গল্পটা হয়ত তেমন মজার না। গল্পটা জীবনের গল্প বলেই হয়ত জীবনের মতই কেমন যেন। আবার সেই কারনেই হয়ত জীবনের মতই উত্থান পতনের রোমাঞ্চে ভরা গল্প এটা। গল্পটা একলা একা এক মা আর তার সন্তান কে নিয়ে। জীবন নামের যে যুদ্ধ আছে তাতে এই দুই সৈনিকের ভূমিকা নিয়ে গল্প। গল্পটা এক বদরাগী, রুক্ষ মেজাজের এক ব্যক্তির গল্পও, তার সন্তানদের গল্পও কোন অংশে কম না। সমস্যা হচ্ছে গল্পটা নিয়ে বেশি কিছু বলাও মুশকিল। কারন জীবনের গল্প বলতে গেলে গল্পের মজা, যে তীক্ষ্ণ মোচড় তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তা নষ্ট না করে বলাও যে মুশকিল!! মজা যতদূর নষ্ট না করে বলা যায় বলি, বাকি পাঠকের উপরে…
গল্পটা ক্যারোলিন নামক এক নারীর। যিনি ডিভোর্সি দুই ছেলের মা। ছোট ছেলে সদ্য কৈশোরে পা রাখি রাখি করছে। মহিলার অন্য ছেলে বাবার সাথে থাকে। তার সঙ্গে যে আছে তার নাম “টোবিয়াস "টোবি" উলফ,” এই বয়সী বাচ্চারা এমনেই ছন্নছাড়া হয়, তায় আবার দেশের নাম আমেরিকা। মা ছেলের রসায়ন যদিও চমৎকার। তবুও এমন ছেলে কে নিয়ে ক্যারোলিনের চিন্তার শেষ নেই।নিজেও ঠিক সুবিধার জায়গার দেখা পাননি কখনো। সে চায় কোনমতে যে কোন জায়গায় স্থির হতে, যেভাবে হোক, জীবনের জন্য দৌড় সে আর নিতে পারছে না। কিন্তু তা হয় কয়জনের? কাজেই এখান থেকে ওখানে, যেমন বুঝছে তেমন করেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ক্যারোলিন। কিন্তু যা হয়, জমছিল না কোনমতেই। ঠিক এমন সময় ডোয়াইট হানসেনের সাথে পরিচয় হয় ক্যারোলিনের। ডোয়াইট পেশায় একজন ম্যাকানিক। সে নিজেও বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ডিভোর্সি। প্রথম দৃষ্টিতে চমৎকার পুরুষ তিনি, হাস্যজ্জল, প্রাণবন্ত একজন মানুষ। ক্যারোলিন নিজের ভাগ্য কে বিশ্বাস করতে পারছিল না যে তার পরিচয় এমন একজন পুরুষের সাথে হয়েছে। টোবির প্রথম দর্শনে তাকে পছন্দ না হলেও দ্রুত মনোভাব পরিবর্তন হয়ে যায় তার। ক্যারোলিন আর ডোয়াইট বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিয়ের আগে ডোয়াইটের বাড়ি ঘুরে আসে ক্যারোলিন। আগের পক্ষের ছেলে মেয়েদের সাথে পরিচয় হয়। বিয়ের আগে কিছুদিন টোবিকে ডোয়াইটের সাথে থাকার জন্য বলা হয়। একটু দ্বিধা দ্বন্দ্ব নিয়েও রাজি হয়ে যায় টোবি। এবং যাত্রা পথেই সে বুঝতে পারে ডোয়াইট আসলে কোন ধাতুতে তৈরি। মানসিক আর শারীরিক দুই ভাবেই অত্যাচার শুরু হয়ে যায় টোবির উপর।
গল্পটা এরপরে আরও বোরিং। ক্যারোলিন বিয়ে করে চলে আসে ছোট্ট শহর কনক্রিটে। বিয়ের রাতেই সেও বুঝে যায় ডোয়াইটের সব কিছুতে খবরদারী চালানোর স্বভাবের কথা। তার আসে পাসের সকল কে তার অধীনস্থ মনে করা তার মজ্জাগত চরিত্র। রুক্ষ, বদমেজাজি ডোয়াইট আসলে বাস্তব জীবনে পরাজিত সকল ক্ষেত্রে। নিজের সন্তানেরাও ভাল করেই জানে বাবার স্বভাব। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে যে করেই হোক, এই শহর ছেড়ে চলে যাওয়া। টোবির নিজের লক্ষ্যও তাই হয়ে যায়। তার বড় ভাই গ্রেগরির সাথে থাকতে চায়। বিভিন্ন স্কুলে আবেদন পাঠাতে থাকে টোবি। রেজাল্ট খারাপ থাকায় কোন জায়গায় সুযোগ পাওয়া তার জন্য অত্যন্ত কঠিন। তারপরেও সে আবেদন করে যায়। সে যে করেই হোক এই শহর ছাড়তে চায়। ক্যারোলিন সব জেনেও চুপ করে থাকে। কারন তার ধারনা, যত যাই হোক, শেষ পর্যন্ত সে একটা স্থায়ী জায়গা পেয়েছে। সে আর অন্য কিছু শুনতে রাজি ছিল না। অন্য দিকে টোবি মার্কশীট ট্যাম্পারিং করে হলেও অন্য স্কুলে চলে যেতে চায়। এরপর আর গল্পটা না বলি। আসলে গল্পটা অতটা বিরক্তিকরও কিন্তু না।
দিস বয়'স লাইফ নামে লিখা টোবিয়াস উলফের আত্মজীবনী অবলম্বনে একই নামের এক সিনেমার গল্প বললাম।দিস বয়'স লাইফ সিনেমা মুক্তি পায় ১৯৯৩ সালে। পরিচালক মাইকেল কেটন-জোন্স। ভদ্রলোক তার সেরা কাজ করেছেন এই ছবিতে, অনবদ্য করে ফেলেছেন এক কিশোর ছেলের জীবনকে সেলুলয়েডে বন্দি করে। তবে ছবির প্রাণ হচ্ছে এর অভিনেতা আর অভিনেত্রীরা। কাস্টিং ছিল অবিশ্বাস রকমের দুর্দান্ত। টোবি চরিত্রে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও তার জীবনের প্রথম লিড রোল করেছেন। ২০১৬ সালে অস্কার প্রাপ্তির পরে ডিক্যাপ্রিও তার ভাষণে এই সিনেমার কথা উল্লেখ্য করেছেন, ধন্যবাদ দিয়েছেন পরিচালক মাইকেল কেটন-জোন্স কে। ডোয়াইট চরিত্রে কিংবদন্তীর রবার্ট ডি নিরো জাস্ট দুর্দান্ত ছিলেন। নিরোর অভিনয়ের ভক্ত যারা তারা অমৃত ভেবে খেতে পারে আর যারা ভক্ত না, যাদের ভাল লাগে না, তাদের নিরো কে মানুষ কেন পছন্দ করে তা জানার জন্য দেখতে হবে এই সিনেমা। ক্যারোলিন চরিত্রে এলেন বারকিন ভাল ছিলেন। চমৎকার উপস্থিতি ছিল উনার পুরো সিনেমা জুড়েই।
এখানে এই সিনেমার সম্পর্কে কিছু দারুণ কথা বলাই যায়। রবার্ট ডি নিরো এই ছবিতে লিওর অভিনয় দেখে এতই মুগ্ধ হয়ে ছিলেন যে তিনি মার্টিন স্করসিস কে নিজে থেকেই বলেন এই ছেলের প্রতি নজর রাখতে। তার বিশ্বাস এই ছেলে অন্য রকম কিছু। স্করসিস পরিবর্তিতে জানিয়েছেন এই ধরনের আচরণ নিরোর সাথে একেবারেই যায় না, সে কোনদিনই এমন করে কারো কথা বলেননি। রবার্ট ডি নিরো যে রত্ন চিনেছিলেন তা আজ পরিষ্কার আমাদের কাছে।
আরেকটা মজার তথ্য হচ্ছে স্পাইডার ম্যান খ্যাত টোবি ম্যাগুইর প্রথম টোবি চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিও চূড়ান্ত হয়। তবে টোবি ম্যাগুইর এই ছবিতেই তার ডেবু অভিনয় করেন। লিও বন্ধু চরিত্রের মাধ্যমে অভিষেক হয় টোবি ম্যাগুইরের।
চমৎকার গল্প আর তার চেয়েও চমৎকার অভিনয় দেখার জন্য এই ছবি সিনেমা প্রেমীদেরকে দেখার জন্য অনুরোধ করব। আইএমডিবি রেটিং ৭.৩/১০ হয়ত পুরোটা বলতে পারছে না ছবিটা কতটুকু সুন্দর। তাই দেখার আমন্ত্রণ রইল সকলের প্রতি।
গল্পটা হয়ত তেমন মজার না। গল্পটা জীবনের গল্প বলেই হয়ত জীবনের মতই কেমন যেন। আবার সেই কারনেই হয়ত জীবনের মতই উত্থান পতনের রোমাঞ্চে ভরা গল্প এটা। গল্পটা একলা একা এক মা আর তার সন্তান কে নিয়ে। জীবন নামের যে যুদ্ধ আছে তাতে এই দুই সৈনিকের ভূমিকা নিয়ে গল্প। গল্পটা এক বদরাগী, রুক্ষ মেজাজের এক ব্যক্তির গল্পও, তার সন্তানদের গল্পও কোন অংশে কম না। সমস্যা হচ্ছে গল্পটা নিয়ে বেশি কিছু বলাও মুশকিল। কারন জীবনের গল্প বলতে গেলে গল্পের মজা, যে তীক্ষ্ণ মোচড় তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তা নষ্ট না করে বলাও যে মুশকিল!! মজা যতদূর নষ্ট না করে বলা যায় বলি, বাকি পাঠকের উপরে…
গল্পটা ক্যারোলিন নামক এক নারীর। যিনি ডিভোর্সি দুই ছেলের মা। ছোট ছেলে সদ্য কৈশোরে পা রাখি রাখি করছে। মহিলার অন্য ছেলে বাবার সাথে থাকে। তার সঙ্গে যে আছে তার নাম “টোবিয়াস "টোবি" উলফ,” এই বয়সী বাচ্চারা এমনেই ছন্নছাড়া হয়, তায় আবার দেশের নাম আমেরিকা। মা ছেলের রসায়ন যদিও চমৎকার। তবুও এমন ছেলে কে নিয়ে ক্যারোলিনের চিন্তার শেষ নেই।নিজেও ঠিক সুবিধার জায়গার দেখা পাননি কখনো। সে চায় কোনমতে যে কোন জায়গায় স্থির হতে, যেভাবে হোক, জীবনের জন্য দৌড় সে আর নিতে পারছে না। কিন্তু তা হয় কয়জনের? কাজেই এখান থেকে ওখানে, যেমন বুঝছে তেমন করেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ক্যারোলিন। কিন্তু যা হয়, জমছিল না কোনমতেই। ঠিক এমন সময় ডোয়াইট হানসেনের সাথে পরিচয় হয় ক্যারোলিনের। ডোয়াইট পেশায় একজন ম্যাকানিক। সে নিজেও বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ডিভোর্সি। প্রথম দৃষ্টিতে চমৎকার পুরুষ তিনি, হাস্যজ্জল, প্রাণবন্ত একজন মানুষ। ক্যারোলিন নিজের ভাগ্য কে বিশ্বাস করতে পারছিল না যে তার পরিচয় এমন একজন পুরুষের সাথে হয়েছে। টোবির প্রথম দর্শনে তাকে পছন্দ না হলেও দ্রুত মনোভাব পরিবর্তন হয়ে যায় তার। ক্যারোলিন আর ডোয়াইট বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিয়ের আগে ডোয়াইটের বাড়ি ঘুরে আসে ক্যারোলিন। আগের পক্ষের ছেলে মেয়েদের সাথে পরিচয় হয়। বিয়ের আগে কিছুদিন টোবিকে ডোয়াইটের সাথে থাকার জন্য বলা হয়। একটু দ্বিধা দ্বন্দ্ব নিয়েও রাজি হয়ে যায় টোবি। এবং যাত্রা পথেই সে বুঝতে পারে ডোয়াইট আসলে কোন ধাতুতে তৈরি। মানসিক আর শারীরিক দুই ভাবেই অত্যাচার শুরু হয়ে যায় টোবির উপর।
গল্পটা এরপরে আরও বোরিং। ক্যারোলিন বিয়ে করে চলে আসে ছোট্ট শহর কনক্রিটে। বিয়ের রাতেই সেও বুঝে যায় ডোয়াইটের সব কিছুতে খবরদারী চালানোর স্বভাবের কথা। তার আসে পাসের সকল কে তার অধীনস্থ মনে করা তার মজ্জাগত চরিত্র। রুক্ষ, বদমেজাজি ডোয়াইট আসলে বাস্তব জীবনে পরাজিত সকল ক্ষেত্রে। নিজের সন্তানেরাও ভাল করেই জানে বাবার স্বভাব। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে যে করেই হোক, এই শহর ছেড়ে চলে যাওয়া। টোবির নিজের লক্ষ্যও তাই হয়ে যায়। তার বড় ভাই গ্রেগরির সাথে থাকতে চায়। বিভিন্ন স্কুলে আবেদন পাঠাতে থাকে টোবি। রেজাল্ট খারাপ থাকায় কোন জায়গায় সুযোগ পাওয়া তার জন্য অত্যন্ত কঠিন। তারপরেও সে আবেদন করে যায়। সে যে করেই হোক এই শহর ছাড়তে চায়। ক্যারোলিন সব জেনেও চুপ করে থাকে। কারন তার ধারনা, যত যাই হোক, শেষ পর্যন্ত সে একটা স্থায়ী জায়গা পেয়েছে। সে আর অন্য কিছু শুনতে রাজি ছিল না। অন্য দিকে টোবি মার্কশীট ট্যাম্পারিং করে হলেও অন্য স্কুলে চলে যেতে চায়। এরপর আর গল্পটা না বলি। আসলে গল্পটা অতটা বিরক্তিকরও কিন্তু না।
দিস বয়'স লাইফ নামে লিখা টোবিয়াস উলফের আত্মজীবনী অবলম্বনে একই নামের এক সিনেমার গল্প বললাম।দিস বয়'স লাইফ সিনেমা মুক্তি পায় ১৯৯৩ সালে। পরিচালক মাইকেল কেটন-জোন্স। ভদ্রলোক তার সেরা কাজ করেছেন এই ছবিতে, অনবদ্য করে ফেলেছেন এক কিশোর ছেলের জীবনকে সেলুলয়েডে বন্দি করে। তবে ছবির প্রাণ হচ্ছে এর অভিনেতা আর অভিনেত্রীরা। কাস্টিং ছিল অবিশ্বাস রকমের দুর্দান্ত। টোবি চরিত্রে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও তার জীবনের প্রথম লিড রোল করেছেন। ২০১৬ সালে অস্কার প্রাপ্তির পরে ডিক্যাপ্রিও তার ভাষণে এই সিনেমার কথা উল্লেখ্য করেছেন, ধন্যবাদ দিয়েছেন পরিচালক মাইকেল কেটন-জোন্স কে। ডোয়াইট চরিত্রে কিংবদন্তীর রবার্ট ডি নিরো জাস্ট দুর্দান্ত ছিলেন। নিরোর অভিনয়ের ভক্ত যারা তারা অমৃত ভেবে খেতে পারে আর যারা ভক্ত না, যাদের ভাল লাগে না, তাদের নিরো কে মানুষ কেন পছন্দ করে তা জানার জন্য দেখতে হবে এই সিনেমা। ক্যারোলিন চরিত্রে এলেন বারকিন ভাল ছিলেন। চমৎকার উপস্থিতি ছিল উনার পুরো সিনেমা জুড়েই।
এখানে এই সিনেমার সম্পর্কে কিছু দারুণ কথা বলাই যায়। রবার্ট ডি নিরো এই ছবিতে লিওর অভিনয় দেখে এতই মুগ্ধ হয়ে ছিলেন যে তিনি মার্টিন স্করসিস কে নিজে থেকেই বলেন এই ছেলের প্রতি নজর রাখতে। তার বিশ্বাস এই ছেলে অন্য রকম কিছু। স্করসিস পরিবর্তিতে জানিয়েছেন এই ধরনের আচরণ নিরোর সাথে একেবারেই যায় না, সে কোনদিনই এমন করে কারো কথা বলেননি। রবার্ট ডি নিরো যে রত্ন চিনেছিলেন তা আজ পরিষ্কার আমাদের কাছে।
আরেকটা মজার তথ্য হচ্ছে স্পাইডার ম্যান খ্যাত টোবি ম্যাগুইর প্রথম টোবি চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিও চূড়ান্ত হয়। তবে টোবি ম্যাগুইর এই ছবিতেই তার ডেবু অভিনয় করেন। লিও বন্ধু চরিত্রের মাধ্যমে অভিষেক হয় টোবি ম্যাগুইরের।
চমৎকার গল্প আর তার চেয়েও চমৎকার অভিনয় দেখার জন্য এই ছবি সিনেমা প্রেমীদেরকে দেখার জন্য অনুরোধ করব। আইএমডিবি রেটিং ৭.৩/১০ হয়ত পুরোটা বলতে পারছে না ছবিটা কতটুকু সুন্দর। তাই দেখার আমন্ত্রণ রইল সকলের প্রতি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:৫৩