চুপ।
সৃষ্টি চুপ।
স্রষ্টা চুপ।
সেই যে বলেছিলেন...
'লিমানিল মুলকিল ইয়াওম; লিল্লাহিল ওয়াহিদিল কাহ্হার।'
"বলো , আজ এই দিনে কে আছো রাজত্বের মালিক?কোথায় রাজপুত্রেরা? কোথায় রাজারা?
শুধু ক্রোধান্বিত একক প্রভুই আছেন।"
কোন উত্তর ছিল না।
কোন উত্তর নেই।
চুপ।
চিরপরিচিত সেই পৃথিবী নেই। নেই মাটি। হাওয়া। পানি। নেই নীল রঙের ঝলমলে সূর্যের সুতীব্র আলো ভরা অসহ্য আকাশ। বিষণ্ণ বিকেল। ধূসর গোধলি। চাঁদের আলোভরা কোমল মায়াময় রাত। মেঘে মেঘে ঢাকা কালো তিমির নিবিড় রাত্রি।নেই কানে তালা লাগা বজ্রপাতের শব্দ। চোখ ধাঁধানো বিজলির চমক। নেই তারায় তারায় সাজানো অনন্ত নক্ষত্র বীথি। কোথায় সেই মিল্কিওয়ের দশ হাজার কোটি তারা? নানান চেহারা আর আর আকারের?
সূর্য আজ কোথায়?
এতো বড় বিশাল সৃষ্টি! যার গতি ছিল সীমাহীন ক্ষীপ্র। প্রচন্ড ক্ষমতাধর।
নেই সেই সূর্য!
পর্বতমালা কোথায়?
ঊর্মিমালা কোথায়?
কোথায় প্রশান্ত, আটলান্টিক?
কোথায় কৃষ্ণ, ভূমধ্য, আরব আর মৃত সাগর?
কোথায় দিকচিহ্নহীন সাহারা মরু?
কোথায় হাজার মাইল লম্বা ঘন অরণ্যানী?
কোথায় হিমালয়, আলপস, আন্দেজ, সিনাই?
পাহাড়গুলো কোথায়?
কোথায় কোটি কোটি মানব?
আগুন, পানি, মাটি, হাওয়া কোথায়?
ঘাস, ফুল, পাখি, তরু-লতা, নদ-নদী?
বাঘ, ভালুক, হাতী, ঘোড়া, সিংহ আর সাপ?
কফ, কাশি, থুথু আর শুক্র?
নেই?!
হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে সব! কর্পূরের মত উবে গেছে গোটা সৃষ্টি!!
নেই বিশ্ব ভুবনের একটি অণু।
নেই বাতাসের একটা ঢেউ।
নেই পানির একটা ফোঁটা।
নেই আগুনের একটা ফুলকি।
নেই মাটির এক কণা ।
এ এক অচেনা পৃথিবী, অজানা দুনিয়া, অবাক জগত। কোন পার থেকে চলে এসেছি কোন পারে?
অন্য ভুবন।
শব্দহীন! সময়হীন!! রঙ, রূপ, রস, গন্ধহীন!!!
কোথায় কেউ নেই।
কিছু নেই।
নিরব। নিঃশব্দ। অলৌকিক। অপার বিস্ময়কর।
নিঝুম।
চলে যায় হজার, অযুত বছর।
তারপর।
একদিন...
আসে...
সেইদিন...
হাশরের দিন !!!!