পরীক্ষা দিয়ে ফিরলাম।
অনেক হাঁটি আমি। প্রায় পুরো সিলেট শহর চষে বেড়াই স্যান্ডেলে চড়ে। কেবল বাসা-ক্যাম্পাস-বাসা হাঁটি না। তাও একদিন হেঁটে হেঁটেই বাসায় চলে এসছিলাম!
হেঁটে হেঁটে ফিরছিলাম। সারাদিনের কড়া রোদ, শেষ বিকেলে টায়ার্ড। মেঘ আসছে পুরো আকাশ জুড়ে। অর্ধেকের বেশি কালো মেঘ। আবার একপাশে বেশ কড়া রোদ। ফলে একটা অদ্ভুত রকমের দৃশ্য। পেছনের আকাশ নিকষ কালো মেঘ, তার সামনে ফোরগ্রাউন্ডে সবুজ গাছপালা আর কয়েকটা বাসা, ঐগুলাতে কড়া রোদ! অনেক রহস্যময় একটা দৃশ্য। এইচডিআর ছবির মতো। খুব অন্যরকম।
তার আগে যখন বাসা থেকে বের হই। দুপুর বেলা। একটার মতো। প্রচণ্ড রোদ। প্রচণ্ড মানে প্রচণ্ড প্রচণ্ড প্রচ্চ্চ্চ্চণ্ড! উফ মাথা ব্যাথা করছিলো! তাকাতে পারছিলাম না। চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছিলো। পীচ এর রাস্তার রিফ্লেকশনেই এই অবস্থা। অভারএক্সপোস্ড! হাহাহা। নিজেকে একটা হাকিকোমুরির মতো লাগছিল। একটা শর্টফিল্ম ছিলো শেইকিং টোকিও। ঐখানের মূল চরিত্রটা থাকে হাকিকোমুরি। হাকিকোমুরি হচ্ছে যারা স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকে। ঘর থেকে বের হয় না। অনেক মাস। অনেক বছর। শেইকিং টোকিওর হাকিকোমুরিটা ১০ বছর ধরে ঘর থেকে বের হয় নি। ওর বাসা থেকে ওকে কুরিয়ারে টাকা পাঠায়। সে ফোন করে হোম সার্ভিসে খাবার এবং অন্যান্য সবকিছু আনায়। এইভাবে পিৎযা খেয়ে খেয়ে কাটিয়েছে ১০ বছর। ১০ বছরে কারো সাথে আই কনটাক্টও হয় নি। যারা পিৎযা দিতে আসে, তাদেরও চোখে তাকায় না, চুপচাপ টাকা দিয়ে প্যাকেটটা হাতে তুলে নেয়। ১০ বছর পরে সে ঘর থেকে বের হয়। বাধ্য হয়। এইটা নিয়েই গল্প। যাই হোক, তো যখন সে বের হয়, বাইরের রোদ সহ্য করতে পারে না। বাসায় থাকতে থাকতে তার চোখের এপার্চার কমে যায় বোধহয়, বের হতেই চোখ ঝলসানো রোদ, ঠিক যেমন আজকে আমার।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪০