কোন অন্ধকার জনপথে বাস করছি আমরা।এটা কি আমার দেশ!!গুটি গুটি পায়ে পিছনে যাচ্ছিলাম আমরা,হঠাৎ করে মনে হচ্ছে দৌড় শুরু করেছি পিছন দিকে।পিছন দিকে দৌড় দিলে যা হয়,মুখ থুবরে পরছে সব কিছু। কেন পিছনে দৌড় দিচ্ছি! আমাদের মত রাজনৈতিক সচেতন কোন জাতি তো এই উপমহাদেশে নাই!!
আমার কাছে মনে হয় আমাদের মুল সমস্যা হচ্ছে শিক্ষা।আমাদের দেশে চাঁদে মানুষ দেখা যায়,এই নিয়ে মানুষও মারা যায়!।মফস্বল এলাকায় এখনও কম্পিউটার বলতে কম্পজ করাকে বুঝে।এর আর কোন ব্যাবহার তাদের জানা নেই(না,আছে,সিনামা আর গান শোনা যায়)এদের কাছে অন্য যে কারো বক্তব্যর থেকে কাঠ মোল্লার বক্তব্য বেশি প্রিয়।শহরের শিক্ষিত সমাজের বড় একটা অংশ শিক্ষিত শুধু মাত্র সার্টিফিকেট দিয়ে।শিক্ষার প্রকৃত অর্থের ধার কাছ দিয়ে কেউ নাই।জ্ঞানের আলো কি জিনিস এরা এই জীবনে বুঝে নাই।এদের কাছে শিক্ষা মানে হচ্ছে ভাল চাকরির একটা দরকারি উপাদান।তাই এদের ভিতরে চেতনা বলে কোন জিনিস তৈরি হয়নি।এদের দৃষ্টি নিজের বউ বাচ্চা পরিবার থেকে বেশি দূর যেতে পারে না।তাই রক্ততাত অভিজিত রায় মাটিতে পরে থাকে এই নির্জীব প্রাণীদের কোন বিকার হয় না।কারন তাদের মাথায় তখন বাড়ি ফিরে ইলিশ মাছের ঝোল খেয়ে বউ কে নিয়ে ঘুমানর চিন্তা।বাদাম খেতে খেতে একজন মানুষ কাতরাচ্ছে দেখা তারপর সোজা বাড়ি ফেরা।মত প্রকাশ কি জিনিস,খায় না মাথায় দেয় তাও কেও জানে না,আরও খারাপ হচ্ছে জানতে চায়ও না।শুধু যে ব্লগার বা মুক্তমনের মানুষ মারা যাচ্ছে আর তার প্রতিবাদ করছে না তা না,এরা কোন কিছুরই প্রতিবাদ করতে জানে না।মায়ের পেটে লাথি মেরে বাচ্চা মেরে ফেলছে সরকার দলের এক অতি ক্ষুদ্র নেতা,কোন বিকার নাই কারো।সমাজের আরেকটা অংশ আছে দেশে, তারা যে দেশের প্রাণী বোঝার কোন উপায় নাই।এরা সমাজের কোন অংশে বাস করে আমার জায়গা থেকে বোঝারও উপায় নাই।কারন সাধারন মানুষ যে সব সামাজিক উৎসবে আসে তাদের সেখানে দেখা যায় না।একুশে ফেব্রুয়ারিতে দেখা যায় না,হে ফেস্টিভাল,পাঁচ তারা হোটেলের নিউ ইয়ার পার্টিতে দেখা যায়!!দেশের কে কোথায় কি ভাবে মারা গেল এতে তাদের বিন্দু মাত্র কিছু আসে যায় না।মদ খেয়ে গাড়ী চালিয়ে মানুষ মারার পর থানায় যাওয়ার পথে এই শ্রেণীর কোন কোন প্রাণী সেলফি তোলার মানসিকতা রাখে!!সাধারন থেকে এরা অনেক উপরে তাই চালের কেজি ২০০ টাকা হলেও এরা জানবে না কোনদিন!!মূর্খ কাঠ মোল্লা আর এর মাঝে কোন পার্থক্য নাই আসলে।দুই জনই নিজেকে নিয়ে আছে।
সমাজের অবক্ষয় শুরু হলে সবার আগে যাদের বোঝার কথা বাংলাদেশে তারা হচ্ছে সব চেয়ে উদাসিন! এরা কিন্তু শিক্ষিত,তথাকথিত চেতনাধারিও!! এরা কি দিয়ে তৈরি আল্লাই জানে! প্রকাশক খুন হয় এদের কাও কে একটা টু শব্দ করতে দেখা যায় না পাছে তার ইমেজের উপরে আচর পরে!!
আমাদের শিক্ষা পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।মত প্রকাশ কেন গুরুত্বপূর্ণ তা আমাদের শিক্ষাক্রমে থাকতে হবে।আরেকজনের বিশ্বাস কে মূল্যায়ন করার ব্যাপারে পরিষ্কার বক্তব্য থাকতে হবে।অন্য ধর্মের মানুষজনও মুসলমানদের মতই মানুষ তা আমাদের পাঠ্য বইয়ে থাকতে হবে(তারা যে খাবারে গোবর মিশিয়ে রান্না করে না তা আমাদের পরিবার থেকে বলতে হবে!! )। শিক্ষার শুরুতেই বোঝাতে হবে শিক্ষা অর্জন দরকার জ্ঞান অর্জনের জন্য চাকরির জন্য না।নিচে থেকে শুরু না করলে চলবে না।
হয়ত স্বপ্নের বাংলাদেশ সম্ভব না কিন্তু এমন এক বাংলাদেশ পাওয়া খুবই সম্ভব যেখানে যে কেউ তার মনের কথাটা বলতে পারবে,যেখানে অন্তত রাজাকারের বিচার চাওয়ার জন্য রাস্তায় নামতে হবে না,যেখানে টাকা আছে বলে যা ইচ্ছা তাই করার লাইসেন্স কেউ পাবে না,যেখানে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত একটা প্রজন্ম দেশের হাল ধরে রাখবে।আমার মনে হয় এমন কোন অসম্ভব না এই বাংলাদেশ গড়ে তোলা।