
আমাদের সমাজের ভিত্তি আজ পুঁজিবাদ, যেখানে ছোটবেলা থেকেই শেখানো হয়, "টাকার জন্য কাজ করো, যাতে কিনতে পারো।" এই দর্শন মধ্য-মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মাঝে গভীরভাবে প্রোথিত। কিন্তু এর ফলাফল কী? পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শিকড় আরও শক্তিশালী হয়, আর শ্রমজীবী মানুষ তাদের শৃঙ্খলেই আবদ্ধ থাকে।
রাষ্ট্র আজ পুঁজিপতিদের পাহারাদার, আর আমরা? আমরা রাষ্ট্রকে অর্থের যোগান দিই, আর রাষ্ট্র পুঁজিবাদী শ্রেণিকে নিরাপত্তা দেয়। আমাদের শ্রমজীবী মানুষ শুধু সামান্য সুরক্ষায় বেঁচে থাকে, যাতে তারা এই ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ না করে।
তবে, এই পরিস্থিতিতে কিছু বিপ্লবী বন্ধুদের দেখি, যারা মশাল হাতে শাহবাগের মিছিলে দাঁড়ায়, পাঠচক্রে তাত্ত্বিক আলোচনা করে। তাদের স্বপ্ন সমাজতন্ত্র, কিন্তু তাদের বাস্তবতা কতটা মজবুত? বিপ্লব কি শুধুই আলোচনায় আর মিছিলের শ্লোগানে সম্ভব?
শ্রমজীবী শ্রেণি যেখানে আপনাদের আন্দোলনে নেই, সেখানে এই সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন কি টিকে থাকবে? পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শ্রমিকদের মুক্ত না করলে, তারা কি কখনো এই বিপ্লবের পাশে দাঁড়াবে? একদিন এই শ্রমিকরাই উচ্চমধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত হয়ে পুঁজিবাদী শাসকের ভূমিকা নেবে।
আপনাদের "বিপ্লব" কি আদৌ সমাজ বদলাবে, নাকি এটাও একসময় পুঁজিবাদী ব্যবস্থারই অংশ হয়ে যাবে? পাঠচক্র আর শাহবাগের মিছিল কি শ্রমজীবী মানুষের জীবনে সত্যিকার পরিবর্তন আনবে?
যদি সত্যিকারের পরিবর্তন চান, তবে এই ভ্রান্ত পথ ছেড়ে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের মন জয় করতে হবে, তাদের সংগ্রামের সাথে নিজের সংগ্রাম মেলাতে হবে। পুঁজিবাদী সমাজের ছায়াতলে বসে এসথেটিক বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে কখনো সমাজতান্ত্রিক মুক্তি সম্ভব নয়। কাজ শুরু করতে হবে শিকড় থেকে, শ্রমজীবী মানুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। তবেই একদিন সমাজ বদলাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




