বিশ্বের নানা দেশে মুসলমানরা যখন পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের দিনের আনন্দ উপভোগ করছেন রোজা শেষ করে ঠিক ফিলিস্তিনিরা ত মৃত স্বজনের লাশ দাফন কিংবা বোমা-গুলিতে ক্ষতবিক্ষত স্বজনদের প্রাণ বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে। হামাসের কিছু সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরায়েলের আগ্রাসনে মাত্র ১৬০টি জঙ্গি বিমানের পাশাপাশি অত্যাধুনিক ট্যাংক, কামান, ড্রোন, গানবোট থেকে বোমা-গোলা-ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ইহুদি আগ্রাসনের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসনকে আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন মুসলিম উম্মাহ’র নেতারা তখন তাদের ইহুদি-নাসারা প্রভুদের খুশি রাখতে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন।
ইসরায়েলের এই বেড়ে চলা আসলে পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার এক নিরন্তর প্রক্রিয়াও বটে। জাতি বা গোষ্ঠী হিসেবে ফিলিস্তিনিদের দুনিয়া থেকে বাস্তবে একেবারে মুছে দেওয়া যদিও কখনোই সম্ভব হবে না। তবে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোটা ক্রমেই অসম্ভবের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরাইলের দুর্বৃত্তপনা বন্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিলেও মুসলমানদের দায়িত্ব রয়েছে রাষ্ট্রহারা ও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শরণার্থী হিসেবে অন্য রাষ্ট্রের অনুকম্পায় বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করা। এ বিষয়ে তাদের জবাবদিহি রয়েছে স্বয়ং স্রষ্টার কাছে। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে বর্ণিত হয়েছে, “তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে এবং অসহায় নরনারী ও শিশুদের (উদ্ধারের) জন্য সংগ্রাম করবে না? যারা বলছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! অত্যাচারী অধিবাসীদের এই নগর থেকে আমাদের বাহির করে অন্যত্র নিয়ে যাও এবং তোমার নিকট হতে কাউকে আমাদের অভিভাবক করো এবং তোমার নিকট হতে কাউকে আমাদের সহায় নিযুক্ত করো।” (সুরা নিসা: ৭৫)। যারা ফিলিস্তিনিদের কয়েক দশকের ভয়ংকর দুর্দশা থেকে মুক্তি দিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারতেন সেসব মুসলিম শাসকদের মধ্যে রয়েছে ভয়ংকর অনৈক্য ও অবিশ্বাস। আর অধিকাংশই ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়নকারী, নির্যাতনকারী, এমনকি মুসলিমদের প্রথম কিবলা পবিত্র আল আকসা মসজিদে আক্রমণকারী ইসরাইল ও তাদের দোসরদের বন্ধু বানিয়েছেন নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখছে ।
যুক্তরাষ্ট্রের অতীত সরকারগুলোর মতো বর্তমান বাইডেন প্রশাসনও সরাসরি ইসরাইলের পক্ষে কথা বলছে এবং ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষার অজুহাত দেখিয়ে আল-কুদস, পূর্ব বায়তুল মোকাদ্দাস ও গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার পক্ষে সাফাই গাইছে। আমেরিকার সব সরকারই ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে সরাসরি ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে আসছে এবং অবৈধ ও দখলদার এ সরকারকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সব রকম সাহায্য করছে। মার্কিন সমর্থন নিয়েই ইসরাইল অবৈধভাবে ইহুদি উপশহর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন সরকার সবসময়ই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাইলের হয়ে কাজ করছে যাতে তেলআবিবের বিরুদ্ধে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারে।
মহান আল্লাহ্ তাদের বিজয়ী করবে আমি বিশ্বাস করি কারন দুনিয়ায় কোন দিন কোন জালেম ঠিকে থাকতে পারে না। আজ যারা সন্ত্রসী ইহুদী রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের যেন ভুলে নাই যায় আল্লাহর ছাড়দেন ছেরে দেন না ।।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২১ রাত ১০:৩৭