গল্পের চরিত্র যাই হোক মানুষগুলো খুবই সহজ সরল! এদের গুনাগুন গাইতে হলে প্রিয় মাইকেল দাদাকে আবার আসতে হবে! চরিত্রের সুবিধার জন্য এদের কে একবারে কাছ থেকে অবলোকন করার তেমন একটা দরকার পড়েনি। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য চালচলন দেখে অন্ধকারে কি জানি ছুড়ে মারে ওভাবেই বেছে নিয়েছি। লেখকের জান মালের নিরাপত্তার কারনে চরিত্রের নাম বদলানো হলো!
খুবই সাধারন একটা কাহিনী হবে, লন্ঠনে আগত সদ্য, পুরানো, অতি পুরানো, চাপাবাজ, গুটিবাজ, কিছু যুবক সম্ভব হলে যুবতীদের কাহিনী হতে পারে। নাটকে রুপ নেবার পর রাস্তায় চরিত্রের সাথে দেখা হলে তাকে খোচানো বা খেপানো বা তেলা মাথায় তেল শুকনা মাথায় ভাঙ্গ বেল চলবে না। এদের চরিত্র যেমন ছিল তেমনি থাকবে রুপায়নের পরেও যা আগেও তা।
কাহীনিকারের চরিত্র আসলে তেমন কোনো মানেই রাখে না, যাগ্গে মূল কথায় আসি। সম্প্রতি বাংলাদেশ লন্ঠন যৌথ প্রেযোজনায় যেহারে আমাদের বাংলাদেশের তরুণ সমাজ কে এদেশে ঠেলে দিয়েছে তাতে করে শুকরিয়া আদায় করা ছাড়া কোনো গতি দেখি না। নাটকের নাম করনে তেমন কোনো ভুমিকা উপসংহার নাই, আসলে এই টাইপের নাম শুনলে মানুষ মনে করে মাগো ভুতের ছবি মনে লয়, কিন্তু আসলে এইটা ভুতের ছবি না, এটা হুদাই মানুষের কাহানী। হি হি হি
নাম তার মানব। বয়স ২২। দেখতে ভালোই চেহারা ছবি। প্রিয় খাবার নুডুলস, প্রিয় রং নীল। প্রিয় বইটার নাম আমার মনে নাই, এইতো আর কি এই হলো আমার গল্পের নায়ক! আমার নায়িকা কে আসলে আমি নিজেই জানি না, নায়ক সাবের কল্পনায় থাকেন নায়িকা যা জানতে পারলাম। এখন উনি যদি হলিউড বা বলিউডে বসবাস করে থাকে তাইলে আমি ছাইরা দে মা কাইন্দা বাচি। আমার নাটকের বাজেট সামান্য এই বাজেটে নায়িকারে যে আমি ফুন দিমু তার পয়সা ও হইব না।
মানব সাহেব সবুজ বইয়ে এক প্রকার দামী স্টিকারের উচ্ছতাপে বাহনের একখান টিকিট কাটিয়া সকলের মায়া ছাড়িয়া বাহনে চাপিয়া বসিলেন আর মনে মনে কিছু সংখ্যা মুখস্ত করার চেষ্টা করিতে থাকিলেন। বাহনে মেয়ে মানুষ থাকুক আর না থাকুক মানবের কিছু যায় আসে না। তার মানবী থাকে তার মনে মনে। মানব সাহেব ভীষন ক্লান্ত রাত থেকে ক্রন্দন পালা শুরু হয়ে কিছুক্ষন আগেই শেষ হয়েছে এই ঠেলায় সকালের ঘুমটা মাটি নাস্তাটা মাটি। এখন কি মানব সাহেব ঘুমাবে নাকি খাবে বুঝতে পারছে না। খানা দানা বাহনে আসতে দেরী আছে তাই একটু ঘুমিয়ে নেয়া যাক!
মাঝখানে আমার সহযোগীর ভুলের কারনে ক্যামেরার রীল শেষ হয়ে যাবার উপলব্ধি আসতে আসতে টের পেলাম মানব সাহেব অবশেষে বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন। অবতরনের পর পর ই যা হয় সবাই ছুড়তে থাকে কিছু মানব মানবীর কাছে তাদের বিভিন্ন রংয়ের বইয়ের মাঝের সেই উচ্ছতাপের একটি পাতার বস্ত্রহরন বা নিজের বস্ত্র হরন যাই বলেন তা ঘটাতে। মানব সাহেব যথেষ্ট গিয়ানী একজন মানুষ, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা আছে তাইতো ফুলার রোড়ে প্রতিদিন ছুটাছুটি করতেন। মানব সাহেব অধীর আগ্রহে বসে আছেন কখন উনার বস্ত্রহরন জ্বালার সময় আসবে। হঠাৎ করে নায়িকার আগমন, আল্লার কসম লাগে আমি দেখি নাই! নায়িকা নাকি নায়ক সাহেবের হাত ধরে দাড়িয়ে আছেন, তাঁর আচল দিয়ে নায়ক সাহেবের মুখটা মুছে দিলেন, র্শাটের কলার টা ঠিক করে দিলেন, আর বললেন ভয় পেয়োনা তুমি সব ঠিক হয়ে যাবে। নায়ক মনে হয় এ ব্যাপারে একটু হাবা, উনি কিছুই বললেন না শুধু মাথাটা নাড়া দিলেন। আমার ক্যামেরা ম্যান অনেক চেষ্টা করলেন এই সীনটুকু ক্যামেরায় কবজ করার জন্য কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
একের পর এক বস্ত্রহরন হয়ে চলছে। মানব সাহেব এবার একেবারে প্রস্তুত বস্ত্রহরনের জন্য। মানব সাহেবের বস্ত্রহরন করবেন মিস দীপিকা। বস্ত্রহরন পালায় সেই পুরানো প্রশ্ন কেন এসেছেন এই দেশে, কলেজ নাকি ইনভার্সিটি? কত ট্যাকা দিছেন? আর কত দিবেন? কুথায় উঠবেন? কি বিষয়ে শিক্ষা লাভ করতে এসেছেন? মানব সাহেব তোতা পাখির মত সব জবাব দিয়ে গেলেন! মিস দীপিকা হঠাৎ করে তাঁর ভুরু কুচকিয়ে বললেন মানব সাহেবকে নাকি বড়মাপের ব্যাক্তি বর্গের সাথে ছোট খাটো একটি মিটিং এ বসতে হবে! কেন কেন? কিন্তু মানব সাহেব কিছু প্রশ্ন করলেন না, তিনি অর্ধেক বস্ত্রহরন ফেলেই মিস দীপিকার পিছনে পিছনে ছুটলেন। মিস দীপিকা তাকে একটি রুমে বসিয়ে কুথায় যেন হারিয়ে গেলেন। মানব সাহেব একটু ভয় পেলেন। বস্ত্রহরন পর্যন্ত ঠিক ছিল এখন কি ইজ্জতটা নিয়ে নেবে নাকি? ৪৫ মিনিট পরে মিস দীপিকার আগমন, মানব সাহেব যে কলেজের এসেছেন সে কলেজ নিয়ে নাকি তাদের একটু মাথায় ব্যথা আছে। মানব সাহেব কে অপেক্ষা করতে হবে! মানব সাহেব বুঝলেন কি আর করা। ওদিকে নায়িকার আগমন আবার! আমার ক্যামেরা ম্যান অতি আগ্রহে আবারো চেষ্টারত আছেন এই নায়িকাকে ক্যাপচার করতে। নায়িকা নায়কের হাত ধরে বসে আছে। নায়কের মন খারাপ তাকে কি জানি বলে শান্ত-আশ্বস্ত করতেছে।
এক ঘন্টা অপেক্ষা অবশেষে মানব সাহেবের বস্ত্রহরন পালা আবার শুরু হলো। যা হয় আরকি। বগর বগর বগর করতে আছে সাদা চামড়ার লুকটা। মানব সাহেব উত্তর প্রদানে অনুগত তিনি উত্তর দিয়ে যাচ্চেন। কি প্রশ্নজালে মানব সাহেব কে বিদ্ধ করা হয়েছে তা আল্লাই মালুম। অবশেষে আরো একঘন্টা মানব সাহেব কে অপেক্ষা করিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো। এতক্ষন ক্যামেরা বন্ধ ছিলো, কিন্তু যা বুঝলাম তাতে মনে হলো তেমন জটিল কিছুনা, এই একটু ডেইলি চ্যাকআপ মারলো আরকি!
মানব সাহেব ছাড়া পেয়ে মুখস্ত করা সংখ্যাগুলো আওড়াতে আওড়াতে ফোন থেকে একটা ফোন করলেন। আপর পাশের লুকটিকে বেশ চিন্তিত মনে হলো.....