বাংলাদেশে অনেকগুলো অদ্ভুত নিয়ম আছে যার কার্যকারিতা এখন প্রায় নাই বললেই চলে। যেখানে প্রায় সব চাকুরী এবং অন্যান্য ইন্টারভিউ এ সকল কাগজপত্রের মুল কপি প্রদর্শন করতে হয়, সেখানে গাদা গাদা ফটোকপিই অযৌক্তিক। এর উপর বিষফোড়ার মত আছে সত্যায়নের ঝামেলা। যার প্রয়োজন তারও যেমন সময় নষ্ট হয়, যিনি করবেন তারও বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়।
তবে এ নিয়ে অনেক মজার মজার ঘটনাও ঘটে। তেমনি একটি ঘটনা শেয়ার করছি।
২০০০ সালের কথা, তখন সবে মাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছি। হলের আই ডি কার্ড করার জন্য বিভাগের কোন স্যার/ম্যাডামের সত্যায়িত করা ছবি লাগবে। একে নতুন ভর্তি হয়েছি তার উপর ছোটবেলা থেকেই আমি একটু বেকুব টাইপের, তাই স্যারেরা কোথায় বসেন সেই খবর না নিয়েই নিচতলার অসিত স্যারের রুমে চলে গেলাম।
পরবর্তীকালে জেনেছি স্যার তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে খিটখিটে মেজাজের অধিকারী শিক্ষক ছিলেন। আর ডিপার্টমেন্টে ঢুকতেই স্যারের রুম আগে পরে বলে সত্যায়নের অনুরোধে অনুরোধে স্যারের মেজাজ আরও খারাপ থাকে।
যাই হোক, স্যার বিরক্তমুখে বললেন, 'কি চাই?'
বিনয়ের সাথে বললাম কয়েকটা ছবি এটাস্টেড করাতে চাই।
সক্কাল বেলা বলেই সম্ভবত স্যার আমার কথা ঠিকমত শোনেন নাই। বিরক্ত হয়ে বললেন, 'ইউনিভার্সিটিতে কি আর কোন টিচার নাই, আর কাউরে পাও না? '
আমিও কাচুমাচু হয়ে বললাম, না স্যার, আর কাউরে তো দেখলাম না। আপনার রুম খোলা দেখে আসলাম।
স্যার রেগে ফায়ার হয়ে বললেন 'আমি মেইন কপি ছাড়া এটাস্টেড করি না'
আমিঃ স্যার আমি নিজেই তো মেইন কপি।
স্যারঃ মানে?
আমিঃ না মানে কয়েকটা ছবি সত্যায়িত করাতে চেয়েছিলাম, স্যার।
স্যারঃ (একটু মনে হয় লজ্জিত হয়েই) আই ডি কার্ড আনছ?
আমিঃ (কাচুমাচু হয়ে) আই ডি কার্ডের জন্যই তো ছবি লাগবে, স্যার। পে স্লিপ আছে, দ্যাখাবো?
কি মনে করে স্যার ছবিগুলো সত্যায়িত করে দিয়েছিলেন। পরে শুনেছি, আমাদের ব্যাচের আমিই একমাত্র সৌভাগ্যবান যার কিছু একটা অসীত স্যার সত্যায়িত করে দিয়েছিলেন। দূর্মূখেরা অবশ্য "আমাদের ব্যাচের" শব্দ দুটি বাদ দিতেই পছন্দ করে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



