somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বিকৃত চেতনা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বিকৃত চেতনা:-[/su
১৪ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস বা World Valentin's Day. এক সময় যে দিবস টি পালিত হত" আধ্যাত্মিক উৎসব " বা "শোকের দিবস" হিসেবে, সময়ের ব্যবধানে বিকৃত চেতনায় আজ তা ভালবাসা দিবসে পরিণিত হয়েছে। ভালবাসা দিবসের বিশ্লেষণ ও আমার মতামত :-
ভালবাসা দিবসের প্রতিটি বর্ণনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়- রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস-এর আমলের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেনটাইন ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপী এবং খৃষ্টধর্ম প্রচারক। আর রোম সম্রাট ছিলেন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের তরফ থেকে তাকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হ’লে ভ্যালেন্টাইন তা অস্বীকার করেন। ফলে তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। ২৭০ খৃস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্রাট ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। সুতরাং খ্রিস্টানদের উচিৎ এই দিন গির্জায় গিয়ে সেন্ট ভেলেন্টাইন এর জন্য প্রার্থনা করা। যীশু খ্রিষ্ট কে যেই দিন ক্রুশবিদ্ধ করা হয় সেই দিন টা ছিল জুমাবার। " গুড ফ্রাইডে" হিসেবে খ্রিস্টানরা এই দিন উৎযাপন করে। গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করে। সেন্ট ভেলেন্টাইনকে যেহেতু যীশু খ্রিস্ট এর খ্রিস্টান ধর্ম প্রাচারের দায়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় সেহেতু এই দিন তার জন্য প্রার্থনা করাই একমাত্র সমীচিন।
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে ম্যাসাকার- ১৯২৯ সালের এই দিনে আমেরিকার শিকাগো শহরে ৭ ব্যাক্তি কে গ্যারাজের মধ্যে নৃশংস ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় যা ভ্যালেন্টাইন ডে ম্যাসাকার হিসেবে খ্যাত। সুতরাং আমেরিকানদের উচিৎ এই দিনে ভালবাসার নামে নষ্টামি বাদ দিয়ে তাদের জন্য প্রার্থনা করা।
বাংলাদেশের সাথে এই ভালবাসা দিবস পালন মানায় না। কেননা এই দিনের ইতিহাসের সাথে সেন্ট ভেলেন্টানের নাম জড়িত যিনি ছিলেন একজন খিস্টান পাদ্রী। খিস্টানদের সাথে সম্পর্কিত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দিবসের উদ্ভব। বাংলাদেশে বর্তমানে যে চেতনায় ভালবাসা দিবস পালিত হচ্ছে সেই চেতানায় ভালবাসা দিবস হওয়া উচিৎ ছিল সম্রাট শাহজাহানের তাজমহল নির্মাণ করার দিন কিংবা নির্মানের শেষ দিন । বহুদিন প্রতিক্ষার পর চণ্ডিদাস ও রজকিনি যে দিন পরস্পর প্রথম মিলিত হয়েছিল সেই দিনকে ভালবাসা দিবস পালন করা অনেকটা লজিকেল।
আমরা মানুষ হিসাবে সব ভালোকে ভালোবাসি বলেই ভালবাসার মধ্যে আছি। পশুবৃত্তির একদিনের ভালবাসা হাজার দিনের ভালবাসাকে অপমান করার শামিল। তাই কোন পশুবৃত্তি নয়, কোন বেয়ায়াপনা নয়। কারণ মানুষ "আশরাফুল মাখলূখাত"। আমাদের আশে-পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আদর-অনাদরে পড়ে থাকা মানুষগুলোর কথা ভাবার বড় প্রয়োজন।
"বিশ্ব ভালবাসা দিবস" বা ''ভ্যালেন্টাইনস ডে'' এর মানে এই নয় যে তা জমা করে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী পালন করতে হবে। আমরা মানুষকে ভালোবাসব প্রতিটি ক্ষণে, প্রতিদিন, প্রতিটি কাজে। আর আমদের জন্ম হয়েছে ভালবাসার মধ্য দিয়ে। সুতরাং বছরের একদিন প্রেমিক প্রেমিকা দুই জনের মধ্যে ভালবাসা কে সিমাবদ্ধ রাখলে ভালবাসার প্রতি অবিচার করা হবে।
খৃস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন উৎসব পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বিরত থাকার জন্যে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এছাডা অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময় এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়।

ভালবাসা দিবস কী?
বছরে মাত্র একটি দিন ও রাত প্রেম সরোবরে ডুব দেয়া, সাঁতার কাটা, চরিত্রের নৈতিক ভূষণ খুলে প্রেম সরোবরের সলিলে হারিয়ে যাওয়ার দিবস হচ্ছে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বা ‘ভালবাসা দিবস’।
বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইন ডে :
বাংলাদেশের পত্রিকা যায়যায় দিনের সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান বাংলাদেশের ভালোবাসা দিবসের জনক। ভালবাসায় মাতোয়ারা থাকে ভালবাসা দিবসে রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলো। পার্ক, রেস্তোরাঁ, ভার্সিটির করিডোর, টিএসসি, ওয়াটার ফ্রন্ট, ঢাবির চারুকলার বকুলতলা, আশুলিয়া- সর্বত্র থাকে প্রেমিক-প্রেমিকাদের তুমুল ভিড়। ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে’ উপলক্ষে অনেক তরুণ দম্পতিও হাযির হয় প্রেমকুঞ্জগুলোতে।
ভালবাসা দিবস উদ্যাপনের সূচনা
১৪ শতকের আগেও ভ্যালেন্টাইন দিবসের সাথে ভালবাসার কোন সম্পর্ক ছিল না। বিখ্যাত ইংরেজ লেখক জেওফ্রে চসার (Geoffery Chaucer) তার ‘The Parliament of Fowls’ কবিতায় পাখিকে প্রেমিক-প্রেমিকা হিসাবে কল্পনা করেছেন। মধ্যযুগে ফ্রান্সে এবং ইংল্যান্ডে বিশ্বাস করা হ’ত যে, ফেব্রুয়ারী মাস হ’ল পাখির প্রজনন কাল। চসার তার কবিতায় লিখেছেন, ‘For this was on St. valentine’s day, when every fowl cometh there to choose his mate.’ বস্ত্ততঃ চসারের এ কবিতার মাধ্যমেই ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র মধ্যে ভালবাসা জিনিসটি ঢুকে যায় এবং আস্তে আস্তে ব্যাপকতা লাভ করে। লেখক Henry Ansgar Kelly তার ‘Chaucer and cult of Saint Valentine’ বইতে এ ব্যাপারটি ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। মূলতঃ আজকের ভালবাসা দিবসের উৎপত্তি ভালবাসা দিবস হিসাবে হয়নি।


ইতিহাসে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’
‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র ইতিহাস প্রাচীন। এর উৎস হচ্ছে ১৭শ’ বছর আগের পৌত্তলিক রোমকদের মাঝে প্রচলিত ‘আধ্যাত্মিক ভালবাসা’র উৎসব। এ পৌত্তলিক উৎসবের সাথে কিছু কল্পকাহিনী জড়িত ছিল, যা পরবর্তীতে রোমীয় খৃষ্টানদের মাঝেও প্রচলিত হয়। এ সমস্ত কল্প-কাহিনীর অন্যতম হচ্ছে, এ দিনে পৌত্তলিক (অগ্নি উপাসক) রোমের পৌরাণিক কাহিনীতে বর্ণিত রোমিউলাস নামক জনৈক ব্যক্তি একদা নেকড়ের দুধ পান করায় অসীম শক্তি ও জ্ঞানের অধিকারী হয়ে প্রাচীন রোমের প্রতিষ্ঠা করেন। রোমানরা এ পৌরাণিক কাহিনীকে কেন্দ্র করে ১৫ ফেব্রুয়ারী উৎসব পালন করত। এ দিনে পালিত বিচিত্র অনুষ্ঠানাদির মধ্যে একটি হচ্ছে, দু’জন শক্তিশালী পেশীবহুল যুবক গায়ে কুকুর ও ভেড়ার রক্ত মাখত। অতঃপর দুধ দিয়ে তা ধুয়ে ফেলার পর এ দু’জনকে সামনে নিয়ে বের করা হ’ত দীর্ঘ পদযাত্রা। এ দু’যুবকের হাতে চাবুক থাকত, যা দিয়ে তারা পদযাত্রার সামনে দিয়ে অতিক্রমকারীকে আঘাত করত। রোমক রমণীদের মাঝে কুসংস্কার ছিল যে, তারা যদি এ চাবুকের আঘাত গ্রহণ করে, তবে তারা বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পাবে। এ উদ্দেশ্যে তারা এ মিছিলের সামনে দিয়ে যাতায়াত করত।
রোমকরা খৃষ্টধর্ম গ্রহণের পরও এ উৎসব উদ্যাপনকে অব্যাহত রাখে। কিন্তু এর পৌত্তলিক খোলস পাল্টে ফেলে খৃষ্টীয় খোলস পরানোর জন্য তারা এ উৎসবকে ভিন্ন এক ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট করে। সেটা হচ্ছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক জনৈক খৃষ্টান সন্ন্যাসীর জীবনোৎসর্গ করার ঘটনা। ইতিহাসে এরূপ দু’জন সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের কাহিনী পাওয়া যায়। এদের একজন সম্পর্কে দাবী করা হয় যে, তিনি শান্তি ও প্রেমের বাণী প্রচারের ব্রত নিয়ে জীবন দিয়েছিলেন। তার স্মরণেই রোমক খৃষ্টানরা এ উৎসব পালন অব্যাহত রাখে। কালক্রমে ‘আধ্যাত্মিক ভালবাসা’র উৎসব রূপান্তরিত হয় জৈবিক কামনা ও যৌনতার উৎসবে। পরবর্তীতে রোমানরা খৃষ্টানদের অধীনে আসলে তাদের অনেকেই খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করে। খৃষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ধর্মবিরোধী, সমাজ বিধ্বংসী ও ব্যভিচার বিস্তারকারী এ প্রথার বিরুদ্ধে ছিলেন। এমনকি খৃষ্টধর্মের প্রাণকেন্দ্র ইতালীতে এ প্রথা অবশেষে বিলুপ্ত করা হয়। কিন্তু আঠারো ও ঊনিশ শতকে তা পুনরায় চালু হয়।
ক্যাথলিক বিশ্বকোষে ভ্যালেনটাইন ডে সম্পর্কে তিনটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কিন্তু বিভিন্ন বইয়ে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা উদ্ধৃত হয়েছে। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ কয়েকটি ঘটনা নিম্নরূপ :
১ম বর্ণনা : রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস-এর আমলের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেনটাইন ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপী এবং খৃষ্টধর্ম প্রচারক। আর রোম সম্রাট ছিলেন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের তরফ থেকে তাকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হ’লে ভ্যালেন্টাইন তা অস্বীকার করেন। ফলে তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। রোম সম্রাটের বারবার খৃষ্টধর্ম ত্যাগের আহবান প্রত্যাখ্যান করলে ২৭০ খৃস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্রাট ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন।
২য় বর্ণনা : খৃষ্টীয় ইতিহাস অনুযায়ী এ দিবসের সূত্রপাত হয় ২৬৯ খৃষ্টাব্দে। সাম্রাজ্যবাদী, রক্তলোলুপ রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের দরকার ছিল এক বিশাল সৈন্যবাহিনীর। এক সময় তার সেনাবাহিনীতে সেনা সংকট দেখা দেয়। কিন্তু কেউ তার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে রাযী নয়। সম্রাট লক্ষ্য করলেন যে, অবিবাহিত যুবকরা যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে অত্যধিক ধৈর্যশীল। ফলে তিনি যুবকদের বিবাহ কিংবা যুগলবন্দী হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। যাতে তারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ না করে। তার এ ঘোষণায় দেশের তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীরা ক্ষেপে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক ধর্মযাজকও সম্রাটের এ নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে পারেননি। প্রথমে তিনি ভালবেসে সেন্ট মারিয়াসকে বিয়ের মাধ্যমে রাজার আদেশকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার গীর্জায় গোপনে বিয়ে পড়ানোর কাজ চালাতে থাকেন। একটি রুমে বর-বধূ বসিয়ে মোমবাতির স্বল্প আলোয় ভ্যালেন্টাইন ফিস ফিস করে বিয়ের মন্ত্র পড়াতেন। কিন্তু এ বিষয়টি এক সময়ে সম্রাট ক্লডিয়াস জেনে যান। তিনি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ২৭০ খৃষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইনকে হাত-পা বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে সম্রাটের সামনে হাযির করলে তিনি তাকে হত্যার আদেশ দেন। ঐ দিনের শোক গাঁথায় আজকের ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’।
৩য় বর্ণনা : গোটা ইউরোপে যখন খৃষ্টান ধর্মের জয়জয়কার, তখনও ঘটা করে পালিত হ’ত রোমীয় একটি রীতি। মধ্য ফেব্রুয়ারীতে গ্রামের সকল যুবকরা সমস্ত মেয়েদের নাম চিরকুটে লিখে একটি জারে বা বাক্সে জমা করত। অতঃপর ঐ বাক্স হ’তে প্রত্যেক যুবক একটি করে চিরকুট তুলত, যার হাতে যে মেয়ের নাম উঠত, সে পূর্ণবৎসর ঐ মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত। আর তাকে চিঠি লিখত, এ বলে ‘প্রতিমা মাতার নামে তোমার প্রতি এ পত্র প্রেরণ করছি।’ বৎসর শেষে এ সম্পর্ক নবায়ন বা পরিবর্তন করা হ’ত। এ রীতিটি কতক পাদ্রীর গোচরীভূত হ’লে তারা একে সমূলে উৎপাটন করা অসম্ভব ভেবে শুধু নাম পাল্টে দিয়ে একে খৃষ্টান ধর্মায়ন করে দেয় এবং ঘোষণা করে এখন থেকে এ পত্রগুলো ‘সেন্ট ভ্যালেনটাইন’-এর নামে প্রেরণ করতে হবে। কারণ এটা খৃষ্টান নিদর্শন, যাতে এটা কালক্রমে খৃষ্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়।
৪র্থ বর্ণনা : প্রাচীন রোমে দেবতাদের রাণী জুনো (Juno)’র সম্মানে ১৪ ফেব্রুয়ারী ছুটি পালন করা হ’ত। রোমানরা বিশ্বাস করত যে, জুনোর ইশারা-ইঙ্গিত ছাড়া কোন বিয়ে সফল হয় না। ছুটির পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারী লুপারকালিয়া ভোজ উৎসবে হাযারো তরুণের মেলায় র্যাফেল ড্র’র মাধ্যমে সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়া চলত। এ উৎসবে উপস্থিত তরুণীরা তাদের নামাংকিত কাগজের সি­প জনসম্মুখে রাখা একটি বড় পাত্রে (জারে) ফেলত। সেখান থেকে যুবকের তোলা সি­পের তরুণীকে কাছে ডেকে নিত। কখনও এ জুটি সারা বছরের জন্য স্থায়ী হ’ত এবং ভালবাসার সিঁড়ি বেয়ে বিয়েতে পরিণতি ঘটত।
৫ম বর্ণনা : রোমানদের বিশ্বাসে ব্যবসা, সাহিত্য, পরিকল্পনা ও দস্যুদের প্রভু ‘আতারিত’ এবং রোমানদের সবচেয়ে বড় প্রভু ‘জুয়াইবেতার’ সম্পর্কে ভ্যালেনটাইনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। সে উত্তরে বলে, এগুলো সব মানব রচিত প্রভু, প্রকৃত প্রভু হচ্ছে, ‘ঈসা মসীহ’। এ কারণে তাকে ১৪ ফেব্রুয়ারীতে হত্যা করা হয়।
৬ষ্ঠ বর্ণনা : কথিত আছে যে, খৃষ্টধর্মের প্রথম দিকে রোমের কোন এক গীর্জার ভ্যালেন্টাইন নামক দু’জন সেন্ট (পাদ্রী)-এর মস্তক কর্তন করা হয় নৈতিক চরিত্র বিনষ্টের অপরাধে। তাদের মস্তক কর্তনের তারিখ ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারী। ভক্তেরা তাদের ‘শহীদ’ (!) আখ্যা দেয়। রোমান ইতিহাসে শহীদের তালিকায় এ দু’জন সেন্টের নাম রয়েছে। একজনকে রোমে এবং অন্যজনকে রোম থেকে ৬০ মাইল (প্রায় ৯৭ কি.মি.) দূরবর্তী ইন্টারামনায় (বর্তমান নাম Terni) ‘শহীদ’ করা হয়। ইতিহাসবিদ কর্তৃক এ ঘটনা স্বীকৃত না হ’লেও দাবী করা হয় যে, ২৬৯ খৃষ্টাব্দে ‘ক্লাউডিয়াস দ্যা গথ’-এর আমলে নির্যাতনে তাদের মৃত্যু ঘটে। ৩৫০ খৃষ্টাব্দে রোমে তাদের সম্মানে এক রাজপ্রাসাদ (Basilica) নির্মাণ করা হয়। ভূগর্ভস্থ সমাধিতে একজনের মৃতদেহ আছে বলে অনেকের ধারণা।
অন্য এক তথ্যে জানা যায়, রোমে শহীদ ইন্টারামনা গীর্জার বিশপকে ইন্টারামনা ও রোমে একই দিনে স্মরণ করা হয়ে থাকে। রোমান সম্রাট ২য় ক্লাউডিয়াস ২০০ খৃষ্টাব্দে ফরমান জারী করেন যে, তরুণরা বিয়ে করতে পারবে না। কারণ অবিবাহিত তরুণরাই দক্ষ সৈনিক হ’তে পারে এবং দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। ভ্যালেন্টাইন নামের এক তরুণ সম্রাটের আইন অমান্য করে গোপনে বিয়ে করে। কেউ কেউ বলেন, রাজকুমার এ আইন লংঘন করেন।
৭ম বর্ণনা : ৮২৭ খৃষ্টাব্দে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক ব্যক্তি রোমের পোপ নির্বাচিত হয়েছিল। তিনি তাঁর চারিত্রিক মাধুর্য এবং সুন্দর ব্যবহার দিয়ে অল্প দিনের মধ্যেই রোমবাসীর মন জয় করে নিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ৪০ দিন দায়িত্ব পালনের পরই তাঁর জীবনাবসান ঘটে। প্রিয় পোপের মৃত্যুর পর তাঁর স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারী রোমবাসী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। অনেকের মতে এভাবেই ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র সূচনা হয়।






সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×