somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী রাহুর কবলে আক্রান্ত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছাত্রসমাজ। ছাত্রলীগের নখরে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলো। বেশিরভাগ সময় অশান্ত থাকছে আমাদের শিক্ষাঙ্গনগুলো। সরকার ছাত্রদের আন্দোলন দমাতে লাঠিয়াল বাহিনীর মতো সাধারণ ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে পুলিশ বাহিনীকে। সাধারণ ছাত্রদের কপালের নিয়তি! কখনও পুলিশের লাঠি আর না হয় ছাত্রনেতাদের মনতুষ্টির জন্য অপকর্মের ক্রীড়ানক। মহাদুর্যোগের মহাপ্রলয়ে আক্রান্ত আমাদের নতুন প্রজন্ম গড়ার কারখানাগুলো আজ ইতিহাসের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার রাত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় যে তাণ্ডব শুরু হয়েছে তা আজ অবদি অব্যাহত। আর যে হিংস্র, জঘন্য, পৈশাচিক ও ভয়ঙ্কর দানব কর্তৃক দেশের সর্বস্তরের মানুষ আক্রমণের শিকার হয়ে আসছে, সে সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। একটু শুদ্ধ করে বললে এভাবে বলতে হয়— বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এখন আর ছাত্ররাজনীতি নেই, আছে ছাত্রলীগ নামক মানুষখেকোদের অস্ত্রের মহড়া। আছে হত্যা, লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, সিট দখল, হল দখল ও নারী নির্যাতন, শিক্ষক লাঞ্ছনা ও অস্ত্রবাজির আরেক নাম ছাত্রলীগের রাজনীতি। ছাত্রলীগ আমাদের ঐতিহ্যমণ্ডিত গৌরবোজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতিকে এক কঠিন পরীক্ষার কাঠগড়ায় এনে দাঁড় করিয়েছে। আর শেখ মুজিবের সূর্যসস্তান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অপকর্মের প্রভাব এবার অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আওয়ামী-শিক্ষকদের ওপর আছর করেছে। শয়তান অনেক স্থানেই এখন আওয়ামী ছাত্র-শিক্ষক উভয়ের কাঁধে ভর করছে। মজার ব্যাপার, ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ এখন ছাত্রলীগ আর আওয়ামী বাম শিক্ষকদের প্রতিপক্ষও এখন আওয়ামী লীগ নিজেই।
ফলে সারা দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে মহাসঙ্কট। বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অব্যাহত চরম নৈরাজ্য ও অস্থিরতা গভীর অ্যাকাডেমিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে রূপ নিয়েছে। ফলে ভেঙে পড়েছে উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা। এর অন্যতম কারণ—’৭৩ সালের অধ্যাদেশ পদদলন, দলীয়করণ, নেত্রী তোষণ নীতি, আত্মীয়করণ, সরকারি হস্তক্ষেপ, অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাসসহ আওয়ামী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের একক রাজত্ব কায়েমের নষ্ট ও ভ্রষ্ট রাজনীতি। দলীয় পদ লেহনকারী আর স্বেচ্ছাচারী দলীয় ভিসি, প্রো-ভিসি এবং সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই শিক্ষার নৈরাজ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। নিজ কিংবা দলীয় স্বার্থ হাসিলে কলকাঠি নাড়ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর আস্থাভাজন জনপ্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। দেশের সবচেয়ে বড় ও বিখ্যাত চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়—ঢাকা, বুয়েট, জাহাঙ্গীনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চরম সঙ্কটাবর্তে। অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চ শিক্ষার প্রধান কলেজগুলোতেও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ একেবারেই অনুপস্থিত। দেশের প্রকৌশল শিক্ষার প্রধান পীঠস্থান ও সুখ্যাত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এখন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুপরিচিত বুয়েটের সামান্য নিশানাটুকুও আজ আক্রান্ত। ফলে সঙ্কট দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। বুয়েটে গত দুই বছর এবং জাহাঙ্গীরনগরে প্রায় এক বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোয় কার্যত সরকার এবং প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ঈদ-পরবর্তী বুয়েট খুললেও সঙ্কট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদ্মা সেতুর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি হলো। তাছাড়া প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশে পদ্মা সেতুর চাঁদা তুলতে গিয়ে যে ছাত্র নিহত হলো তার দায় কি প্রধানমন্ত্রী এড়াতে পারবেন? এর আগেও এ প্রতিষ্ঠান শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় সেক্রেটারিসহ চার রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে অচলাবস্থা ও সঙ্কটে পড়েছিল। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও সরকারদলীয়দের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং রাজনৈতিক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। চলমান এ অস্থিরতা, নৈরাজ্য ও সঙ্কটে চরম উদ্বেগ আর উত্কণ্ঠায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় রাজনৈতিক হাঙ্গামা, সন্ত্রাস ও সেশনজটের কারণে অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তান অন্য দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠাচ্ছেন। এতে দেশের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে, এদেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্ম বিজাতীয় ভাবধারায় মগজ ধোলাই হয়ে নিজ ঐতিহ্য ও শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ফলে বাংলাদেশের অস্তিত্বই সঙ্কটাপন্ন।
আমাদের শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ‘ঢেলে সাজানো’র চিত্তাকর্ষক ঘোষণা দিচ্ছেন বারবার। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে, দুর্নীতি, অথর্বতা, পরিকল্পনাহীনতা ও লক্ষ্যহীনতা আমাদের কীটদষ্ট শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। আজ কী শিক্ষকের মান, কী শিক্ষার্থীর মান, যা-ই আমরা বিচার করি, তার হিসাব মেলানো ভার। নৈতিক অধঃপতন, মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং অভিরুচির বিকৃতি আমাদের এই গোটা শিক্ষাব্যবস্থায় যে ধস নামিয়েছে, তার যথার্থ মূল্যায়ন যদি আমরা এখনই না করি তাহলে জাতি হিসেবে বিশ্বসমাজে মাথা গোঁজার ঠাঁই আমরা পাব না। সিলেট এমসি কলেজসহ সারা দেশের বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ আগুন জ্বালিয়ে দিল, কই তখন তো ছাত্রলীগ ধরতে চিরুনি অভিযান হয়নি? আসলে আমাদের শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির দুষ্ট অপচক্র যে কর্মজাল বিস্তার করেছে, তার ফলে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত তাদের থেকে শুরু করে শিক্ষাদানের দায়িত্বে যারা নিয়োজিত সবার মধ্যেই লক্ষ্য করি কলসভর্তি মূর্খতার দাপট। আর এই দাপটে আমাদের সমাজের সব সুনীতি, শ্রেয়বোধ ও সুবচন শুধু অকার্যকরই হয়ে পড়ছে না, চিরস্থায়ীভাবে নির্বাসিত হয়ে পড়ছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একাডেমীশিয়ানরা হচ্ছেন বঞ্চিত আর মেধাশূন্য দলবাজরা পরিচালনা করছে সবকিছু। তাছাড়া শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর, শিক্ষাব্যবস্থার বাণিজ্যিকায়ন এবং সস্তা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হিসেবে শিক্ষক নিয়োগ ও দলীয় ভিত্তিতে তার সংখ্যা বৃদ্ধির যে জাতিবিনাশী এবং আত্মবিনাশী প্রকল্প আমাদের সমাজে চালু রয়েছে, তা সমূলে সমুত্সাদন করতে হবে। শিক্ষার সঙ্গে নৈতিকতা, বিশেষ করে ধর্মাশ্রিত নৈতিকতা এবং মানবিক সত্তার উত্কর্ষ সাধনে ইতিবাচক যে সামাজিক মূল্যবোধ আমাদের ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাকেও শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বিত করতে হবে। নচেত্ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই মহামারি রোধ করা যাবে না।
ইউরোপে আমেরিকায় প্রত্যেক দেশেই মাতৃভাষার বাইরে দুটি মহাদেশীয় ভাষা বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের শিখতে হয় এবং ধর্মীয় নৈতিকতা ও মূল্যবোধ যাতে শিক্ষার্থীর কুপ্রবৃত্তির অবদমন করে, তার মধ্যে সুপ্রবৃত্তি, শ্রেয়বোধ ও সুনীতির বিকাশ ঘটায়—শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে সেভাবেই সমন্বিত করা হয়েছে। এসবের কারণে ইউরোপ কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পণ্ডিত তো দূরের কথা, কোনো ব্যক্তিকে এ কথা বলতে শোনা যায়নি, কোমলমতি বালক-বালিকাদেরও একাধিক ভাষার বোঝা হিসেবে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে, যার ফলে আমাদের জ্ঞানাহরণের বিঘ্ন ঘটতে পারে কিংবা বাধ্যতামূলক ধর্মীয় শিক্ষার কারণে তারা তমসাবাদী বা মৌলবাদী হয়ে পড়ছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্নভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জবাবদিহিতা এবং দায়িত্ব পালন সম্পর্কে পরিধারণের (মনিটরিংয়ের) কোনো পন্থা আজ পর্যন্ত আমরা উদ্ভাবন করিনি। ফলে কখনও লাগাতার ছাত্র ধর্মঘট অথবা শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি আবার কখনও গণপদত্যাগের হুমকি।
বর্তমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় এই দশার পেছনে অন্য যে কারণটি সক্রিয় তা হলো, জাতীয় নেতাদের অসততা, স্বার্থপরতা ও ক্ষমতার লোভ, চরিত্রের অধঃপতন; সমান্তরালে ছাত্র নেতাদেরও চারিত্রিক স্খলন ঘটছে। আমাদের জাতীয় নেতারা ক্ষমতায় আরোহণের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে ছাত্রদের। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও টাকা তুলে দিয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তির মোকাবিলা করার জন্য মাঠে নামানো হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ছাত্ররা হয়ে পড়ছে মেধাশূন্য ও পেশাদার সন্ত্রাসী। মাদকদ্রব্যে আসক্ত করিয়ে লেখাপড়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। ফলে ক্যাম্পাসগুলোতে চালু হয় এক অসুস্থ রাজনৈতিক কালচার। সরকারি ও বিরোধী উভয় ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাস ও দৌরাত্ম্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখনও অশান্ত হয়, কখনও বন্ধ হয়, পরীক্ষা পিছিয়ে যায়, সেশনজট বাড়তে থাকে। মেধাবী ছাত্ররা হতাশ হয়ে পরিণত হয় ছাত্রসংগঠনের ক্যাডারে। লেখাপড়া করতে এসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যায় সন্ত্রাসী হয়ে। আবার কখনও অকালে ঝরে পড়ে অনেক নক্ষত্র।
দেশের প্রতি, দেশের জনগণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া ছাত্রদের প্রতি আমাদের জাতীয় নেতাদের কোনো রকম সহানুভূতি নেই। আমাদের জাতীয় নেতারা তাদের সন্তানকে লেখাপড়ার জন্য দেশের বাইরে পাঠান যেখানে সন্ত্রাস বা সেশনজট নেই। তাই কার সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হলো তা নিয়ে নেতাদের কোনো মাথাব্যথা থাকে না। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি আমলা এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সন্তানরাও দেশের বাইরে লেখাপড়া করছে। রাজনৈতিক নেতারা রাজনীতি ব্যবসা দ্বারা অর্জিত অর্থে নিজ সন্তান-সন্ততিদের ব্রিটেন ও আমেরিকায় পড়াশোনা করতে পাঠান। সাধারণ মানুষের সন্তানরা গোল্লায় গেলে, অধঃপতিত হলে, ফেনসিডিল-গাঁজাখোর হলে, সন্ত্রাসী হলে এবং একদিন অন্য সন্ত্রাসীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে খুন হলে তাদের কিছু যায় আসে না।
প্রোব ম্যাগাজিনের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৭৪ ভাগ রাজনীতিবিদের সন্তান পড়াশোনা করে বিদেশে ‘সানস অ্যান্ড ডটারস অব পলিটিক্যাল প্যারেন্টস’ শীর্ষক রিপোর্টে ম্যাগাজিনটির সাম্প্রতিক এক তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। রাজনীতিবিদদের সন্তানরা যারা বিদেশে পড়াশোনা করতে যান, তাদের কেউ কেউ দেশে ফিরে আসেন পেশাগত দায়িত্ব পালনে। কেউবা যোগ দেন পিতামাতার ব্যবসায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল ১০৭টি দল। তার মধ্যে ২৪টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছেলে ও মেয়ের ওপর অনুসন্ধান করেছে প্রোব। রাজনৈতিক নেতার প্রথম পছন্দ হিসেবে তারা বেছে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে। এর পরই আছে ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়ার নাম। আদর্শ বা অন্যান্য দিক দিয়ে নেতাদের মধ্যে পার্থক্য যাই হোক, যখন তাদের সন্তানদের পড়াশোনার বিষয়টি আসে, তখন তারা সবাই এক। বাম, ডান, মধ্যপন্থী, ইসলামপন্থী, ধর্মনিরপেক্ষ যাই হোক তাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাঠাতে ভুল করেন না।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের পুরো সময়ই শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের সব ক’টি অর্থাত্ ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসিই দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের প্রায় সবার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও উস্কানির বিস্তর অভিযোগ উঠছে। এসময় ছাত্রলীগ-ছাত্রলীগ এবং প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষ, গোলাগুলি, বোমাবাজির ঘটনায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ৩৬ জন ছাত্র নিহত হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের একটিরও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়নি। বড় ও মাঝারি ৫ শতাধিক সংঘর্ষে অন্তত ৬ হাজারের অধিক আহত হয়েছে।
একজন মেধাবী ছাত্র নিহত হওয়ার পর সামান্য শোক আর নিন্দা জানানোই কি শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব? আমাদের দানব ছাত্ররাজনীতি একের পর এক কেড়ে নিচ্ছে জাতির সম্ভাবনাময় তরুণ মেধাবী ছাত্রদের প্রাণ। আমাদের চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জাতি গড়ার কারখানা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আওয়ামী রাহুর কবলে আক্রান্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো এক সময় তাদের সমস্যা পুষিয়ে নিতে পারলেও, মানুষ তৈরির কারখানা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পারবে না তার অপূরণীয় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে। আমাদের ছাত্রসমাজ আর কি ফিরে পাবে তার জীবনের এই হারিয়ে যাওয়া সোনালি সময়? তাই নতুন প্রজন্ম ও আগামী দিনের কর্ণধারদের জীবন বাঁচাতে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে ওঠে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার আত্মবিনাশী এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে আমজনতাকে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×