কালকে রাতে প্রথম এ ফারাহ এর ম্যাসেজ পেয়ে মনে হল কালকে না বন্ধু দিবস !!! । তারপর একে একে স্কুলে যে আমাদের গ্রুপটা ছিল (ফারাহ , নন্দিনী , সামিহা , শান্তা ,রায়হানা )তাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ম্যাসেজ পাঠালাম । রুদমিলা দেশের বাইরে ওকে ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানালাম । বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমার অনেক নতুন বন্ধু হয়েছে কিন্তু স্কুল এর বন্ধুদের কথা সবসময় আমার মন পরে আর আমি সবসময় ওদের অনেক মিস করি ।যদিও নন্দিনী , সামিহা একই জায়গায় আছে তাও এখন ক্যাম্পাস আলাদা হওয়াতে দেখা অনেক কম হয় । কিন্তু এখন প্রতি টার্ম এর শেষ এ আমাদের গ্রুপটা একবার আমরা বাইরে একসাথে ঘুরতে যাই , এবারই প্রথম বারের মতন রুদমিলা আমাদের সাথে থাকবে না ।
এরপর শুভেচ্ছা জানালাম আমার ১৪ জন বন্ধুকে (চৈতী ,মুনিয়া,তিহা, তন্দ্রা, সানজানা, নোভিয়া , সোমা , বিপাশা ,সামিরা , সনি , সিহাম , অন্বিকা , পৃথা , পারসীয়া )যাদের ছাড়া আমার বিশ্ববিদ্যালয়এর জীবন অপূর্ন ।আমাদের ১৪ জনের গ্রুপটা অনেক মজার । আমরা যাই করি সব একসাথে , তা হোক একইরকম শাড়ি কিনা ,একসাথে সবাই শাড়ি পরা , একসাথে যে কোন জায়গায় যাওয়া (বইমেলা , কনসার্ট , সিনেমা ),একসাথে পহেলা বৈশাখ , ফাল্গুন এসব অনুষ্ঠান উদযাপন, যে কোন জায়গায় একসাথে খেতে যাওয়া ,একসাথে টার্ম এর বই কেনা ,......। আমরা সবাই ক্লাসে বসিও একসাথে , এমনকি অডিটোরিয়াম এ কোন অনুষ্ঠান থাকলেও পুরা এক রো আমরা আগে থেকেই বুক করে রাখি যাতে সবাই একসাথে বসতে পারি ।
এক কথায় বললে বিশ্ববিদ্যালয় এ আসার পর আমি আজ পর্যন্ত কোন কাজ একলা করি নাই । হয়ত একটা ছোট কাজে বাইরে যাবো তাও হল থেকে কাউকে নিয়া যাই জোর করে । সবচেয়ে বেশি জ্বালাই মুনিয়াকে । ও মনে হয় ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতে পারে না ।
চৈতীর মতন এত শান্ত আর ভদ্র মেয়ে আমি এর আগে দেখি নাই । তিহা খুবই চুপচাপ কিন্তু ভিতরে ভিতরে বদ কম না ।তন্দ্রা হইল বিন্দাস মানুষ খুব সহজেই সবার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায় ওর । সানজানা আর পৃথা ২ জনে খুবই ফাজিল , ওদের জোকস শুনলে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যায় । দোস্ত নোভিয়ার কথা আর নাই বললাম , ওর মতন সিরিয়াস মানুষ আমি খুব কমই দেখসি , সবকথায় অস্থির হয়ে যায় , কিন্তু মেয়ে মন্দ না ।সামিরার সাথে সেই স্কুল থেকে বন্ধুত্ব। কলেজেও একই সেকশন এ ছিলাম ।আর এখনতো একই বেঞ্চ পাশাপাশি সিট এ সেই ১-১ থেকে । বিপাশা , পারসীয়া ও সোমা এই ৩ স্টুজেসতো ফেভিকল দিয়া জোড়া লাগানো । ওকা হইল গ্রেট কার্টুনিস্ট আর ওকা-সিহাম জুটি হইল বেস্ট পাসওয়ার্ড হ্যাকার ।আর ওদের কাছ থেকে গ্রেট গ্রেট গসিপও শোনা যায় ।
এছাড়া আরো ১ জনের নাম আলাদা করে বলতে হয় সেটা হল প্লাবন ,খুবই ভাল বেহালা বাজায় আর মানুষ এর মাথা হ্যাং করে দেয় ।ওর সাথে যে ১-১ থেকে এ নিয়ে আমার কতবার ঝগড়া হইসে আল্লাহই জানে !!!! ঝগড়া মানে বাকবিতন্ডা না , মতের অমিল । এবং প্রতিবারই মনে হইসে এই শেষ , ওই ফাজিল এর সাথে আর কোনদিন কথা বলব না ।
কিন্তু আসলে শেষ মেশ ঠিকই আমাদের ঝগড়া মিটে যায় । আমার মনে হয় ৪-২ পর্যন্ত আমাদের আরো ৪/৫ বার কমপক্ষে ঝগড়া হবে ।অবশ্য এখন ও আমার সাথে আর ঝগড়া করবে না কারণ ওর ঘটকালি করার গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব এখন আমার আর সামিরার কাঁধে ।
আর সবশেষ এ আমার সবচেয়ে কাছের ৩ জন বন্ধুর কথা স্মরন করতে চাই আমার আম্মু , আমার ভাইয়া আর আমার নানু । এই ৩ জন আমার এমন কোন কথা নাই যা জানেনা । ওদের সাথে আমি আমার যে কোন কথা শেয়ার করতে পারি ।
সবশেষ এ আজকে বন্ধু দিবসের দিনে সকল বন্ধুদের জন্য এ ২টি গান --------
বন্ধু তোমায় এ গান শুনাবো ----চন্দ্রবিন্দু
বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১:১৯