অধিকাংশ তালাকের পেছনে কি সত্যিই ছেলের পরিবার দায়ী? বিশেষ করে মা অথবা বোন! কী অদ্ভুত, তাই না? এক নারীর সংসার ভাঙার পেছনে কেন দাঁড়ায় আরেক নারী?
শ্বাশুড়ির সঙ্গে মনোমালিন্য, তার মন মতো চলতে না পারা, শ্বাশুড়ির অপছন্দের মেয়ে হয়ে ওঠা — এসব তুচ্ছ বিষয় কেন একটি সংসারকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়? কেন এই বিরোধ বাড়তে বাড়তে তালাকের মতো ভয়াবহ পরিণতিতে পৌঁছায়?
কোন দলিলে ছেলের মা'কে অথবা বোন'কে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে? কে দিয়েছে? কবে দিয়েছে? কীভাবে দিয়েছে আর কেনই বা দিয়েছে? এই প্রশ্নগুলো কি আমাদের সমাজে কখনও জোরালোভাবে তোলা হবে না?
আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা যেখানে স্বামী-স্ত্রীকে আলাদা বাসস্থান দিতে, স্ত্রীর পাশে থাকতে এবং তালাকের মতো চরম সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকতে শেখায়, সেখানে 'আমার বাবা মায়ের দেখভাল করতে না পারলে তোমার মতো বউ দিয়ে কি করব, একটা বউ গেলে দশটা পাবো' — এই মানসিকতা পুরুষ জাতির মস্তিষ্কে কে ঢুকিয়েছে? এদের মা? নাকি এই সমাজ? সমস্যা আসলে কার? গোটা সমাজ তন্ত্রের?
একটি মেয়ে বিশ-বাইশ বছর ধরে এক পরিবেশে বেড়ে ওঠে। এরপর তাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পরিবেশে পাঠানো হয় সারাজীবনের জন্য, বলা হয় ওটিই তার আসল ঘর! অথচ সেই ঘরে তার ইচ্ছেমতো খাওয়া যাবে না, পোশাক পরা যাবে না, যখন তখন ঘুমানো নিষেধ। অবসরে বসা দায়। 'এটা এমন হলো কেন, ওটা ওমন কেন, এটাও পারো না, বাবা মা কি শিখিয়েছে, আবার মুখে মুখে তর্ক' — অভিযোগের যেন শেষ নেই।
তবু ভগ্ন হৃদয়ে মেয়েটা সব সয়ে যায়, শুধু সংসারটা বাঁচানোর আশায়... শেষমেশ সেই সংসারটা কি বাঁচে? আর বাঁচলেও মেয়ের হৃদয়ের ক্ষত ক্যান্সারের মতো কতটা ছড়িয়ে পড়েছে, সে খবর রাখে কে?
বিয়ে যদি মেয়ের দ্বিতীয় জন্ম, দ্বিতীয় জীবন হয়, তবে এই যদি হয় সেই দ্বিতীয় জন্মের চিত্র, তবে এই জন্ম আমরা চাই না। দু মুঠো ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য এই পৃথিবীতে আমরা কেউ আসিনি! এই চক্র ভাঙা জরুরি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


