
আমার বাবুটার জন্মদিন ১৭ই জুন। দেখতে দেখতে তার ৫ বছর বয়স হয়ে গেল তার। বিড়ালের বাচ্চার মত ছোট্ট আর তুলতুলা বাবুটা এখন স্কুলে পড়ে
যতই কাজের চাপ থাকুক, আজ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত আমি প্রতিদিন আমার বাবুটাকে নিয়ে কিছু না কিছু লিখবো।
১৬ই জুন খুব সকালে আমি আর বাবুর মা হাঁটতে বেড়িয়েছিলাম। বিশাল একটা পেট নিয়ে বেচারী কিভাবে হাটাহাটি করতো সেটা আজও আমার কাছে একটা বিস্ময়। যা হোক ... যেদিন আমরা গল্প করতে করতে অনেক বেশী পথ চলে গিয়েছিলাম। সে হাপিয়ে ওঠার পর যখন টের পেলাম, তখন কিছুই করার নেই। শহরতলীতে গ্রামের মত সেই রাস্তায় রিক্সা তো চলে কিন্তু তাকে রিক্সায় ওঠানো উচিৎ হবেনা কিছুতেই। তাই পথের পাশে মাঠের উপর বেশ কিছুক্ষন বসে থেকে আমরা নিরাপদেই ফিরে আসি বাসায়।
রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে ওর পেইন ওঠে। সাথে সাথে সব কয়টা হাসপাতাল আর ক্লিনিকে ফোন করা হয় এম্বুলেন্সের জন্য, কিন্তু একঘন্টার কাছাকাছি হয়ে গেলেও কোন এম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। বাবু হবার আনুমানিক ডেট ছিল আরও ১ সপ্তাহ পরে, সে কারনে আমার গাড়ী গ্যারেজে দেয়া ছিল, যেন প্রয়োজনের সময় ঝামেলা না করে। কিন্তু ঝামেলাটা সে রাতেই হয়ে গেলো

সেই রাতে সারা রাত কেউ এক ফোটা ঘুমায়নি। ডাক্তার আগেই বলে দিয়েছিলেন সিজার করা ছাড়া উপায় নেই, কিন্তু রাত ১১টা বেজে যাওয়ায় ডাক্তারকে কেউ খবর দেয়নি। ওদিকে বাবুর মা প্রচন্ড ব্যাথায় ... (সে যন্ত্রনাকে প্রকাশ করার মত শব্দ পৃথিবীতে নেই)। সেই সময় বাচ্চার অবস্থান দেখার জন্য দু'বার আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়, কিন্তু অর্ধ ঘুমন্ত আলট্রাসনোলজিস্ট কোন সমস্যা দেখতে পাননি। সকাল ৬টায় ডাক্তার সাহেবা আসেন, আরেকটি আলট্রাসনো করেই উনি ওটি (OT) রেডী করতে বলেন। তখন বাবুর মা'র অক্সিজেন চলছে, জ্ঞ্যন নেই প্রায়। খুব দ্রুত তাকে ওটিতে নেয়া হয় ... ১৫/২০ মিনিট (আমার কাছে কয়েক যুগ) পরে মা (বাবুর নানী) বলেন বাচ্চার কান্না শোনা যাচ্ছে, আমার মা, বাবা, বোন তখনও রাস্তায়। আমি খুব অবাক হয়ে যাই প্রথমে, টেনশনের কারনে ভুলেই গিয়েছিলাম যে একটা পুতুল সাইজের ছোট্ট বাবু আসবে, সেইটা আবার কান্না করবে
মিনিট পাঁচেক পর নার্স বাবুকে নিয়ে বের হয়ে এলেন, মা তাকে জড়িয়ে নিলেন আমার বাবার লুঙ্গি দিয়ে (জানিনা এটা কেমন নিয়ম

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০০৯ রাত ৮:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



