somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৭ই মার্চ স্মরণেঃ স্বাধীনতা পূর্ব বঙ্গবন্ধু আর স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধু মুদ্রার এপিট ওপিট

০৭ ই মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে দাঁড়িয়ে আজ আমার উপলব্ধি, ৭ই মার্চের ভাষণ বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতায় উজ্জীবিত করেছিল, কিন্ত এটি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতন্ত্রে উজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর তাই বর্তমান বাংলাদেশ পেশি শক্তি নির্ভর, বন্দুক নির্ভর দখলদার রাজনীতির কাছে পরাভূত।

আমি রাজনিতিজীবি নই কিন্তু রাজনীতি সচেতন মানুষ। আমার মধ্যে রাজনীতি সচেতনতা আসে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে। ১৯৮৬ সালে আমি তখন চাটখিল হাইস্কুলের ৮ম শ্রেনীর ছাত্র। চাটখিল দক্ষিন বাজারের মুখে বেলায়েত (সম্ভবত) ভাইয়ের লন্ড্রি দোকানে এই ভাষণের ক্যাসেটটি প্রায়ই বাজানো হত। এই ভাষণটির প্রায় প্রতিটি কথাই আমার মুখস্ত ছিল তখন। একদিন, বেলায়েত ভাই থেকে ভাষণের ক্যাসেটটি এক সপ্তাহের জন্যে চেয়ে নিই নিজে বাড়িতে বসে শুনব বলে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মূল শব্দটি ছিল, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।

৭ই মার্চের ভাষণই ছিল বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের পথ নির্দেশক। এটি বাংলাদেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল সময়ের প্রয়োজনে। সে সময়ে ৪০ ঊর্ধ্ব প্রায় সব মানুষই ছিলেন কোন না কোন ভাবে ১৯৪৫ সালের পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে জড়িত বা সমর্থক। মাত্র ২৩ বছর আগে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে যে রাষ্ট্রটি তারা প্রতিষ্ঠা করেছেন, যে রাষ্ট্রের অনেক কিছুই তখনো অপূর্ণ সে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা, সে রাষ্ট্রটিকে ভেঙ্গে নতুন স্বাধীন দেশের আন্দোলন করা, এটি ছিল অনেক বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। বংবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল দিক নির্দেশনা মূলক। যারা তখনও পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান খুজছিলেন, পাকিস্তানের মোহে বিভোর ছিলেন, তাদেরকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দিক্ষা দিতে, প্রণোদিত করতে এ ভাষণ ম্যজিকের মত কাজ করেছিল। এই ভাষণ গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়, মুক্তির স্বপ্ন, অর্থনৈতিক মুক্তি, জুলুম নির্যাতন আর স্বাধিকারের প্রশ্নে এক অনন্য মাইল ফলক।

কিন্তু বর্তমান আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ৭ই মার্চের ভাষণের উল্টো স্রোত। অনেকে বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার বাকশালের আধুনিক সংস্করণ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ফিরে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত বাকশালের রাজনীতির কুশলী বাস্তবায়নে। ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্যান্য রাজনৈতিক দল ভেঙে দিয়ে 'বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ' (বাকশাল) নামে জাতীয় রাজনৈতিক দল গঠন করেন। বলা হয়ে থাকে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে যে স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৪ই ফেব্রুয়ারি তিনি সে স্বপ্নের কবর রচনা করেছেন। স্বাধীনতা পূর্ব বঙ্গবন্ধু আর স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধু মুদ্রার এপিট ওপিট। স্বাধীনতার পূর্বে বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রধান রাজনৈতিক নেতা, যিনি বাংলাদেশের মানুষের আবেগের পারদ সফল ভাবে উস্কে দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রানিত করেছেন। আর, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু হলেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি - তিনি মানুষের অধিকার হরণ করলেন, অন্যায্যতার কাছে নিজেকে সপে দিলেন।


আজ ৭ই মার্চে প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে, দখল ও জুলুমতন্ত্রের অবসান ঘটাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:৩১
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×