somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শামান সিম্ব্রী
একটু পাগলাটে টাইপের আত্বকেন্দ্রিক ছেলে আমি।ছোটবেলা থেকেই পাগল পাগল কথাটা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি,মেনেও নিয়েছি।বিদ্যালয় জীবনটা তেমন সুখের ছিল না,তেমন একটা মনে রাখার চেষ্টা করিও না।সিনেমা পাগল,সিনেমা নির্মানের স্বপ্ন দেখি,আর অদক্ষ লেখনীর মাঝে পাগলামি করে বেড়াই

তোমার নিকট আমার ছোট্ট চিঠি

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় নীহারিকা,
ভাল আছ নিশ্চয়?নীহারিকা নামে সম্বোধন করলাম কারন তোমার আসল নামটা ঠিক মনে করতে পারছি না,তবে নামের আদ্যোক্ষর এ "ন" ছিল।তাই নীহারিকা নামেই সম্বোধন করলাম।জানো তো ছায়াপথকে আমরা নীহারিকা নামেও সম্বোধন করি।এসব বাজে কথা রাখি,অনেকদিন পর তোমার কথা আমার খুব মনে পরছে।মনে পরবেই না কেন?বসন্ত তো বলছে আমি যাব যাব,এই যাই যাই শুনতে ভাললাগে বল?তোমার মনে আছে তখন বসন্তের শেষদিন গুলিতে আমরা বুনো জাম খেতাম।বুনো জামকে আমরা বলতাম আমজাম,এই আমজামের জন্যে বনে বাদারে ঘুরে বেরাতাম।ঝিনুক ঘসে আমরা আম কেটে কেটে খেতাম।জান নীহারিকা?এখন আর ঝি ঝি পোঁকার ডাক কানে বাজে না?বাজবেই বা কি করে বল?এই ইট পাথরের জঙ্গলে ঝি ঝি পোকারা আসে না,ওরা আসে গ্রামের পথে প্রান্তরে,সতিকারের জঙ্গলে।বসন্ত কালের সন্ধ্যা বেলার কথা মনে পরে?তুমি আমি আমরা সবাই শুপারি কাটার জাতা দিয়ে ঝিঁ ঝিঁ পোঁকাদের ডাকতাম আর চিৎকার করে বলতাম
"আয় ঝিঁ ঝিঁ আয়
তোর মায় তোরে থুইয়া
ডাইল চাউল ভাজা খায়"
হা হা হা,এখন এসব মনে পরলে ভিষন হাঁসি পায়।পহেলা বৈশাখ এলো বলে,আমাদের গ্রামে পহেলা বৈশাখে তখন মঙ্গল শোভাযাত্রা হত না,দুরে একটা মেলা হত,নীলের মেলা।বাড়িতে বাড়িতে ওইদিন ভাল ভাল খাবার রান্না হত,আমাদেরকে সকাল সকাল উঠে পড়তে বসতে হত কারন কথিত ছিল বছরের প্রথম দিন ভাল খেতে ও পড়তে হয়,প্রথমদিন ভালভাবে কাটালে সারাবছর ভাল যাবে।আমাদের মন পরে থাকত ওই নীলের মেলায়।অমল কাকা তার পিঠে ও জিহবায় ২ টা লোহার শিক গেথে মেলাতে ঘুরতেইন এবং চাঁদা তুলতেন।আমিও এখনও ভাবি,তার কি একটুও ব্যাথা লাগত না?এখন কি হয় নীল মেলা?ও এই সময় আমরা অপেক্ষা করতাম কবে আম পাকবে কবে কাঁঠাল পাকবে,আর আমরা আনন্দ সহকারে খাব।অনেকটা চাতক পাখির মতন,চাতক যেমন দে জল দে জল করত আমরাও মনে মনে বলতাম এমন কিছুই হয়ত বলতাম।বৈশাখি ঝরের কথা কি বলব?ঝর এলে আম্মু পিটিয়ে ঘরে আনত আমাদের আর আমরা গজগজ করতাম ওই পাড়ার ইস্রাফিল,সম্ভুরা আম সব নিয়ে নিল বলে।শিলা বৃষ্টি হলে আনন্দের সীমা থাকত না,তখন তো আর সচরাচর এত ফ্রীজ ছিল না আর গ্রামে তো ভাবাই যেত না ফ্রিজের কথা,আমরা নেমে পরতাম শিল কুড়াতে।নীহারিক মনে পরে সাঁতার শেখার কথা?তুমি আমার থেকে আগে সাঁতার শিখলেও পরবর্তিতে কখনই সাঁতার কাটায় আমার সাথে জয়ী হতে পার নিই।রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়,
'' দিন গুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলা না
সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি''
পিকনিককে আমরা বলতাম বনভাত,বাগানের ভিতর চুলা বানিয়ে প্রত্যেকের বাড়ি থেকে চাল,ডিম,মরিচ,পেয়াজ এনে এনে আমরা পিকনিক করতাম।একবারতো রান্না করে রেখে গেলাম এসে দেখি বাদল ভাইয়া তার বন্ধুদের নিয়ে সব সাবার করে ফেলল,কি চিৎকার চেচামেচিই না সেদিন করলাম আমরা।পরবর্তিতে আমরাও করেছি।মাধ্যমিকে ওঠার পর থেকে আমাদের দুরুত্ব বাড়তে থাকল,তোমার মায়ের মৃত্যুর পর তোমার বাবা নতুন বিয়ে করলেন,এরপরই তুমি কেমন যেন হয়ে গেলে।একদিন শুনলাম তোমার নাকি বিয়ে,তখন সবেমাত্র আমরা নবম শ্রেনীতে পড়ি।সবাই অনেক চেষ্টা করলাম বিয়ে আটকাতে,কিন্তু তোমার পরিবার ও স্থানীয় মুরুব্বিদের কারনে বিয়েতে বাধাদান করা গেল না।এরপর যা হবার তাই হল,দশম শ্রেনীতে যখন পড়ি তখন একদিন পুরো বিদ্যালয়ে নেমে আসল শোকের মাতম,কারন তুমি নাকি আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছ।শোক কিন্তু বেশিদিন থাকে না,একদিন সবাই সবকিছু ভুলে যায়।এই দেখই না আমিও তোমার নামটা ভুলে গেছি,আম্মুর কাছে জানতে চাইলে আম্মু বলবে কিন্তু মনে মনে রাগ করবে তাই আর জিজ্ঞেস করব না।আসলে জান নীহারিকা?আমরা সবাই খুব ব্যস্ত,কেউ কারো জন্যে বসে থাকি না,তুমি নেই,তোমার অভাবও হয়ত আর কেউ বোধ করি না,সত্যিই কি করি না?
আচ্ছা ভাল থেকো
ইতি
থাক নামটা আরেকদিন নাহয় দিব।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫৩
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×