দৈনিক ইত্তেফাক :- - The Daily Ittefaq
১৬ দিনেই হিন্দু থেকে মুসলমান মাত্র ১৬ দিনের ব্যবধানে হিন্দুকে মুসলমান মানিয়ে দিলো ইত্তেফাক । দেখুন নমুনা ।
ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০১৪, ৩১ আষাঢ় ১৪২১, ১৬ রমজান ১৪৩৫
হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বন্ধু কাট্রা কাছিম
মনোনেশ দাস, মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা
মুক্তাগাছায় নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা ভরাট, ঝোঁপ-ঝাড় বিনষ্ট, পানি দূষণ ও মানুষের আক্রমণে পরিবেশের বন্ধু কাট্রা কাছিম হারিয়ে যাচ্ছে। কদাচিত বাজারে ওঠা দেশি প্রজাতির কাট্রা ৪/৫শ' টাকা এবং কাছিম ৩/৪শ' টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। জানা যায়, পৃথিবীর ২৭০ প্রজাতির কাছিমের মধ্যে প্রায় ১শ'টি বিপন্ন হয়ে পড়েছে নদী, পুকুরের পানি পরিষ্কারকারী কাছিম সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণী। পৃথিবীতে ৫ হাজার ৩শ' প্রজাতির সরীসৃপের মধ্যে ৪৫ ভাগ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কাট্রা কাছিম সাপ গুইসাপ ও কুমির প্রজাতির প্রাণী। বহু দেশের মানুষ কাট্রা কাছিমের মাংস খায়।
- See more at: Click This Link
শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০১৪, ১৭ শ্রাবণ ১৪২১, ৪ শাওয়াল ১৪৩৫
মুক্তাগাছায় দুঃস্থদের ভিজিএফ কার্ড সচ্ছলদের পকেটে
এম. ইদ্রিছ আলী, মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা
মুক্তাগাছায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুস্থ পরিবারের মাঝে সরকারি সাহায্য হিসেবে বরাদ্দকৃত ৬৯ হাজার ১০৯টি ভিজিএফ কার্ডের বেশির ভাগই জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, গ্রাম্য মাতব্বরসহ সচ্ছলদের পকেটে ওঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় ৭শ মেট্রিক টন অর্থাত্ কার্ড প্রতি ১০ কেজি হারে মোট ৬৯১.০৯ মেট্রিক টন চাল নিয়ে চলেছে হরিলুট। প্রকাশ্যে বিক্রি হয়েছে কালোবাজারে। আংশিক কার্ড প্রকৃত গরীবের মাঝে বিতরণকৃত চালেও ওজনে কম দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিন বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে ভিজিএফ-এর চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে এমন তথ্য মিলেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে এবছর মুক্তাগাছায় রেকর্ড সংখ্যক মোট ৬৯ হাজার ১০৯টি পরিবারকে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে পরিবার প্রতি ১০ কেজি হারে ৬৯১.০৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করার কথা। স্থানীয় সরকারের জন প্রতিনিধি ইউপি মেম্বার, চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রকৃত সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়ন করে চাল বিতরণ করার কথা থাকলেও মুক্তাগাছায় রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে কার্ড ভাগ-বণ্টন হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে- ১০টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে বর্তমান এমপির নেতৃত্বাধীন জাপা নেতাদের ১৫শটি, সাবেক এমপি খালিদ বাবুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নেতাদের ১ হাজারটি, উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন বিএনপি নেতাদের ৫শটি করে কার্ড বিতরণের জন্য দেয়া হয়। বাকিগুলো বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের; কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুয়া তালিকা দেখিয়ে চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়। গত মঙ্গলবার সরেজমিন খেরুয়াজানী ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা গেছে- কালোবাজারিরা হাতে কার্ড নিয়ে বস্তা পেতে বসে আসে। তাদের ভাড়া করা লোক বার বার পাঠিয়ে চাল তুলে বস্তা ভরছে। কৃষ্ণবাড়ি গ্রামের আঃ রহমানের শিশু পুত্র আবু রায়হান, সেলিমের পুত্র তাওহিদ, মেহেদি হাসান, সুমন মিয়াসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে- তারা চাল উঠিয়ে দেবার জন্য কার্ড প্রতি ১০ টাকা করে পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০টি ইউনিয়নের একাধিক কালোবাজারির চাল ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের বলেন, রাত দিন ঘুরে রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে ১শ ৮০ টাকা থেকে ২শ টাকায় এক একটি কার্ড তারা কিনেছেন। একই চিত্র দেখা গেছে ১০টি ইউনিয়নে। কিছু কিছু কার্ড প্রকৃত অসচ্ছল পরিবারের লোকজন পেলেও তাদেরকে ওজনে ১০ কেজির স্থলে সাড়ে ৫ থেকে ৮ কেজির বেশি কোথাও দেয়া হয়নি বলে চাল পাওয়া একাধিক দরিদ্র ব্যক্তি জানিয়েছেন। এব্যাপারে খেরুয়াজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিপন জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাধ্যমে কার্ড বিতরণ হওয়ায় এসব ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। আমার একার পক্ষে এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব না। দুল্লা ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার রেজা আনামের বক্তব্য- এমন ঘটনা আর কখনো ঘটেনি, তার ইউনিয়নে মোট ৮ হাজারের মতো পরিবার আছে। এর মধ্যে অনেকেই এলাকায়ই থাকেন না। অর্ধেকের বেশি মানুষ সচ্ছল থাকায় তারা এমন সাহায্য নিতে রাজি নন। এখানে কার্ড আছে প্রায় ৭ হাজার। সে হিসেবে কিছুটা সচ্ছল পরিবারেও কার্ড পাবার কথা; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- অনেক প্রকৃত গরীবই কার্ড পাননি।
জাতীয় সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তির সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে এবার এতো বেশি সংখ্যক ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ হয়েছে। আমার দলের নেতাদের কার্ড দেয়ার কথা বলা হলেও মূলত তাদেরকে প্রকৃত দুস্থদের একটি তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের দ্বারা কোন অনিয়ম হয়নি। তবে কালো বাজারে চালের কার্ড বিক্রির অভিযোগ লোকমুখে শুনেছেন উল্লেখ করে বলেন, দুস্থ গরীবদের সামান্য চাল আত্মসাত্ কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান এ এস এম জাকারিয়া হারুন বলেন, তিনি বিরোধী দলের রাজনীতি করেন, তার নেতাকর্মীদের মাধ্যমে সামান্য যে কিছু কার্ড বিতরণ করা হয়েছে তাতে কোন অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন। অনিয়ম হলে হতেও পারে তবে তার জন্য তিনি বা তার দলের কোন লোক কিছুতেই সম্পৃক্ত নেই। সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব কে এম খালিদ বাবুকে মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার গরীব দুস্থ মানুষ।