somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন তরুনের একটি আধুনিক মৃত্যু চিন্তা

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিছানায় শুয়ে ছিলাম। ভাল মন্দ, বিশ্ব জগত, আলো অন্ধকার নিয়ে উচ্চ মর্গের চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ বুকে তীব্র ব্যাথা অনুভব করলাম। দেখি একটা কালো তীর এসে বুকে লেগেছে। তীব্র ব্যাথার মাঝে খেয়াল করলাম লম্বা একটা লাঠির মাথায় কুঠারের মত কি জেনো লাগানো এবং তা নিয়ে একজন কালো আলখাল্লা পড়া ব্যাক্তি খোলা দরজা দিয়ে এসে ঘরে ঢুকছে। আমি কিছু জিজ্ঞাসে আগেই তিনি বললেন, সময় শেষ, চলে যেতে হবে!
আমাকে দ্বিতীয় বার বলতে হলো না কিছু, আমি বুঝে গেলাম উনি কি বলছেন, কিসের সময় শেষ আর কোথায় যেতে হবে।আমি ব্যাথায় কাতরাতে কাতরাতে জিজ্ঞাস করলাম, একটুও সময় নাই? তিনি বললেন, হুম, আছে তো! আমি আমার যন্ত্রপাতি গোছাতে গোছাতে যতক্ষণ লাগে, ঠিক ততক্ষন। আমি হাচরে পাছরে উঠলাম শুয়া থেকে। দিশেহারার মত কিছু একটা খুঁজছি, কি খুঁজছি প্রথমে নিজেই বুঝতে পারছিলাম না। হাতে ল্যাপটপটা ঠেকতেই বুঝলাম, এটাকেই খুজছিলাম মনে মনে। ল্যাপটপ খুলে দ্রুত ক্রোম ওপেন করলাম। তারপরেই মনে হলো আমার মোবাইল লাগবে। ব্রডব্রেন্ড কানেকশন নাই বাসায়, এ কথা মনে হতেই আরও শত কথা মনে পরে গেলো, কেন নাই, কবে থেকে নাই…. এখন বুঝতেছিনা নেট ছাড়া কি হিস্ট্রি ক্লিয়ার করা যাবে ব্রাউজারের? মাথা ঘুরছে প্রবল ভাবে এর মধ্যে মোবাইলটাকেও পেয়ে গেলাম। হট স্পট অন করে দ্রুত হিস্ট্রি ক্লিয়ার করে দিলাম একদম বিগেইনিং থেকে। একটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলব ফেলব অবস্থায় আবার মাথা চক্কর দিতে শুরু করে দিল। মাই কম্পিউটার ওপেন করতে করতে আড় চোখে ভদ্রলোক কে খেয়াল করলাম। দেখি তিনি কি জানি কতগুল কাগজ পত্র নিয়ে ব্যস্ত। আমি তাকাতেই তিনি তিনি বললেন আপনি সুমন তো? আমি বললাম জি, বলল হাটখোলার সুমন? আমি আবার বললাম জী। তিনি বললেন কই কাজ শেষ? আমি আর্তস্বরে কাঁতরে উঠলাম, বললাম না, আরেকটু। তিনি হাত দিয়ে তাড়াতাড়ির ইশারা দিলেন, আমি আবার ঝাপিয়ে পড়লাম। মাই কম্পিউটার থেকে প্রোগ্রাম ফাইলে চলে গেলাম তারপর মনে হলো ফোল্ডার লক করা, খুলে তারপরে কাজ শেষ করতে হবে। নিজের উপরে মেজাজ হারাচ্ছি কয়েকবার করে, হাত পা কাঁপছে, হ্যাঁ, ফোল্ডার ওপেন হয়েছে এবার কন্ট্রোল এ তারপরেই শিফট ডিলেট।আহ! শান্তি। চোখের সামনে দিয়ে ফাইল গুলো ডিলিট হয়ে যাচ্ছে। কত জায়গা থেকে কত ভাবে সংগ্রহ করেছিলাম এগুলো, কত স্মৃতি!! বিশাল কালেকশন এক সময় ফিনিশ হয়ে গেলো। আর তখনই তিনি বলে উঠলেন, আচ্ছা, আমার যেন কেন জানি মনে হচ্ছে আমি একটা ভুল করে ফেলছি। মানে এই দিকে স্বপন নামে কেউ আছে? আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম, মানে? কি ভুল করেছেন আপনি? স্বপন তো আছেই, পাসের বাসায়ই তো থাকে। উনি বললেন, আসলে আমি একটু কনফিউজড হয়ে গেছিলাম, আমি আসলে স্বপন কে নিতে আসছি। আমি উনার উপরে ঝাপায়া পরব কিনা ভাবছি আবার নিশ্চিত চলে যাওয়া থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য একটু স্বস্তিও অনুভব করছি।পরক্ষনেই মনে হলো স্বপনের কাছে আমার সব ফাইলের ব্যাকআপ তো আছে কিন্তু…. উনি দেখি বিমর্ষ বদনে উনার অদ্ভুত লাঠি সহ চলে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞাস করলাম, স্বপন কে নিতে যাচ্ছেন? আমাকে যে তীর মেরে দিলেন? উনি বললেন, ও কিছু না, ঘুম দিয়ে উঠলেই ঠিক হয়ে যাবে।
এরপর আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম আবার। ব্যাথাটা কমে যেতে থাকলো আস্তে আস্তে। ঘুমিয়েও গেলাম কখন জানি। ঘুম থেকে উঠলাম চিৎকার চ্যাঁচামেচিতে। স্বপন মারা গেছে।বুঝলাম যা দেখেছি তা আমার স্বপ্ন ছিল না, ঘটনা ঘটে গেছে। আর তারপরেই আমার প্রথম যেটা মাথায় আসল, স্বপনের ফোল্ডার লকের পাসওয়ার্ড জানি কি?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৪৩
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×