বৃষ্টি ও ঝড়। এপাশ ওপাশ। এক দেয়ালের। বৃষ্টিগুঁড়ি মুখে এসে লাগে। বুধবারে বিয়ে।
কুকুরটাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গেছে জানলা দিয়ে। ভীষণ জ্যাম-এও খুব দ্রুত ছুটে যাওয়া কোনো এক গাড়ি। আমরা দেখিনি। দেখেছি কুকুর। রাস্তার ধারে অদ্ভুত শোয়া। মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছে। পিচের রাস্তা ভিজে গেছে। রাতের আঁধারেও।
বেড়াল বেড়াল। কালো বেড়াল। কুচকুচে বেড়াল। ধবধবে কালো। এপাশে ওপাশে। ভীষণ দ্রুত। এবং ক্ষীপ্র। আদুরে নখ। আদুরে দাঁত। আলতো কামড়। লেজ নাচানো। ঝাঁপিয়ে পড়া। কোলে মাথা রাখা। ঘুরঘুরঘুর। দুঃস্বপনে।
কুকুর ঘিরে সেমিসার্কেল। অর্ধবৃত্তের মতো সেমিসার্কেল। অর্ধপরিধিতে ফকির ফাকরা। গার্মেন্টসনারী। কুকুর জীবিত। সাদা রঙের। কার্টুনে দেখা কুকুরের মতো। বিদেশি কুকুর। পাক নাকি জাত। মাথাটা গোল। নাকখানি ভোঁতা। বোকাসোকা ভাব। নাদুশনুদুশ। গলা ও ঘাড়ে কোঁচকানো চর্বিত চামড়া। পিচঢালা পথে কালো কালো পানি। কুকুরটার মাথা থেকে আসা।
আশেপাশে কোনো পশু হাসপাতাল নেই। কুত্তার আবার হোসপিটাল আসে নাকি! বুকটা আরেকটু ঢেকে দিয়ে, কোনো এক গার্মেন্টস। ভদ্রলোকের সমাগমে একটু সভ্যতা।
তার অভিষেক হলো চোখের সামনে। আহত তেলাপোকা। খয়েরি রঙের। কালোয় খয়েরিতে মানায় নি ভালো। একবার ছেড়ে দেয়। আবার খামচে ধরে। বা হাতে ডান হাতে নাড়াচাড়া করে। নড়ে উঠলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। চলে যেতে দেয়। পুনরাবৃত্তি। নব নব ঢঙে। একঘেয়ে নয়।
কুকুরটাকে কেউ কোলে নেয় না। সবাই শুধু ভদ্রলোককে কষে গালাগালি। এভাবেই যদি ছুঁড়ে ফেলে দেয়া, কেনো ঘরে তোলা। জানলা দিয়ে! কী নৃশংস! এবং অমানবিক! মানবজাতির জাত গেল গা! কুকুর সথর ডুকরে কাঁদে। হালকা হালকা কেঁপে ওঠে। নাটকটাকে জমিয়ে রাখে। বেঁচে আছে জানান দিয়ে।
আমরা বাস ধরি। কোলাকুলি করি। গলাগলি করি। ডলাডলি করি। বলাবলি করি। গালাগালি করি।
ক্লান্ত শ্রান্ত শ্রমিক দেহ শুয়ে থাকে পথে। ক্যামেরা তাহার লুঙ্গিকে ধরে। আজকে রাতের চ্যানেল সংবাদের অসাধারণ শট।
কুকুর শুয়ে থাকে কুকুরের মতো। আমরা দেখি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৪৮