(প্রথমেই বলে নিচ্ছি এটা কোন ধর্মীয় পোস্ট নয় এটা ইতিহাসের আলোচনা)
গতকাল ঢাবিয়ানের একটা পোস্টে ব্লগার @ ব্লগার ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন,
বিষয় হলো ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবেন আজকের বাংলাদেশের মানচিত্রের ভেতরে থাকা বেশীরভাগ মানুষই এক সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী ছিলো। এই কথা তেমন কাউকেই বলতে শুনি না, কিন্তু জাত-পাত আর অন্যায় অত্যাচারের কারনে আমাদের পূর্ব-পুরুষরাই একসময় সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে।
ও আলাদা ভাবে ধর্ম উল্লেখ না করলেও অনেকটা একইভাবে ব্লগার ঊণকৌটী বলেছেন,
সবই ভারতের থেকে আলাদা হয়েছে তার মধ্যে ৯০% কনভার্ট এখন যদি ভারতীয় সাংস্কৃতিক লিঙ্ক অস্বীকার করেন তবে আপনারা কে?
আমি এনাদের দোষ দেই না- যেখানে বিখ্যাত ইতিহাসবিদ রিচার্ড ম্যাক্সওয়েল ইটন, আহমদ শরিফ, মুহাম্মদ মোহর আলী ও যদুনাথ সরকার একমত পোষণ করেন যে, ইসলাম ধর্মপ্রচারক দ্বারা নিম্ন বর্ণের হিন্দু থেকে অধিক সংখ্যায় বাঙালি মানুষ ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে।
***
প্রাক-ইসলামী ইতিহাস (ইতিহাস থেকে)
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দ থেকে বাংলায় ধান চাষকারী সম্প্রদায়ের বসবাস। এই অঞ্চলটি একটি বৃহৎ কৃষিজীবী জনসংখ্যার আবাসস্থল ছিল, যাদের উপর ভারতীয় ধর্মের সামান্য প্রভাব ছিল। প্রথম সহস্রাব্দে অঞ্চলটিতে বৌদ্ধধর্ম প্রভাব বিস্তার করে। বাংলা ভাষা অপভ্রংশ এবং মাগধী প্রাকৃত থেকে সপ্তম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যে বিকাশ লাভ করে।
বিন্দুসারের মৃত্যুর পরে অশোকার সিংহাসন গ্রহনের মধ্য দিয়ে খৃষ্টপূর্ব ২৭২ সাল সময়কাল থেকে বৌদ্ধধর্মের যে উত্থান শুরু হয় সেটা পাল সম্রাজ্যের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা পেয়েছিল ৮ম শতাব্দীতে এসে।
বাঙালি বৌদ্ধ পাল সাম্রাজ্যটি ৮ম শতাব্দীতে উত্থিত হয়েছিল। ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে বৌদ্ধ নেতা প্রথম গোপাল সার্কায় নির্বাচন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্য ধ্রুপদী এশিয়ার বৃহত্তম সাম্রাজ্য শক্তিগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত হয়। পালগণ মহাযান ও তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন। তারা অনেক অসামান্য মন্দির, মঠ এবং শিল্পকর্ম তৈরির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল। আব্বাসীয় খিলাফত, তিব্বতীয় সাম্রাজ্য এবং শ্রীভিজায়া সাম্রাজ্যের সাথে পালরা দৃঢ় বন্ধুত্বের সম্পর্ক উপভোগ করেছিল। ধর্মপাল এবং দেবপালের অধীনে সাম্রাজ্য শীর্ষে পৌঁছেছিল। পুনরুত্থানকারী হিন্দু সেন রাজবংশ দ্বারা প্রতিস্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত তারা চার শতাব্দী ধরে রাজত্ব করেছিলেন। ব্রাহ্মণ নিপীড়ন ভারতে বৌদ্ধধর্মের পতনের মূল ভূমিকা পালন করেছিল; পরবর্তীকালে মুসলিমদের বিজয় ঘটে।
১২০৪ সালে ইখতিয়ার আল-দীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজির (তুর্কি বংশোদ্ভূত কুতুব উদ্দিন আইবকের একজন সামরিক জেনারেল) আগমনের সাথে শুরু করে ১৭৫৭ সালে বাংলার শেষ নবাবকে পরাজিত করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখল নেওয়া পর্যন্ত মুসলমানরা সাড়ে পাঁচ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বাংলা শাসন করেছে। *( রেফারেন্সঃ সিরাজ-উদ-দৌলা সিদ্দিক ও হাবিব, ২০১৭)
গত দুই হাজার বছরের অধিক সময়ের বাঙ্গালীর ও বাংলার ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় সত্যিকারে হিন্দুরা এই অঞ্চল শাসন করেছে সাকুল্যে একশত বছর মাত্র। হাজার বছরের অধিক সময়ে এখানে বৌদ্ধদের প্রভাব ছিল বেশী। আজও অব্দি বাংলায় মাটির নীচ থেকে আদি কালের যত পূরাকীর্তি বেরিয়ে আসে তাঁর অধিকাংশই বৌদ্ধবিহার বা মঠের।
বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি আমাদের বরিশাল হতে উদ্ভব বৈষ্ণব ধর্মেরও দুর্দান্ত প্রভাব ছিল এই অঞ্চলে। বৈষ্ণব ধর্মকে মোটেও হিন্দু বা সনাতন ধর্মের ছাঁচে ফেলা যায় না।
এবার আসি ধর্মান্তরিত বিষয়টা নিয়ে।
আরব, ফার্সি, তুর্কি, মালয়েশিয়ান এবং অনেক ভারতীয় হিন্দু এবং এশিয়ান বৌদ্ধ জাতির মিশ্রণে জন্ম হয়েছিল বহু জাতিগত বাঙালি সম্প্রদায়। বাঙালি জাতির জন্মের সময় থেকেই বাঙালিদের মধ্যে সংখ্যালঘু মুসলমানরা উপস্থিত ছিল বলে মনে করা হয়। পরে অনান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য থেকে ব্যবসায়ীদের আগমনের পর বাঙালি মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ে। কটি বুদ্ধধর্মী এবং হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অনেকে জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ-এর মতন ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।
প্রাথমিক ইসলামি সাম্রাজ্য
বাংলা সালতানাত
বাংলায় হিন্দুদের আগমনের প্রায় একশ বছর পরেই বাংলায় ইসলামের বিস্তার ঘটে। বাংলা যখন হিন্দু সেন সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল, পরবর্তী মুসলিম বিজয়, সমগ্র অঞ্চলে ইসলাম প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বখতিয়ার খলজি, একজন তুর্কি মুসলিম সেনাপতি, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে রাজা লক্ষণ সেনকে পরাজিত করেন ও বাংলার বিশাল অংশ দিল্লি সালতানাতের সাথে যুক্ত করেন। খলজি তিব্বতও অভিযান চালান। এই প্রাথমিক বিজয়ের পর বাংলায় ধর্মপ্রচারকদের আগমন ঘটে এবং অনেক বাঙালি ইসলামকে তাদের জীবনধারা হিসেবে গ্রহণ করতে শুরু করে। সুলতান বলখী এবং শাহ মখদুম রূপস উত্তরবঙ্গের বর্তমান রাজশাহী বিভাগে বসতি স্থাপন করেছিলেন ও সেখানকার মানুষের মাঝে ইসলাম প্রচার করেছিলেন। উত্তর-পূর্বের শহর উত্তর-পূর্বের শহর শ্রীহট্টে (সিলেট) বুরহানউদ্দিনের ছত্রছায়ায় ১৩টি মুসলিম পরিবারের একটি সম্প্রদায় বাস করত, তদের দাবি অনুযায়ী তাদের বংশধররা চট্টগ্রাম থেকে এসেছিল।১৩০৩ সাল নাগাদ, শাহ জালালের নেতৃত্বে শত শত সূফী প্রচারক বাংলার মুসলিম শাসকদের সিলেট জয় করতে সাহায্য করেন, যা ধর্মীয় কার্যকলাপের জন্য শহরটিকে জালালের সদরদপ্তরে পরিণত করে। বিজয়ের পর, জালাল ইসলাম প্রচারের জন্য তার অনুসারীদের বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেন এবং বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে একটি সুপরিচিত নাম হয়ে ওঠেন।
এই অঞ্চলে ইসলামের আবির্ভাবের কয়েক শতাব্দী আগে, বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল। ১১৭০-এর দশকে হিন্দু সেন সাম্রাজ্যের পতন এবং পরবর্তীতে বিজয়ের আগ পর্যন্ত এলাকাটি কয়েক শতাব্দী ধরে বৌদ্ধ পাল সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এটি ছিল তাৎপর্যপূর্ণ বৌদ্ধ-ব্রাহ্মণ ধর্মীয় সংঘাতের একটি যুগ কারণ তারা ধর্মীয় ঐতিহ্যের বিপরীত শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করত এবং বৌদ্ধ ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি সাম্যের প্রতি ব্রাহ্মণ জাতি-ভিত্তিক ক্ষমতা কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলে।
বিজয়ের কয়েক দশক পরে, বখতিয়ার খলজি এই অঞ্চলটিকে সুফি ধর্মপ্রচারকদের একটি বৃহত্তর আগমনের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। এই আলোচনা ব্যাখ্যা করে কেন ইসলাম পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে পূর্ব বাংলায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মূলত, পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় পূর্ববঙ্গে প্রচুর বৌদ্ধ জনসংখ্যা ছিল। হিন্দু সাম্রাজ্যের দ্বারা এলাকা জয়ের ফলে এই অঞ্চলে বৌদ্ধদের অধীনতা দেখা দেয়। তুর্কিদের বিজয়ের সাথে সাথে সুফি ধর্মপ্রচারকদের আগমন ঘটে যারা পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তর হিন্দু অঞ্চল বনাম বৃহত্তরভাবে অসন্তুষ্ট বৌদ্ধ পূর্ব বাংলাকে রূপান্তর করতে আরও সফল হয়েছিল।
বনাম বৃহত্তরভাবে অসন্তুষ্ট বৌদ্ধ পূর্ব বাংলাকে রূপান্তর করতে আরও সফল হয়েছিল।
কয়েক শতাব্দী পরে মুঘল সাম্রাজ্যের কৃষি সংস্কার সুফি মিশনকে কেন্দ্র করে কৃষি গ্রামগুলির একটি ব্যবস্থা তৈরি করে সমগ্র বাংলাদেশে রূপান্তর এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করেছিল। উর্বর গঙ্গা সমভূমির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য মুঘলরা এই উদ্যোশ্যে আশেপাশে ভূমিহীন কৃষকদের জমি দেয়। সুফি ধর্মপ্রচারকদের ইসলাম প্রচারের আরও সুযোগ সহ এলাকার লোকেদের বৃহত্তর ঘনত্বের দিকে পরিচালিত করে। ইতিহাসবিদ রিচার্ড এম. ইটনের মতে, ইসলাম বাংলা বদ্বীপে লাঙ্গলের ধর্ম হয়ে ওঠে। এই অঞ্চলে ইসলামের আবির্ভাব ঘনিষ্ঠভাবে কৃষির সাথে জড়িত ছিল। বদ্বীপটি ছিল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে উর্বর অঞ্চল। মুঘল উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বন পরিষ্কার করেছে এবং হাজার হাজার সুফি-নেতৃত্বাধীন গ্রাম প্রতিষ্ঠা করেছে, যা শিল্পোন্নত কৃষিকাজ এবং কারিগর সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে। ব-দ্বীপের সবচেয়ে উর্বর অংশ পূর্ববঙ্গের ভাটি অঞ্চলে প্রকল্পগুলো সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট ছিল।
প্রসঙ্গ ধর্মান্তর; চারিদিকে যেভাবে গল্প ছড়িয়ে আছে, একজন বুজুর্গ বসরা থেকে ফরাসে চেপে, বাঘের পিঠে চড়ে, কিংবা কুমিরের পিঠে চেপে চলে এলেন ফরিদপুরের দুর্গম জংলা অঞ্চলে। ধরুনঃ সেখানকার লোকদের পানির ভীষন সমস্যা; কোয়ী বাত নেহী, একরাতে তিনি জ্বীনের বাদশারে ঘাড় ধরে এনে বিশাল এক দীঘি খনন করে দিলেন। তার এমন কেরামতি আর অলৌকিকতায় শত শত ভুখা নাঙ্গা উচ্চবর্নের ব্রাহ্মণ আর ক্ষত্রিয়দের দ্বারা ভীষন নিষ্পেষিত দলিত হিন্দুরা ধর্মান্তরিত হয়ে শ্যাম যদু মদু নাম বাদ দিয়ে সৈয়দ শামসু, মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন,যুনাইদ সিদ্দিক হয়ে গেল!!!
ভেবে দেখুন; ধর্মান্তরিত করা আর হওয়া এতই কি সহজ? হোক সে দলিত নিস্পেষিত নিপিড়িত। ইতিহাস ঘেটে দেখুন; সমাজের সবচেয়ে অসহায় মানুষেরা সবসময় ধর্মের প্রতি সত্যিকারে বেশী দুর্বল থাকে।ঈশ্বরকে তারা সবচেয়ে বেশী আঁকড়ে ধরে থাকতে চায়।
আর যেই লোকটি আসলে আকাশে উড়ে কিংবা পানিতে হেটে আসলেন তিনি আসলেই মরুভূমি শুকনোর দেশ ছেড়ে এই নদী জংলা খাল বিলের দেশে এত বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে একাকী কেমনে আসলেন? তিনি এত দ্রুত নেটিভদের সাথে কি ভাষায় কথা বললেন? কি ভাষায় ধর্ম প্রচার করলেন? তাদেরকে কোরান হাদিস সহ ধর্মের বেসিক ব্যাপারগুলো কিভাবে বোঝালেন বা শেখালেন?
একটা মানুষ যখন ধর্ম ত্যাগ করে সে শুধু ধর্ম নয় তাঁর পরিবার, সমাজ এমনকি তাঁর এলাকা ত্যাগ করতেও চিরতরে বাধ্য হয়। একজন ধর্ম প্রচারককে নিশ্চয়ই বিশাল ও শক্তিশালী দল নিয়ে আসতে হবে। না হলে সমাজপতি, আর্যসমাজ,জমিদার ও ক্ষমতাবানেরা তাঁকে একমূহুর্তের জন্য টিকতে দিবেন না- যে ধর্মান্তরিত হবে, তাঁকে পুরোপুরি শেল্টার দেবার মত ক্ষমতা তাঁর থাকতে হবে।
***পৃথিবীর কোন দেশ কারো নিজের নয়। আমরা আসলেই সবাই উড়ে এসে জুড়ে বসেছি। নৃতত্ত্ববিদেরা বলে আমাদের সবার আদিবাস আসলে আফ্রিকা।
আমার প্রশ্ন তিনটেঃ
কোন দেশে আসলে বংশপরম্পরায় কত বছর থাকলে সেটা নিজের দেশ হয়?
একটা ভাষায় কত বছর কথা বললে সেটা নিজের ভাষা হয়?
আর একটা সংস্কৃতি কত বছর চর্চা করলে নিজস্ব সংস্কৃতি হয়?
ফের ব্লগার ঊণকৌটী’র মন্তব্য নিয়ে আসছি;
তিনি বলেছেন: এই অঞ্চলের মুসলিম রা তো আর আরব বা তুরস্কের থেকে আসেনি সবই ভারতের থেকে আলাদা হয়েছে তার মধ্যে। ৯০% কনভার্ট এখন যদি ভারতীয় সাংস্কৃতিক লিঙ্ক অস্বীকার করেন তবে আপনারা কে? মনে রাখবেন যেকোন জাতি তার পুরোনো অতীত গৌরব যদি ভুলে যায় তবে সে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার পৃথিবীর ৫৩ মুসলিম দেশের মাত্র দুটো দেশ তার অতীত অস্বীকার করে সে কে? অন্ধকারে খুঁজে বেড়াচ্ছে তার পরিচয় ১ পাকিস্তান আর দ্বিতীয় আপনারা।
( সেই অতীত কোন অতীত প্রিয় ব্লগার সেইটা আগে জানুন?)
২২০০ বছরে মাত্র ১০০ বছর এ দেশ শাসন করে যদি হিন্দুরা মনে করে তাদের এ দেশ –এ দেশ, দেশের ভাষা, দেশের সাংস্কৃতির ধারক বাহক তারা, তবে ৫৫০ বছরের অধিককাল শাসন করা মুসলমানেরা (এরা তুর্কী, আফগানী, আরবীয় আর হাবশি মুসলিম ছিল) আর হাজার বছর শাসন করা বৌদ্ধ আর জৈন ধর্মালম্বীরা কি বলবে?
***
আর একটা কথা না বললেই নয় শতবর্ষ ধরে দুই বাংলার উচ্চবর্ণের হিন্দুরা মুসলমানদের দেখিয়ে বেশ নাক সিটকিয়ে বলছে, 'ওই মুচলমান ন্যাড়ারা এয়েচে তো অচ্যুত হিন্দুদের থেকে।' এই বলে তারা নিজেদের বড় উঁচু জাত মনে করে আত্মপ্রসাদ অনুভব করে।
মুসলমান শাসকেরা যদি বিদেশী হয়ে থাকে এবং তারা হাজার বছরের পরিক্রমায় তাদের সংস্কৃতি যদি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি হিসেবে স্বীকৃতি না পায় তবে আর্য ব্রাহ্মন ক্ষত্রিয়রাও তো বিদেশী তাদের অনুপ্রবেশ করানো রথ বলি হোলি ডোলি ( আমি ঠিক জানি না আসলে কোনগুলো, এটা উদাহরণ মাত্র তবে ধারনা করি বর্তমান আমরা যেসব পালন করি তাঁর নব্বুইভাগ বাইরে থেকে অনুপ্রবেশ করা হয়েছে) সহ বাঙ্গালী হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতির সাথে মিশে যাওয়া বহু কালচারাল একটিভিটিস কেন আমাদের সংস্কৃতি হবে?
(মুসলমান শাসকেরা যে একেবারে ধোঁয়া তুলসীপাতা তা মোটেও নন। পৃথিবীর প্রায় সব শাসকেরাই হিংস্র নিষ্ঠুর অমানবিক নারী লোলুপ ভোগী ছিলেন। এরা জোর করে যে কিছু মানুষকে ধর্মান্তরিত করেনি তা মোটেও নয়। আর কিছু কলচর এটা নিজেদের মনমতো করেছেন, যখন যেমন যা চেয়েছেন। একসময়সেটাকেই আঁকড়ে ধরে আমরা আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ করে জান কুরবান করে ফেলেছি)
* গতকাল ব্লগার ঢাবিয়ানের পোস্টে আমি বাংলায় গত কয়েকশ বছরে বিদেশী রক্ত আর ধর্মান্তরিত মুসলিমদের অনুপাতের আদমশুমারীর একটা চিত্র আমি দিয়েছি।
লিঙ্কঃ স্বদেশী বোধ জাগ্রত করুন
***তথ্যগত ভুল থাকতে পারে। বিষয়টা নিয়ে যুক্তিতর্ক গঠনমূলক আলোচনা হতে পারে কিন্তু কুতর্ক, ধর্ম নিয়ে ব্যাঙ্গ তামাশা, কিংবা
উগ্র মৌলবাদী আচরন গ্রহণযোগ্য হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫১