দেশে মনে হচ্ছে, ক্রিকেট খেলা ইসলামিক ভাবে জায়েজ, এমন ফতুয়া জারি হয়েছে।
১.
সারাদিন হারাম ক্রিকেট খেলে, হারাম ইনকাম করে, হারাম খেয়ে, পরের দিনই ইসলামিক পোস্ট।
অনেকটা মসজিদে বিয়ে করে, পরের দিন ডিজে পার্টি করার মত।
যদি সত্যিই ইসলামিক জীবন যাপন করতে চাও, প্রথম কাজ -হারাম থেকে দূরে থাকা। কিংবা দূরে থাকার চেষ্টা অন্তত করা। কিন্তু আজকে যখন বিসিবি ডাকলো তখন কিন্তু খেলা থেকে দূরে থাকার কোন ইঙ্গিত দেয় নি উল্টো ক্ষমা চেয়েছে, নিজের রিযিকের জন্য। এটাকেই হয়ত বলে ডাবল স্ট্যান্ডার্ডনেস। মজার বিষয় হচ্ছে, খেলোয়াড় কে সমর্থন করে হাজার হাজার জন পোস্ট দিচ্ছে, খোঁজ করলে দেখা যাবে, অধিকাংশই ব্যক্তি জীবনে ইসলাম ত চর্চাই করে না বরং বিভিন্ন হারাম কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে, এমনও আছে অধিকাংশ তাদের সহধর্মিণীর ব্যপারে যথেষ্ট উদাসীনও।
একটু আগে দেখলাম, আরেক খেলোয়াড়ও এটাকে সমর্থন করছে, যা অনুমেয়। এদেশে অসম্ভব বলে আসলে কিছু ই নেই-আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিতে মানা করে পরে দেখা যায় প্রথমে উনিই পাড়ি দিচ্ছেন। তাই ত কবি বলেছেন-এমন দেশটি কোথাও তুমি পাবে নাকো খোঁজে।
২. চাকুরি করা, না করা টা সমস্যা না।
মনে করুন দেশের কোন মহিলাই চাকুরি করে না। দেশে কোন মহিলা শিক্ষক নেই, দেশে কোন মহিলা ডাক্তার নেই, মহিলা নার্স নেই, মহিলা কোন কর্মকর্তাই নেই। সব মহিলা ঘরে বসে, সন্তান, স্বামী, শ্বশুর শাশুড়ির হক আদায় করছে।
এখন আপনার বৌ অসুস্থ হলে কাকে দেখাবেন, পুরুষ ডাক্তার কে, পুরুষ নার্স সারাক্ষণ আপনার বৌয়ের সেবা করবে, পুরুষ ডাক্তার আপনার বৌকে ডেলিভারি করাবে? মানলাম করাবে, সেটারও একটা ইসলামিক ব্যখ্যা দিয়ে দিলেন। আপনার সন্তানকে কে পড়াবে? মানলাম পড়াবেন না, ওকে সন্তান অশিক্ষিতই থাকবে, না এখন বলবেন, আপনি পড়াবেন, ওকে পড়ান। এভাবে একদিন দেশের সব মহিলারা অর্ধশক্ষিত থাকবে, এটাই ত চান। কিন্তু ইসলামের প্রথম শব্দই হচ্ছে, পড় তোমার প্রভূর নামে। এখানে নারী পুরুষ কে আলাদা করে নাই। সবাইকেই বলছে জ্ঞান অর্জন৷ করতে। আপনি অনেক ব্যাখ্যা দাড় করাতে পারবেন কিন্তু জ্ঞান অর্জন করা থেকে মেয়েদের দূরে রাখার কোন ব্যাখ্যা ইসলামিক ভাবে দিতে পারবেন না।
সমস্যা চাকুরি নিয়ে না, বরং কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নিয়ে। মেয়েরা যেন পর্দা বা বেপর্দা যার যা খুশি সে মতে চাকুরি করতে পারে তা নিশ্চিত করাটাই বড় চ্যালেন্জ। এটা তে কথা বলা উচিত। এবং এখানে সবচেয়ে এগিয়ে আশা উচিত পুরুষদেরই। অথচ পুরুষ সেটা করবে না -এটাই চরম সত্য, এটাই বাস্তবতা।
এটাকে এড়ানোর জন্যই নারীদের কাঁধে সবাই বন্দুকের নল রাখে।