somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানবী (সাঃ) অপরিসীম দৈহিক শক্তির অধিকারী ছিলেন ।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহানবী (সাঃ) দৈহিক শক্তি এবং পেশীবলের দিক দিয়ে এতো শক্তিশালী এবং সুদৃঢ় ছিলেন যে, বিশ্বখ্যাত কোন কুস্তিগীড়ও উনার সামনে টিকতে পারত না । মোহাম্মদ ইবনে ইসহাক (রঃ) এর কিতাবে বর্ণিত - মহানবী (সাঃ) সময়ে মক্কায় রুকানা নামক একজন পালোয়ান ছিলো । সে কুস্তিতে বিশেষ পারদর্শী এবং শারীরিক শক্তিতে মক্কা নগরীতে অপ্রতিদ্বন্দ্বি এক ব্যাক্তিত্ব ছিলো । দূর দুরান্ত থেকে বীর পুরুষেরা তার সাথে মল্লযুদ্ধ অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আসতো । কিন্তু অবলীলাক্রমে সে তাদেরকে ধরাশায়ী করে দিতো ।

একদিন ঘটনাক্রমে সে হুজুরে পাক (সাঃ) এর সামনে পড়ে গেলো । হুজুর (সাঃ) তাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে রুকানা ! তুমি আল্লাহকে কেন ভয় করছ না এবং আমার দাওয়াতকে কেন কবুল করছ না ? উত্তরে সে বলল, হে মোহাম্মদ ! আপনার দাবীর সত্যতার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পেশ করুন । হুজুর পাক (সাঃ) বললেন, কুস্তিতে যদি আমি তোমাকে পরাজিত করতে পারি তবে কি তুমি ঈমান আনবে ? সে বলল, হা । রাসূল (সাঃ) বললেন, তাহলে প্রস্তুত হও । কথা শুনে রুকানা পালোয়ান কুস্তির জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলো । হুজুর (সাঃ) কোনরূপ প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন না । তিনি সাধারণ পোশাক - লু্ঙ্গি ও চাদর পরিহিত অবস্হায় ছিলেন । প্রথম আক্রমণেই হুজুর (সাঃ) রুকানাকে মাটিতে ফেলে দিলেন । রুকানার বিস্ময়রে অবধি রইল না । হুজুর (সাঃ) তাকে এমনভাবে ধরলেন যে, তার নড়াচড়া করার কোন উপায় রইল না । ছেড়ে দেয়ার আবেদন করলে হুজুর (সাঃ) তাকে ছেড়ে দিলেন । এরপর সে দ্বিতীয়বার এবং তৃতীয়বার কুস্তি লড়ল । কিন্তু প্রতিবারই তাকে পরাজয়ের গ্লানি ভোগ করতে হলো । প্রতিবারেই হুজুর (সাঃ) তাকে ধরাশায়ী করে দিলেন । এতে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে রুকানা বলল, আপনি এক আজিব শান ! এতো শক্তির অধিকারী আপনি ? তবে শেষ পর্যন্ত সে ঈমান আনয়ন করেছিলো কিনা তার বর্ণনা হাদীস শরীফে আসেনি ।

উক্ত কুস্তিগীর রুকানা ব্যতীত আরো অন্যান্য কুস্তীগীররাও হুজুর (সাঃ) এর সাথে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলো । তিনি সকলকেই পরাজিত করেছিলেন । আবূল আশাদ জাহমী নামে এক শক্তিশালী লোক ছিলো আরবে । তার শারীরিক শক্তি এত বেশী ছিলো যে, সে গরুর চামড়ার উপর দাড়িয়ে যেতো । লোকেরা তার চর্তুদিক দিয়ে তাদের গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে চামড়া টানাটানি করত । টানের চোটে চামড়া ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতো কিন্ত তার পায়ের নীচ থেকে চামড়া সরিয়ে নিতে পারতো না । সে স্বস্হান থেকে একটু বিচ্যুত হত না । একদিন সে হুজুর (সাঃ) কে বলল, আপনি যদি আমাকে যমীনে ফেলে দিতে পারেন তবে আমি ঈমান আনবো । হুজুর (সাঃ) তাকে ধরেই যমীনে ফেলে দিলেন । কিন্তু হতভাগা এরপরও ঈমান আনলো না ।

সাইয়েদ্যুনা হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, হুজুর (সাঃ) এক রাত্রিতে উনার এগার জন স্ত্রীর নিকট গমণ করতে পারতেন । বর্ণনাকারী বলেন, আমি হযরত আনাস (রাঃ) কে সবিস্ময়ে প্রশ্ন করলাম, হুজুর (সাঃ) কি এতই শক্তি রাখতেন ? হযরত আনাস (রাঃ) বললেন, আমরা পরষ্পর বলাবলি করতাম , হুযুর (সাঃ) কে আল্লাহতায়ালা তিরিশজন পুরুষের শক্তি প্রদান করেছেন ।

অপর এক বর্ণনায় এসেছে, হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেছেন, একদা জিব্রাঈল (আঃ) খাবার ভর্তি একটি ডেগ আমার কাছে নিয়ে এলেন । আমি তা থেকে কিছু খাবার গ্রহণ করলাম । তাতে আমার ভিতর চল্লিশজন পুরুষের পুরুষত্ব শক্তি এসে গেলো ।

হুজুর পাক (সাঃ) এর পানাহার এবং জীবন যাপনের অবস্হা এরকম ছিলো যে, কখনও তিনি উদরপূর্তি করে পরিতৃপ্তির সাথে খাদ্য গ্রহণ করেন নি । শুধুমাত্র যবের রুটিই যথেষ্ট মনে করতেন । পানাহারের অবস্হা এরকম হওয়া সত্ত্বেও হুজুর (সাঃ) এর পবিত্র দৈহিক শক্তি ও সামর্থ্যের উপরোক্ত অবস্হাবলী উনার মোজেজার মধ্যেই গণ্য হয়ে থাকে ।

সূত্রঃ মাদরিজ উন নবূয়ত । শায়েখ আব্দুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ) । প্রথম খন্ড ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:১৭
১১টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×