নাটকের ভূমিকা:
আমি চাকুরী খুঁজছি, চাকুরী শিকারের লেবাছে। আমি এই খোঁজে অসন্মানিত বোধ করি না, (করলে চলে না)। সাদা কলার পেশাজীবিদের দলে ঢুকবার জন্য ছোট বেলা থেকেই লড়াইরত, আমি না চাইলেও ব্যবস্থপনা এভাবেই গঠিত, এভাবেই ঠেলে দেয়া। প্রথম শ্রেণীগুলোর জোর আর আগের মত নেই (আসলে প্রায় সব কালেই এটা মীথ ছিল বলে মনে হয়)। ব্লগের সাইবার এ্যাকটিভিজমে লুকাই।
চাকুরী সন্ধান আর নেটওয়ার্কিং এর জন্য সাইবার স্পেসের ব্যবহার করছি। যৎকিঞ্চিত মধ্যবিত্তীয় সাহিত্য চর্চা আর না বলা কথা আর একটু নেটওয়ার্কিং আর একটু নিজ নিজ ভাবা আর একটু শক্তিশালী শক্তিশালী হয়ে ওঠা। আর একটু নতুন মাধ্যমে জায়গা তৈরী আর একটু জায়গা তৈরী নিয়ে দলবাজী মারামারি। আর একটু বহি:প্রকাশ আর অনেকটুকু লুকিয়ে রাখা, আর একটু মধ্যবিত্ত মান ইজ্জত, আর একটু মধ্যবিত্তের বাড়তি আয়, নেটওয়ার্কিং, সাহিত্য প্রতিভা প্রকাশ, বিজ্ঞাপন, রাজনৈতিক মতাদর্শের তর্কাতর্কির পরিসর। আর একটু আড্ডা আর একটু নাস্তিক আস্তিক আর একটু জীবন বাঁচানো আর একটু প্রাপ্তি আর একটু শ্বাশত (ব্লগীয় সমাবেশে এখন পর্যন্ত সত্যিকার অর্জন বলে মানি, প্রাপ্তি এবং ব্লগীয় সমাবেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পরাজয় শ্বাশত, কার্যকর চেতনানাশক হিসেবে কাজ করেছে। তবে উদ্যমী মানুষের শ্বাশত বিষয়ক অক্লান্ত শ্রমকে বিনম্র শ্রদ্ধা)। এই তো।
সাইবার স্পেসে ইয়াহুতে কথা হচ্ছে চাকুরী বিষয়ে এক বন্ধুর সাথে।
চরিত্র ১: আমি।
চরিত্র ২: অন্বেষা।
প্রথম দৃশ্য
আমি: কি খবর?
অন্বেষা হ্যাজ সাইন্ড ব্যাক ইন।
অন্বেষা: ভালো।
আমি: আচ্ছা।
আমি: কই থাকো?
আমি: নেট এ পাই না।
অন্বেষা: তোমার.... কি?
আমি: আমার কি?
আমি: তোমার পুরো নাম আর ডেজিগনেশন দাও তো সিভিতে দেব।
অন্বেষা: আরে বইলো না।
অন্বেষা: বাড়ীতে গেস্ট।
আমি: মানে যদি তোমার আপত্তি না থাকে।
অন্বেষা: ......পুরো নাম।
অন্বেষা:........পদবী।
অন্বেষা:........ অফিস।
আমি: অফিসের ঠিকানা কি লাগবে?
অন্বেষা: ইমেইল দাও।
অন্বেষা: কোন সমস্যা নাই।(সিভির রেফারার হিসেবে)।
আমি: ডিটেইল অফিস ঠিকানা লাগে তো।
অন্বেষা: নাহ।
অন্বেষা: কি জন্য?
অন্বেষা: সিভি পাঠাবা আমাকে?
আমি: আমি জানিনা।
আমি: পাঠাবো নাকি?
আমি: সিভি?
অন্বেষা: কি করবা তবে?
অন্বেষা: আমার রেফারেন্স?
আমি: একটা জায়গা থেকে সুযোগ এসেছে সেখানে পাঠাবো। (এটাও আরেক আত্মীয় রেফার করেছে)।
অন্বেষা: ওকে।
অন্বেষা: লেখ।
আমি: ভাবলাম তোমার রেফারেন্স দেই। (একটু বিনয় আর বন্ধুত্বমূলক অধিকার বোধের চতুর সংমিশ্রণে)।
আমি: দাঁড়াও তোমাকেও একটা পাঠাই।
অন্বেষা: অফিসের বিস্তারিত ঠিকানা।
...........................................
.........................................
অন্বেষা: সরি, পোষ্ট কোড ভুল হয়েছে।
আমি: আচ্ছা ব্যাপারস না।
আমি: থ্যাংকস।
আমি: আর তুমি বলে নিজেই আমাকে চাকুরী দাও। আমার সেই চাকুরীর কি হল?
অন্বেষা: তাই?
আমি: কি তাই?
অন্বেষা: ব্যপার না।
দ্বিতীয় দৃশ্য:
আমি: এখন বল আমাকে কী চাকুরী দিবা?
অন্বেষা: হ্যা দিব।
অন্বেষা: আমার বডি গার্ড এর।
অন্বেষা: চলবে?
আমি: বেতন কত দিবা?
আমি: নাকি দিবা না?
অন্বেষা: পেটে ভাতে, লগে ম্যাডামের সঙ্গ।
আমি: বাহ! অনেক ভাল।
আমি: বেশ এপ্যিলিং।
আমি: আমার কপাল ফিরে যাবে।
অন্বেষা: তাই! না?
আমি: আবার জিগ্গেস।
আমি: একজন ইন্টেলেকচুয়াল কবি ভৃত্য থুক্কু বডি গার্ড।
অন্বেষা: হা হা হা হা।
আমি: হা হা হা।
আমি: তোমার জন্য সিভি পাঠালাম।
আমি: দারোয়ান পদের জন্য।
অন্বেষা: ওকে।
অন্বেষা: গুড, হয়ে যাবে।
তৃতীয় দৃশ্য:
যে ফাইলটি আপনি পাঠাতে চাইছেন তা যাচ্ছে না। সম্ভবত অন্য কোন প্রোগ্রাম সেটা ব্যবহার করছে।
আপনি একটি ফাইল অন্বেষাকে পাঠিয়েছেন।
সিভি আমার.ডক।
আমি: ম্যাডাম কি পাইছেন?
অন্বেষা: জ্বী।
অন্বেষা: পড়িনি।
অন্বেষা: কাল পড়ব।
অন্বেষা: কাজ করতেসি।
আমি: নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই।
আমি: না পড়লেও হবে......শুধু চাকুরীটা দিয়েন।
আমি: হা হা হা হা আপনার একান্ত বাধ্যগত।
অন্বেষা: আপনার সাহস কত।
অন্বেষা: মালিকের সাথে কিভাবে কথা বলে জানেন না?
আমি: জ্বী ম্যাডাম সরি।
আমি: মালিকের কাছে মেরুদন্ড থাকতে হয় না।
অন্বেষা: জ্বী।
অন্বেষা: বুঝো তো।
আমি: ম্যাডাম আপনিও তো কারো চাকর আপনারো কি মেরুদন্ড নাই?
আমি: আপনি কি এজন্য সবসময় কষ্টে থাকেন, রেগে থাকেন?
আমি: ম্যাডাম আমি কি বেশি প্রশ্ন করছি?
অন্বেষা: জ্বী না।
অন্বেষা: ঠিক করেছেন।
আমি: আমি যদি আপনাকে না বুঝি তাহলে আমি কিভাবে আপনার বডিগার্ড হব?
অন্বেষা: ঠিক।
আমি: ম্যাডাম আমি কি পরীক্ষায় পাশ করেছি?
অন্বেষা: জ্বী।
আমি: ম্যাডাম আমার চাকুরীটা কি হবে?
অন্বেষা: করেছেন।
অন্বেষা: তবে চুপ থাকবেন।
অন্বেষা: যখন বডি, গার্ড করবেন।
আমি: জ্বী ম্যাডাম এই নি:শব্দের মানে আমি বুঝি।
অন্বেষা: কি?
আমি: আমার কখন চুপ থাকা উচিৎ।
আমি: আর কখন বলা উচিৎ।
আমি: ম্যাডাম আমি কি আপনার স্নেহ পাব?
আমি: যদি আমি চুপ থাকি?
অন্বেষা: জ্বী।
অন্বেষা: নিশ্চয়ই।
আমি: ম্যাডাম আমি কি আপনার স্পর্শ পাব, যদি আমি আপনার মত চলি?
অন্বেষা: কত বড় স্পর্ধা।!
আমি: জ্বী ম্যাডাম।
আমি: আপনি কি এরকম স্পর্ধার পুরুষকে পছন্দ করেন না?
অন্বেষা: করি।
অন্বেষা: তবে আপনি না করলে খুশী হব।
আমি: আপনি কি একরকম স্পর্ধার পুরুষকে সারা জীবন ধরে খোঁজেন নি?
অন্বেষা: (মাইর)
আমি: (আহা নাটক তো মাত্র জমাইসি)
আমি: (তুমি চরিত্রে থাকো)
অন্বেষা: ওকে
আমি: যা বলছিলাম ম্যাডাম, এই পুরুষ কি আপনাকে উত্তেজিত করে?
আমি: আপনি আমাকে অনেকখানি প্রশ্রয় দিয়েছেন ম্যাডাম আর একটু কি দেবেন?
অন্বেষা: জ্বী না।
অন্বেষা: বদমায়েশ।
আমি: আমি অনেকদিন মানুষ হই না। আমাকে ভৃত্য করবার আগে আমাকে এটুকু সুযোগ কি দেবেন?
অন্বেষা: চুপ।
আমি: ম্যাডাম আমাকে একবার, এই শেষবারের মত মানুষ হবার সুযোগটা দিন।
আমি: আমি অনুনয় করছি।
অন্বেষা: জ্বী না।
আমি: কেন ম্যাডাম কেন?
আমি: একজন পাহারাদারের জন্য এটা কি অন্যায়?
অন্বেষা: পাহারাদার না।
অন্বেষা: যে কারোর জন্য অন্যায়।
আমি : কেন ম্যাডাম কেন? আমি তুচ্ছ মানুষ।
অন্বেষা: আপনি পুরুষ মানুষ।
অন্বেষা: পুরো পুরুষ।
আমি: আমাকে ভুল বুঝবেন না।
অন্বেষা: জ্বী।
আমি: ভৃত্যরা কি মানুষ হয় ম্যাডাম?
অন্বেষা: ভৃত্য ম্যাডামকে ভয় পাও।
আমি: ম্যাডাম আমি ভয়ে ভেঙ্গে পড়ছি তা কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন না?
আমি: আমি আমার ভয় আড়াল করছি না কিন্তু আপনি আমার ভয়ে শংকিত হচ্ছেন কেন?
আমি: আপনি কি আমার মতই ভীত?
আমি: প্লিজ আমার প্রশ্নের উত্তর দিন.......
আমি: দয়া করে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন........
ইয়াহু মেসেজ: সরি যে ব্যক্তির সাথে আপনি কথা বলছিলেন তিনি সাইন আউট করেছেন।
এটা গল্প নয় আমার এই মুহূর্তের বাস্তবতা। ফলে বাস্তবতা যে নিজেও গল্পীয় তা বোধহয় বলা যেতে পারে। ফলে এটা লিখে আমার যে প্রকাশ তা কি ব্লগীয় এ্যাক্টিভিজম? নাকি মধ্যবিত্তের খামতি প্রকাশ মাত্র? এ্যক্টিভিজম কি রকম, কি প্রকারে, কিভাবে সংঘটিত ও সংগঠিত হতে পারে?
সাদা কলার পেশাজীবি
ফাহমিদুলক হকের পোষ্ট
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:২৫