অনেক দিন থাকেই দেখছি, সামুতে ব্লগাররা নানান গোত্রে বিভক্ত। একেকজনের একেক মত, অবশ্য এটাই স্বাভাবিক। আর আমরা সম্ভবত জাতিগত ভাবেই বিতর্ক প্রিয়; বিতর্ক ছাড়া আমাদের আড্ডাগুলো কেমন যেন ম্যারম্যারে, প্রানহীন হয়ে যায়। সবচেয়ে কমন বিতর্কটা সম্ভবত রাজনৈতিক; এইব্যাপারে আমি কম বুঝি, তাই এ বিষয়ে কিছু না বলাই ভালো। আজকে ঈশ্বর, ধর্ম আর বিজ্ঞান নিয়ে বিতর্ক সম্পর্কে কিছু কথা শেয়ার করবো।
ড. আলী আজগর স্যার একদিন এক সেমিনারে বলেছিলেন “পদার্থ বিজ্ঞান হচ্ছে কবিতার মত। কবিতায় একজন কবি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে ছন্দ খোজেন আর পদার্থবিদ আমাদের চারপাশের নানান ঘটনা সাজিয়ে প্রকৃতির নিয়ম খোজে।” (অবশ্য কবিতার সাথে ফিজিক্সের আর একটা মিল আছে--দুইটাই আমার কাছে দুর্বোধ্য) এই অর্থে পদার্থ বিজ্ঞানকে বলা যায় ঈশ্বরকে অন্বেষনের বিজ্ঞান, কারন প্রকৃতির নিয়মই তো স্রষ্টার নিয়ম।
আর, সব ধর্মই (বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম) কিন্তু জ্ঞান অর্জন এবং অন্বেষনকে উৎসাহিত করে। জ্ঞান অর্জন এবং অন্বেষনই কিন্তু বিজ্ঞান।
তাহলে, বিজ্ঞান আর ধর্মের মধ্যে বিরোধটা কোথায়।
এইতো কিছুদিন আগে স্টিফেন হকিং হঠাৎ করেই বললেন,বিজ্ঞান নাকি ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করে না। তিনি কিসের ভিত্তিতে, কোন যুক্তিতে এমন কথা বললেন; আমি বুঝি নাই। আমারতো মনে হয়, ফিজিক্স এখনো Development-এর পর্যায়ে আছে, এখন ও জানার, আবিস্কারের অনেক বাকি। এখনও dream of final theory, dream-ই হয়ে আছে। তাই, ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব নিয়ে কথা বলার সময় বা সুযোগ মনে হয় এখনও আসে নি।
ধর্ম বা ঈশ্বর বাস করে একজন মানুষের বিশ্বাসে আর বিজ্ঞারে কাজ মানুষের যুক্তি বা বোধ নিয়ে। শুধু বিশ্বাস নিয়ে যেমন মানুষ, মানুষ হয় না; তেমনি শুধু যুক্তি দিয়েও হয় না। তাই, আমার মনে হয়, এই দুই বিষয় নিয়ে খামোখা প্যাচানো বা খিচুরি না বানানোই ভালো। ধর্ম আর বিজ্ঞানকে যার যার যায়গায় থাকতে দিলেই তা মানুষকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
ধর্মহীন (বিশ্বাসহীন) বিজ্ঞান (যুক্তি) সৃষ্টি করে মারনাস্ত্র, আর বিজ্ঞানহীন ধর্ম জন্ম দেয় উগ্র মৌলবাদের, যার কোনটাই মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নেয় না, বরং পিছিয়ে দেয়।
তাহলে কেন এই বিষয়ে এতো বিতর্ক। হয়ত এটাই এখনকার তথাকথিত স্মার্টনেস, অথবা অল্প বিদ্যা অথবা বিতর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে আলোচনায় আসার চেষ্টা।
যারা এই বিষয় নিয়ে অকেহেতু বিতর্ক করেন তারা না ধর্ম সম্পর্কে ভাল জানেন, না বিজ্ঞান সম্পর্কে।
(এই পোস্টের মতামত একেবারেই আমার নিজস্ব। কারো অনুভূতিতে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য না। তারপর ও যদি কাউকে আঘাত করে থাকি, তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



