
এই যে জাতির সামনে নতুন একটি চেতনা হাজির করা হলো এই চেতনার ফলাফল কি? দেশে এখন দুইটা চেতনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেলো, একটা হলো একাত্তরের চেতনা, অন্যটা জুলাই চেতনা। একাত্তরের চেতনাকে চুয়ান্ন বছর পর পরাজিত করে চব্বিশের জুলাই চেতনা জয়লাভ করার পর বলা হচ্ছে দেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হলো। এখন এই জুলাই চেতনা কত বছর স্থায়ী হতে পারে?
আপনি যখন একটা চেতনাকে যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজয়ের কথা বলবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই নতুন চেতনার পরাজয়ের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে পরবর্তী স্বাধীনতার ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে যায়। এটাই রাজনৈতিক নিয়ম। চেতনা কখনো চিরস্থায়ী হয় না, সময়, প্রজন্ম আর জাতিগত শিক্ষার মাধ্যমে চেতনার পরিবর্তন হয়। বিশ্বের যেসব জাতি শত শত বছর তাদের জাতিগত চেতনা ধরে রাখতে পেরেছে তারা তাদের প্রজন্মকে সেই চেতনার সঠিক শিক্ষা দিয়ে সময়কে আটকে রাখতে পেরেছে।
সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশে একাত্তর পরবর্তী সময়ে সব রাজনীতিবিদরা প্রজন্মকে চেতনার শিক্ষা দেয়ার পরিবর্তে চেতনার ব্যবসা শিখিয়েছে। এখন চব্বিশ পরবর্তী সময়েও ঠিক একই কায়দায় চেতনার ব্যবসা শেখানো হচ্ছে। জাতিগত বিভেদ চরম আকার ধারণ করেছে, সামাজিক বৈষম্য অতীতের যে কোন সময়ের তুলানায় বেড়েছে, অন্যায় অবিচার আর জুলুম চলছে দেদারসে। দূর্নীতি হচ্ছে, মারামারি হানাহানি হচ্ছে, ঘুষ বানিজ্য হচ্ছে, সিন্ডিকেট চলছে, সরকারের নিয়ন্ত্রণে কোন কিছুই নেই।
জুলাই চেতনার সঠিক শিক্ষা যদি জাতিকে দিতে পারতো তাহলে এসব হওয়ার কথা ছিলো না। এভাবে দেশ চলারও কথা ছিলো না। যারা চব্বিশের জুলাই চেতনায় বিশ্বাস করে মাঠে আন্দোলন করেছিলো তারাও এখন হতাশ হয়ে গেছে। গ্রামে গঞ্জে, চা দোকানে, রাস্তাঘাটে, অফিসে কোথাও জুলাই চেতনার আর কিছু অবশিষ্ট আছে বলে মনে হচ্ছে না। এর কারন কি? এর জন্য দায়ী তো এই রাজনীতিবিদরা।
তাইলে এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে চব্বিশের চেতনাও চিরস্থায়ী হবে না। নতুন চেতনা আবার এই জাতির জন্য অবধারিত হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটাকেই কি তবে তৃতীয় স্বাধীনতা বলা হবে? বাঙালি কি আরেকটা স্বাধীনতা অর্জন করার অপেক্ষায় আছে? প্রশ্ন হলো, দ্বিতীয় স্বাধীনতা যদি ৫৪ বছর পরে পায় তৃতীয় স্বাধীনতার জন্য কত বছর সময় লাগতে পারে?
-রাজনৈতিক আলাপ
©শামীম মোহাম্মদ মাসুদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




