তাহলে আমি কী করব?'
এ কথা শোনার সাথে সাথেই শিক্ষিকা কান্নায় ভেঙে পড়লেন এবং সাথে সাথে খাঁটি দিলে তাওবা করলেন। অশ্রুসিক্ত চোখে এবং বাকরুদ্ধ কণ্ঠে সস্নেহে প্রিয় ছাত্রীকে বললেন-
" তুমি বরং আল্লাহর আল্লাহর আনুগত্যই করবে! শুধু আল্লাহর আনুগত্য!!"
_______________
কিন্তু তুমি? তুমি হে নারী? তুমি কার অনুসরণ করবে?
পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া 'ফ্যাশন'-এর না ইসলামের শাশ্বত বিধান হিজাবের? অবশ্যই হিজাবের! এতে যদি তোমার শিক্ষিকা তোমাকে ক্লাস থেকে বের করে দেন, হাসতে হাসতে বের হয়ে এসো! বুকটা গর্বে ফুলিয়ে বের হয়ে এসো! এমন শিক্ষিকার কাছে কেনো পড়বে তুমি- যিনি তোমাকে আল্লাহর হুকুম মানতে বারণ করবে? পর্দাকে বিদ্রুপ করবে? এমন শিক্ষিকার কবল থেকে আল্লাহ্ যে তোমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন- এ জন্যই হাসবে, গর্ব অনুভব করবে। দুনিয়ার পড়া দুনিয়ারদারদের কাছে পড়তে গিয়ে যদি দ্বীনই সংরক্ষিত না থাকলো, তাহলে এমন পড়াকে হাসতে হাসতেই 'বিদায়' বলো! কাঁদবে না! কাঁদলে তুমি পরাজিত হবে। কান্না কি তোমার শোভা পায়? তুমি তো দ্বীন পালনের জন্য দুনিয়াকে হারিয়েছো! দ্বীন পেয়ে দুনিয়া হারিয়ে হাসবে না দ্বীন হারিয়ে দুনিয়া পেয়ে হাসবে? কখন হাসবে?