somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি দেখার কথা কি দেখছি ? কি শুনার কথা কি শুনছি? ৪২ বছর পরেও আমি স্বাধীনতা কি?? শিখছি !!!

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীনতা মানে কি স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার নির্মাণ, রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্মৃতি স্তম্ভ বানানো, মাইকে গলা ফাটানো [কে কার চাইতে ভালো বক্তৃতা দিতে পারে এই প্রতিযোগিতা ], পোস্টার লাগাইয়া মানুষের নতুন রং করা দেওয়াল নষ্ট করা, রাস্তায় রাস্তায় ব্যানার আর শত শত তোরণ বানানো আর দিবস শেষে ডেকোরেটর মালিকদের বিল পরিশোধে গরিমসি, তোরন বানাতে গিয়ে পাকা রাস্তায় শাবল দিয়ে গুঁতিয়ে গর্ত করা, রাজপথে স্বাধীনতা স্বাধীনতা বইলা মিছিল করে অসহনীয় যানজট বাঁধানো [মৃতপ্রায় রোগী নিয়ে হাসপাতালগামী এ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা], দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশের গান, এরপর বাংলা আধুনিক গান, ছায়াছবির গান, এরপর হিন্দি গান আর সবশেষে ইংলিশ গান; স্বাধীনতা অনুষ্ঠানের নাম করে মহল্লার লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে তা থেকে কিছু নিজের পকেটে ভরা আর রাতে আয়োজক কয়েকজন মিলে মজ-মাস্তি করা। মাইকে উচ্চ ভলিউমে গান বাজিয়ে আশেপাশের লোকজনের কানে তালি লাগানো আর রাতের ঘুম হারাম করে দেওয়া। যার যত খুশি ইচ্ছা আনন্দ বিনোদন করবে তাই বলে অনুষ্ঠানের নাম করে পরের টাকা দিয়ে কেন!

আমাদের দেশের ৯০ ভাগ লোক গরীব, এই যে এত স্বাধীনতা আর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হয় তাতে কয়জন গরীব লোক অংশগ্রহণ করে। গ্রাম এলাকায় কয়জন যায় শহীদ মিনারে ফুল দিতে, এছাড়াও শহরে কয়জন দিনমজুর যায় ঐসব অনুষ্ঠানে... হাঁ যায়, কারা যায় ঐ টোকাই গুলিই যায় - ছুঁড়ে ফেলা পানির বোতল, পলিথিন, ঠোঙ্গা বা লিফলেটের কাগজ কুঁড়াতে যা বেঁচে তাদের পেটের ক্ষুধা মেটায় আর যায় হকাররা জীবিকার তাগিদে। যারা সত্যিকারই মন থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যায় তারা ঐ কার্বন কালি দিয়ে লেখা বিশাল বিশাল ব্যানার নিয়ে যায় না,ফুল দেওয়ার সময় ফটোসেশনের জন্য পোজ দেয় না,আগে থেকেই সাংবাদিকদের খবর দিয়ে রাখে না নিউজ কাভারের জন্য।

স্বাধীনতা মানে অন্যের শোষণ,বঞ্চনা, চোখ রাঙ্গানো থেকে মুক্তি ; পেটের ক্ষুধা থেকে মুক্তি কিন্তু এখন হচ্ছে কি কোন কোন বিদ্যালয়ের ছাদ নেই, ছাত্ররা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করে আর এদিকে পারলে প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার বানাও, রাস্তাগুলো এমনিতেই অপ্রশস্ত, গাড়ি চলতে পারে না অথচ মোড়ে মোড়ে গোলচত্বরগুলো বড় করে তাতে স্মৃতি স্তম্ভ বসাও, দেশের টিভি চ্যানেল গুলোতে স্বাধীনতা অনুষ্ঠান প্রচার করো, মুক্তিযুদ্ধ নিয়া টকশোর পর টকশো করে সাধারন জনগনকে বিরক্ত বানাইয়া হিন্দি সিরিয়াল আর ইংলিশ চ্যানেল দেখতে বাধ্য কর তাতে লাভ কি হচ্ছে ডিশ এন্টেনা ব্যবসায়ীরা ডাউনলিংক বিল হিসেবে কোটি কোটি টাকা ইন্ডিয়ান টিভি চ্যানেলকে দিচ্ছে।

কোন কোন মুক্তিযুদ্ধা পথে পথে ভিক্ষা করে, চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরে আর এরা চা-কফি খেতে খেতে টকশো করে, সেমিনার বা সমাবেশ শেষে বিরিয়ানির প্যাকেট আর বক্তাদের তো সম্মানি বাবদ খামে টাকা।
কাঙ্গালিভোজে মারিং-কাটিং নিয়ে মারামারি.....

সরকারি চাকরির পিছনে ঘুরে ঘুরে বিফল হয়েছি অথচ বাপে যদি একটা মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিত, বাপের দোষ দিয়াও লাভ নাই সে ৭১ এ পড়ত ক্লাস নাইনে ঐটুকুন বয়সে আর কিইবা বুঝত। তার বন্দুক চালনার সাহস ছিল না তয় আশপাশ গ্রামের বড়ভাইদের যে মুক্তিযোদ্ধা দলটি ছিল তাদের বন্দুক, গুলি পরিস্কার করে দিত আর রাজাকার-পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্হান জানাত। একবার নৌকাতে করে হিন্দু দাসে বাড়ীতে লুটপাট চালানো রাজাকার-পাকিস্তানিদের খবর নিতে গিয়ে বন্দুকের মুখে পড়ে, পানিতে লাভ দেওয়ায় গুলি লাগে নি; পানির নিচে ডুব দিতে দিতে বিল পাড় হয়ে বাড়িতে এসে মৃতপ্রায় অবস্হায় পৌছায়। অথচ যুদ্ধ শেষে সরকারী লোক এসে আমার দাদার কাছে ঘুষ চায়; দাদা ছিলেন অশিক্ষিত মানুষ, মুক্তিযোদ্ধা সনদের জন্য পয়সা দেওয়ার কোন প্রয়োজন মনে করেন নি। বাবার বন্ধুও টাংগাইলের ভূয়াপুরে যমুনার চর এলাকায় যুদ্ধ করেছেন সেও ঘুষ দিয়ে সনদ না নেওয়ায় আজ তার দুই ছেলে বেকার হয়ে ঘুরছে। অথচ উনার অফিস কলিগ সাধারন বীমা কর্পোরেশনের আনন্দ বাবু ছিল রাজাকার, হিন্দু চতুর রাজাকার [যার সাক্ষী উনি নিজেই] সে কিনা এখন মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে ঘুরে।

আজ মুক্তিযোদ্ধা কোঠার নামে নাতি-নাতনীদের বি.সি.এস সহ বিভিন্ন সরকারী চাকরি দেওয়ায় যেসব মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অনেককেই দেখা যাবে ভবিষ্যতে আর স্বাধীনতা নিয়ে লিখতে কলম বা কি-বোর্ড চাপবে না... স্বাধীনতা স্বাধীনতা এইসব কথার প্রতি বিতশ্রদ্ধ হবে, অভক্তি চলে আসবে।

শুধুমাত্র সেসব মুক্তিযোদ্ধাদেরই সাধারন জনগণ সম্মান করবে যারা কিছু পাওয়ার আশায় যুদ্ধ করেন নি কিন্তু যারা এই মুক্তি যুদ্ধকে পুঁজি করে রুটি রুজি করে যাচ্ছে তাদেরকে নতুন প্রজন্ম হয়ত একদিন ন্যূনতম সম্মানটুকুও দেখাবে না। আর এই সব রাজনীতিবিদদের লুটেপুটে খাওয়ার কারনে ভবিষ্যতে যদি কখনও কোন বহিরাগত অশুভ শক্তি আসে নেতৃত্ব দিতে তখন ইয়াং প্রজন্মের অধিকাংশই এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে না।

মনে যা আসলো তাই আবল তাবল বলে গেলাম কেউ কিছু মনে করবেন না প্লিজ.... পৃথিবীতে বহু জাতিই পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি রক্ত ঝড়িয়েছে যেমন-ভিয়েতনাম এরা কেউই এত স্বাধীনতার কথা কইতে কইতে মুখে ফেনা তোলে না। তারা বিশ্বাস করে স্বাধীনতা মানে অন্যের শোষণ,বঞ্চনা,পেটের ক্ষুধা থেকে মুক্তি ..... ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা

কপি পেষ্ট
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×