somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানগর ২ ও ওসি হারুন: ব্যক্তি হিরোর ক্ষীণ আশাবাদ দিয়ে সামস্টিক শক্তিকে হজম করার ফ্যাসিস্ট ও নিওলিবারেল অভিশাপ। (এর বাইরে আশফাকের আর কিছু করারই কি ছিল?)

২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৩:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোবাইলেই ভাঙ্গা ভাঙ্গা নেট দিয়ে মহানগর ২ দেখলাম খুব মনোযোগ দিয়েই। দারুণ উপভোগ্য লাগলো। প্রায় বারো ঘন্টার জার্নি শেষে এখন বাসায় ফিরলাম। আক্ষরিক অর্থে এখনই। কাপড় না পাল্টে, কেবল লাগেজ বাসায় উঠিয়ে কম্পিউটারের সামনে বসলাম। মহানগর ২ সম্পর্কে কিছু লেখার তাগিদে সরাসরি লিখতে বসলাম। আশফাক নিপূণকে এবং পুরো টিম করে অভিনন্দন। এ বিষয়ে ব্যস এতটুকুই।

আমার নিজের সমালোচোনা আমার উপভোগ্যতা নিয়েই। কেন এত উপভোগ করলাম আমি? কেন আমি এত যুক্ত বোধ করলাম ওসি হারুনের সাথে? যেই ব্যক্তি হিরোকে আমি চাই সিস্টেমের কোণায় কোণায় তাকে পর্দায় দেখতে পারার আনন্দ? একটা সাময়িক গণতান্ত্রিক সুখ? কি সম্পর্ক এর সাথে ফ্যাসিজমের? এই প্রশ্নগুলো মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতেই থাকলো। ডাইরেক্টরের সাহসের বিষয়টা নিয়ে বাহাস করতে চাইছেন কেউ কেউ আমি মনে করি সেই “সাহসের” তালিটুকু তার প্রাপ্য। বিশেষ করে এই সময়ে এসে। প্রবল সেন্সরের এবং আত্ম সেন্সরের এই কালে।
আরেকজনের ব্যখ্যায় দেখলাম তিনি ওটিটি-র স্বর্ণযুগের কথা বলছেন, “ব্লগের স্বর্ণ যুগের” একজন হিসেবে সেখানেও কিছুটা কানেক্ট করতে পারলাম।

তবে অভিনেতা, কলাকূশলী, বা ডাইরেকশনের বাইরে না গেলে আমার মত করে জিনিসটা বোঝা মনে হয় হবে না।

১. প্রথমত মহানগর ২ এর বাস্তব ঘটনাজনিত যোগাযোগে যে উচ্ছাস এবং পরিণতি সেটা ভীষণ অবদমিত এক সময়েরই ইঙ্গিত দেয়।
২. কেন তাহলে শনিবারের বিকেল আটকা? কেন তাহলে শামসুজ্জামান আটক হন? সেই আটক হওয়াটাকে আরো নাটকীয় করে তোলা হয়?

আমার মনে হয় পুলিশের ইমেজ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এসবের গণতান্ত্রিক ইমেজের জন্য যে রাষ্ট্রীয় নাটকের দরকার হয় সেসবের জন্য এসব কন্টেন্ট নিয়ে উচ্ছাসের এক লহমা ঈদ বিনোদনে একরকমের গণতান্ত্রিক আশা তৈরি করে। আবার এটারও ইঙ্গিত করে যে কোণায় কোণায় ওসি হারুনের মত চরিত্ররা আছেন। কিন্তু আদৌ কি আছেন? থাকতে পারছেন? থাকলে কতদূর তার সীমানা? যদিও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে ফ্যাসিজম কায়েমে এই বাহিনীর সবচেয়ে অপব্যবহার হয়েছে এবং স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। একটা ভীষণ নির্ভরশীল সিম্বায়োটিক সম্পর্ক তৈরি করা হয়েছে। আমি নিশ্চিত ডাইরেক্টর সে বিষয়ে ভীষণ ওয়াকিবহাল এবং সেগুলোকে এম্বিয়েন্ট সাউন্ড হিসেবেই রেখেছেন। ফলে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নয় বা প্রোজেক্ট হিসেবে উনাকে আমি বিচার করতে চাই না। তবে ফ্যাসিজমের অর্ন্তনীহিত স্রোতধারা যা আমাদের অবচেতনকে গ্রাস করে রেখেছে তাকে আমাদের দেখতে পারতে হবে।
আয়না ঘরের অস্তিত্ব নিয়ে সিনেমা বানালেই, একস্ট্রা জুডিশিয়াল কিলিং-কে হাজির করলেই ফ্যাসিজমকে বোঝা যাবে তা নয় (যদিও কাজটুকু ভীষণ প্রশংসার)। আমি মনে করি ফ্যাসিজম আশফাককে ক্রমাগতভাবে ব্যক্তির হিরোইজমের দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। আমার মনে হয় ওসি হারুনের বদলে যদি দেখানো হত ছাত্র সমাজ দলে দলে এসে থানা ঘেরাও করে সেই ফাসিয়ে দেয়া মাসুমকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে তাহলেই ওটিটি এটাকে দেখাতে দিতো না।
আমি মনে করি এইসব ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে যেসব বাস্তবিক সমাধান তার ঈঙ্গিতমাত্র থাকলেও এই সিরিজ আরো বিরুদ্ধতার মুখোমুখি হোত। এটা হল সেই মেলাংকলি যা থ্রীলারের উত্তেজনা দেয় এবং হিরোও তৈরি করে। কিন্তু আমাদের এখন একক হিরোর দরকার নেই। আমাদের দরকার বোকাবোকা সামষ্টিক মানুষ যারা নিজেরা বিভক্ত না হয়ে সরাসরি ফ্যাসিজেমর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৩:১০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×