somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার অবশ অনুভূতির লেখা…

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের স্বর্ণযুগের কর্ণধার ব্যান্ডগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত ও হতাশ। :(

আমরা বড় হয়েছি বাংলা রক সঙ্গীতের এক রেনেসাঁর যুগে। ছোটবেলায় বড়ভাইদের কাছে শুনেছি Miles, LRB, ARK, Nogor Baul O James, সোলস, Warfaze। টিনএজ লাইফে পেলাম Artcell, ব্ল্যাক, Shironamhin, Aurthohin। কনসার্টে গানের তালে তালে মাথা ঝাঁকানো, বন্ধুদের আড্ডায় গলা মিলানো কিংবা বিরহের মূহূর্তে রাতের আঁধারে সাউন্ডবক্স বা ইয়ারফোনে পিনিক উঠানো -সবকিছুই এই ব্যান্ডগুলোকে ঘিরে। এদের গান শুনেই বড় হয়েছি। জীবনের অনেক স্মৃতি'র সাথে জড়িয়ে আছে এরা। তাঁদের গানের সুর ধরেই একে একে পরিচয় হয়েছে Metallica, Pink Floyd, Iron Maiden কিংবা Coldplay'র সাথে। এজন্য হতাশ লাগে, যখন দেখি ব্যাক্তিগত কারণের পাল্লায় পড়ে ব্যান্ডগুলো ধীরে ধীরে মুষড়ে পড়ে। কিছুদিন ধরে ঘটে যাওয়া 'শিরোনামহীন' নিয়ে তো তুহিন ভাই, জিয়া ভাইদের মাঝে কনফ্লিক্ট কারো অজানা নয়। গত পরশু আবার দেখলাম আর্টসেলের লিংকন দার স্ত্রী, আর এরশাদ ভাইয়ের স্ত্রী’র মাঝে রীতিমত কামড়াকামড়ি চলছে পাবলিকলি। 'আর্টসেল' নিয়ে এমনিতেই দুর্বলতা কাজ করে। ‘অনিকেত প্রান্তর’ এর মত মাস্টারপিস উপহার দিয়ে যাওয়া ব্যান্ডটি প্রায় ১০ বছর যাবৎ বলার মতন নতুন কিছুই দিতে পারছে না। এর মাঝেই ভোকাল লিংকন দা’র কণ্ঠের অবস্থাও ভালো না। তার উপর কিছুদিন আগে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাতে গিয়ে 'বৃষ্টি ভেজা রাতে' গানটির মানটাই ভিজিয়ে দিলেন। এদিকে একই কাহিনী করলেন মাইলসের শাফিন আহমেদ। উনার মিউজিক ভিডিওটা নিয়ে বলার কিছুই নেই আসলে। 'আর্ক' ভেঙ্গেছে সেই আগেই, 'দলছুট'ও। 'ব্ল্যাক'এর তাহসান তো গেলেনই, কিছুদিন পর জন কবিরও গেলেন ব্যান্ড ছেড়ে। অবশ্য মোটের উপর লাভ Indalo-কে পেলাম। ‘অর্থহীন’ ভাঙল। রাফা ভাই চলে গেলেন। বেসবাবা নিজের একটার পর একটা অসুখের উপর টিকে আছেন। আর তাঁর সাথে আইয়ুব বাচ্চু’র দ্বন্দ্বও তো ওপেন সিক্রেট। অন্য প্রিয় ব্যান্ড 'ওয়ারফেয' এর ট্র্যাডিশনই তো, ভাঙ্গা-গড়া-ধরা-ছাড়া-ভোকাল আমদানি-রপ্তানি!!


কী আর বলব!! :(


এর মাঝেও সুখের কথা এই যে, বাংলা রক গানের ধারা থেমে নেই। বেশ কিছু ভালো ব্যান্ডদল আছে যারা ভাল মানের গান দিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। কিন্তু, এদের গান কি আর নস্টালজিক করে তুলে কৈশোরের ব্যান্ডগুলো মত? অনেকে হয়তো ভিন্নমত পোষণ করবেন হয়তো, কিন্তু, আমার নিজের কাছে সেসব ব্যান্ডের আবেদন অন্য স্থানে। ‘অবশ অনুভূতির দেয়াল’, ‘ব্লু জ অ্যান্ড রোদ’, 'অদ্ভুত সেই ছেলেটি' কিংবা ‘হাসিমুখ’ শুনে এই যৌবনেও যে কিশোরমনের মত আবেগ চলে আসে- তার কি কোন বিকল্প হয়? একটি ব্যান্ডদল গড়ে তুললে আসলে কিছুটা ম্যাচিউরিটির পরিচয় দেয়া উচিত। ইচ্ছে হল চলে গেলাম, ব্যান্ডদল ভেঙ্গে দিলাম- এই মনোভাব কেন? তাঁদের কি ভক্তদের কথা ভাবা উচিত না? ভক্তদের দিকে তাকিয়ে অনেক পার্সোনাল বিষয় তাদের কি কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়া প্রয়োজন না? এটা যেমন ঠিক যে, তুহিন ভাই একা কোন 'শিরোনামহীন' ব্যান্ড না। কিন্তু এটাও ঠিক, তুহিন ভাইয়ের কন্ঠ ছাড়া শিরোনামহীনের 'বন্ধ জানালা' কিংবা 'ইচ্ছেঘুড়ি' তার আবেদন হারাবে। আমার খারাপ লাগে এই ভেবে যে, একনিষ্ঠ ফ্যানবেসের কথা উনারা ভাবেন না কী করে? ব্যক্তিগত মান-অভিমান, দ্বন্দ্ব বা রেষারষিই কি সব? আমরা কি কেউ নই?


আমাদের আশা-আকাঙ্খা-চাওয়া-পাওয়ার একটা মূল্য আছে। আমাদের প্রতি তাদের কিছুটা রিস্পন্সিবিলিটি আছে। আমরা আমাদের শৈশব-কৈশোরের প্রিয় ব্যান্ডগুলো থেকে আরো কিছু ভাল বাংলা রক গান শুনতে চাই। আরো কিছু 'ফিরিয়ে দাও', 'ধূসর সময়', 'ক্যাফেটেরিয়া', 'চাইতেই পারো' কিংবা 'অবাক ভালবাসা' শুনতে চাই।

খুব বেশি চাওয়া হয়ে গেল?

ভাঙ্গা-গড়া, মিলন-বিরহের এই মেলোড্রামা আর ভাললাগে না।
“আমরা যে ভাই আমজনতা, একটু ক্ষান্ত দাও…”


১২ ১০ ১৭

ফেসবুকে লিঙ্কঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×