টম ক্রুজ আর তার রিস্কি বিজনেস ক্যরিয়ার
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
টম ক্রুজ সাহেবের দিনকাল আগের মতো ভাল যাচ্ছে না, এটা সবার মত তিনি নিজেও জানেন। এক কালের রিস্কি বিজনেশ হিরোর নিজের ক্যরিয়ারই এখন হুমকির সম্মুখীন। তার নামের যাদুতে কি পরিমান ঢল নামে তা এখন বোদ্ধাদের অনুবীক্ষন যন্ত্রের নীচে। তার একটা বড় পরীক্ষা হবে তার নতুন ছবি 'ভ্যালকেরি'র বক্স অফিস সাফল্যের উপর।
গত দুইদিন ধরে ক্রুজ সাহেব টরন্টোতে ব্যাস্ত তার নতুন ছবি 'ভ্যালকেরি'র প্রচার উপলক্ষে। আগামী ২৫ডিসেম্বর ছবি মুক্তির দিন ধার্য হয়েছে, আর এই সুযোগে টরন্টোর চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের সহানুভুতি অর্জনই তার এবারের জন সংযোগের মুল লক্ষ্য। পায়ের নিচের যে জমিন হারিয়েছেন তিনি গত কয়েক বছরে-তার কতটুকু তিনি উদ্ধার করতে পারবেন তা নিয়ে অবশ্য অনেকেই সন্ধিহান। হেলা ফেলা কম কিছু তিনি তো করেন নি।
ক্রজ সাহেব তার ইউনাইটেড আর্টিস্টস ফ্লিম স্টুডিওএর অংশিদারী আর হলিউডে তার কারিশমা নিয়ে ভালই কাটাচ্ছিলেন। ব্যবসা বানিজ্য চলছিল ভালই-এরই মধ্যে ১৯৯০ সালের দিকে তার প্রথম বউ মিমি রজার্স এর মাধ্যমে তিনি জড়িয়ে পড়েন সিন্টোলজি নিয়ে। বিখ্যাত সাইন্স ফিকশন লেখক রন হুবার্ড এই সিন্টোলজির প্রতিষ্ঠা্তা। এই সিন্টোলজি এক মহা বিতর্কিত ধর্মীয় গ্রুপ- দেহ মন আত্মা নিয়ে তাদের কাজ কারবার, প্রচলিত মনোবিজ্ঞান আর মানসিক রোগ বিষয়ক যাবতীয় বিজ্ঞানকে তারা অপবিজ্ঞান মনে করে। কি ভাবে মনের স্তরের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা যায় এই সবের ফিরিস্তি নিয়ে চার্চ অফ সিন্টোলজি এখন ইউরোপ আমেরিকায় এক বিরাট প্রতিষ্ঠান। ক্রুজ সাহেব দাবী করলেন হুবার্ডের পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে তিনি ডাইলেক্সিয়া রোগ থেকে উদ্ধার পাইছেন। পরবর্তীতে সিণ্টোলজির প্রচার নিয়ে তিনি ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মানীতে তার প্রভাব কাজে লাগাতে থাকেন।
আমাদের ক্রুজ সাহেব ২০০৫ সালে হলিউডের অভিনেত্রী ব্রুক শিল্ডকে নিয়ে এক মন্তব্য করে বিরাট গাড্ডায় পড়ে যান । আগেই বলেছি চার্চ অফ সিন্টোলজি প্রচলিত মনোবিজ্ঞান আর মানসিক রোগ বিষয়ক যাবতীয় বিজ্ঞানকে অপবিজ্ঞান মনে করে। আর সিন্টোলজির এই তত্ব নিয়েই ক্রুজ সাহেব মাঠে নামলেন- এক সাক্ষাতকারে ব্রুক শিল্ড বলেছিলেন প্যাক্সিল ওষুধ তার ডিপ্রেশন এর চিকিৎসায় ভাল ফল দিয়েছে এবং তিনি সুস্থ্য হয়ে গেছেন। শুনে টম ক্রুজ মন্তব্য করলেন-- এই সব দাবী হইল বুজরুকি, সাইকিয়াত্রি হইল একটা অপবিজ্ঞান এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। স্বভাবতঃই এর প্রতিক্রিয়া হয় তীব্র। ব্রুক শিল্ড টমের সমালোচনা করে বলেছিলেন-এই মন্তব্য দ্বায়ীত্বজ্ঞানহীন এবং বিপদজনক। ক্রুজ সাহেব এবার তার বাড়াবাড়ি বুঝতে পেরে ব্রুক শিল্ডের কাছে মাপ চেয়ে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলেন।কিন্তু সাইন্টোলজি নিয়ে তার প্রচারনা চলতেই থাকে। এমনিতেই উগ্র মনোভাব, মাফিয়াদের সাথে যোগসুত্র, মেইন স্ট্রীমের ধর্মকে চ্যালেঞ্জ করা ইত্যাদি নিয়ে সিন্টোলজি এক মহা বিতর্কিত কাল্টে পরিনত হয়েছে। ফলে এ সবের সাথে সংশ্লিস্ট থাকার কারনে টম ক্রুজ এর জনপ্রিয়তায় বিরাট ধ্বস নামে।
সম্প্রতি টম ক্রুজ ঘোষনাও দিয়েছেন যে আপাতত তিনি সিন্টোলজি নিয়ে কোন প্রিচিং বা বক্তব্য দেবেন না। এগুলো থেকে একটু আলাদা থাকতে চান তিনি। তার ক্যরিয়ারকেই এখন তার কাছে এখন প্রধান।
কিন্ত 'ভ্যালকেরি' কি সেই ছবি যা ক্রুজ সাহেবকে তার হারানো সাম্রায্য ফিরিয়ে দেবে? কি ধরনের ছবি 'ভ্যালকেরি'?
হিটলারের জমানার শেষ কাল পর্বে জার্মান সেনাবাহিনীর কিছু অফিসার যুক্ত হয়ে পড়েছিল বেশ কিছু অর্ন্তঘাত মুলক ততপরতার সঙ্গে। হিটলার এর পতন হলে তার যাবতীয় কুকর্মের দায়-দায়ীত্ব নেওয়ার আশঙ্কা থেকে লক্ষ্য স্থির করা হয় হিটলারকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার। সেই এক কাহিনী নিয়েই গড়ে উঠেছে ‘ভ্যালকেরি। টম ক্রুজ অভিনয় করেছেন জার্মান সেনা বাহিনীর কর্নেল ক্লস ভন স্টাউফেনবার্গ এর চরিত্রে। ১৯৪৪ সালের ২০শে জুলাই নাজীদের নেতা হিটলারকে মেরে ফেলার জন্য এই কর্নেলের নেতৃত্বে এক গোপন পরিকল্পনা ফাঁদা হয়।
বলা বাহুল্য এই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। আর বাস্তবে হিটলারের মৃত্যু কিভাবে ঘটে সে কাহিনী তো আমরা জানিই ......
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি
মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সমস্যা মিয়ার সমস্যা
সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।
তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন