somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসা দিবসে একটি অভালবাসাজনিত পোস্ট

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলা থেকে ভালবাসাময় একটা পরিবেশে বড় হয়েছি। শাহরুখ -কাজলের ভালবাসা, রিয়াজ - শাবনূর এর ভালবাসা, টম ক্রুজ - জুলির ভালবাসা। চারিদিকে ভালবাসা ভালবাসা ভালবাসা। নাটক, সিরিয়াল, সিনেমা এমনকি কার্টুনেও ভালবাসা দেখতে দেখতে একটা ধারণা হয়ে যায়, ভালবাসা আসলেই মজার জিনিস! টেস্টি, ক্রিস্পি এবং স্পাইসি। বিশেষ করে হিন্দি সিনেমা আর সিরিয়ালগুলোতে এই জিনিসটা এতো কালারফুল আর স্পাইসি করে পরিবেশন করা হয় যে বারবার খেতে ইচ্ছে করে! মূলত এসব সিনেমা আর সিরিয়াল দেখেই তরুণ তরুণীর মনে ভালবাসার স্বপ্ন দানা বাঁধতে থাকে। 'কুচ কুচ হোতা হ্যা' দেখে দেখে নিজেরে রাহুল , অঞ্জলি ভাবা শুরু করে। 'দিল মিল গায়ে' দেখতে দেখতে নিজেদেরকে আরমান আর রিদ্ধিমার জায়গায় কল্পনা করতে থাকে। নিজের বাস্তব জীবনেও কোন রাহুল,রিদ্ধিমা খুঁজে বেড়ায়। বেশিরভাগ টিনএজার এর প্রথম ক্রাশ হয় কোন নায়ক-নায়িকা অথবা মডেল!



এখন সময় পরিবর্তন হয়েছে। ভালবাসা আরও টেস্টি হয়ে ওঠেছে। বাংলা সিনেমা, সিরিয়াল, নাটকগুলোও ভালবাসায় ভরপুর হয়ে ওঠেছে। ফেসবুক এসেছে, ভালবাসা নিয়ে লোকজন সুন্দর সুন্দর স্ট্যাটাস দিচ্ছে, তা দেখে আরেকজন ভালবাসতে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। এখন আর টিনএজাররা শাহরুখ কাজলের প্রেমে পড়েনা, তাহসান তিশার প্রেমে পড়ে। সালমান মুক্তাদির আর সাবিলা নূর এর ছবি ওয়ালে (ঘরের নয়, ফেসবুক এর) টাঙ্গায় আর সারা দুনিয়ারে তাদের ক্রশের কথা জানান দেয়। নাটক, সিনেমা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নায়ক নায়িকার দেখাদেখি বাস্তব লাইফে প্রেম করতে যেয়ে 'ভালবাসা' শব্দটিকেই দুষিত করে ফেলেছে এরা। ভালবাসা এখন এক চাহিদা হয়ে গেছে, প্রেম করতেই হবে। মিডিয়া এমনভাবে প্রভাব ফেলেছে মানুষের মনে, মানুষ আগাছা হয়ে গেছে। ভয়াবহ রকমের Needy হয়ে গেছে এরা। জীবনে বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড লাগবেই! প্রেম ছাড়া জীবন চলেনা। তুমি প্রেম করনা তার মানে তুমি ব্যাকডেটেড। এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বলে দোস্ত একটা গার্লফ্রেন্ড খুঁজে দে। 'ভালবাসা' জিনিসটা নিছক ছেলেখেলা আর সখের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সখ হল, প্রেম একটা করে ফেললাম। সখ চলে গেল, ভেঙে ফেললাম। আবার সখ হল, আরেকটু বেশি ফিচারযুক্ত আরেকজনকে জোগাড় করে নিলাম। এভাবে চলতে থাকল, পুরাই নেস্টেড ফর লুপ। কিন্তু ক'জন এই প্রেমকে পরিণয় পর্যন্ত নিয়ে যায়? ভাওতাবাজি প্রেমের কথা বাদ দিলাম, সত্যিকারের ভালবেসেও ক'জন বিয়ে করে সংসার করতে পারে? নিজের ভালবাসার মানুষকে যদি বিয়েই না করতে পারলে তো কেমন ভালবাসলে? এর চেয়েতো এমন প্রেম না করাই ভাল। মিছি মিছি সমাজ, ধর্ম এর দোষ দিয়ে কি লাভ? যেটি সবার জন্য ভাল সেটিই সমাজ এবং ধর্ম করতে বলে। সৃষ্টিকর্তা যে নিয়ম বলে দিয়েছেন সেটিই সর্বোৎকৃষ্ট। আমরা নির্বোধেরা বাড়াবাড়ি করে লাভ নেই, ঊনার জ্ঞান এর ধারেকাছে যাওয়াও আমাদের দ্বারা সম্ভব না।

রিলেশন,প্রেম করার আগে কেউ একবারও ভাবেনা এর শেষ পরিনতি কি হবে। যাকে আবেগতাড়িত হয়ে ক্ষণিকের জন্য নিজের জীবনের সাথে জড়াচ্ছে সে কি আসলেই তার? এটি ভালবাসা নাকি ক্ষণিকের ভাললাগা? যাকে ভালইবাসনা তার সাথে কেন নিজেকে জড়িয়ে দুজনের ক্ষতি করবে? একটু কল্পনা করে দেখুন তো, এমন একটা সমাজ যেখানে সব নারী পুরুষ একে অন্যকে সম্মান করে, নাটক সিনেমাগুলোতে যুবক যুবতীর ভালবাসা প্রাধান্য না দিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার ভালভাসা প্রাধান্য দেয়, স্বামী স্ত্রী এর পবিত্র ভালবাসা তুলে ধরে। কেমন হতো তাহলে সে সমাজ? নিশ্চই এখনের এই সমাজ থেকে অনেক সুস্থ এবং সুন্দর।

কোন সখ কিংবা Neediness থেকে ভালবাসা হয়না। কোন সিনেমা-নাটক দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ভালবাসা হয়না। ভালবাসা ব্যাস হয়ে যায়। যদি মনে কর কাউকে ভালবাস মানে আসলেই ভালবাস, তখন তাকে বিয়ে পর্যন্ত নিয়ে যাও। আর যদি মনে কর সেটা পারবেনা তাহলে এমন প্রেমের দরকার নেই, আরেকজনের আমানত নষ্ট করার অধিকার কেউ তোমাকে দেয়নি।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×