somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাতের চিঠি

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত প্রায় ২টা বাজে। বেশিরভাগ মানুষের জন্য এটা অনেক রাত। আর আমার জন্য বলা যায় রাতের শুরু। এইতো কিছুক্ষণ আগে মাত্র নেট এ বসলাম। টুকটাক চ্যাটিং, ফেইসবুকিং, মুভি দেখা আর কিছুটা সময় একা একা চুপ করে বসে থেকে অনেক কিছু ভাবা, এই কাজগুলো করেই রাতের অনেকটুকু পার হয়ে যায় প্রতিদিন। মাঝে মাঝে দেখা যায় ভোর হয়ে যায়, আর আমি টেরও পাইনা। হঠাৎ করে বাইরে আযানের শব্দ শুনে খেয়াল হয় যে রাত শেষ হয়ে গেছে! প্রায় প্রতিদিনই সকাল ৮টায় ক্লাস থাকে। তাই আযান শুনে নামাযটা পড়েই তখন শুতে যাই। "এখন ঘুমানো ফরয, নাহলে কাল ক্লাস করতে পারব না"- এটা ভেবেই দেখা যায় ঘুমোতে যাই, ঘুমাবো বলে না।

আগে একদমই রাত জাগতে পারতাম না আমি। এমনকি পরীক্ষার সময়ও রাত জেগে পড়িনি কখনোই। যদি তার সাথে ফোনে কথা হত রাতে, তাহলেই জেগে থাকা হত শুধু। আর ফোনটা রাখা মাত্রই ঘুম। কিন্তু ২বছর আগে থেকে কিছু কারণে রাতে ঘুম হত না। জীবনে insomnia - এর আগমন ঘটলো তখনি !! প্রথম প্রথম খুব অস্থির লাগতো। ঘুম আসতো না, আবার রাত জাগার অভ্যাস ছিল না তাই কষ্টও হত জেগে থাকতে। অনেক কাঁদতাম আগে। সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছিল, তাই রাত জাগাটা তখন রীতিমত বিভীষিকাময় ছিল! কি করব বুঝে পেতাম না। শুধু কষ্টের সব কথা মনে পড়তো। কি যে বাজে সময় কাটতো, লিখে বোঝানো যাবে না !!

আর এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। এখন আমি রাতে আর ঘুমোতে পারি না সহজে, এটা ঠিক। কিন্তু এখন আমি রাত জাগতে ভালবাসি। মজাই লাগে এখন যখন মনে পড়ে, আগে আমি ভাবতাম, "মানুষ কিভাবে এত রাত জাগতে পারে??" ২৪ঘণ্টার মধ্যে সবথেকে আপন সময়টাই এখন আমার রাতের জেগে থাকা সময়টুকু। সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে, অদ্ভুত একটা শূন্যতা নেমে আসে ঘরটায়, আগে অনেক ভয় পেতাম এই শূন্যতাটাকে, আর এখন প্রতিদিন অপেক্ষা করি এই সময়টার জন্য! অনেক রাতে, যখন রুমের ঘড়িটার টিক টিক শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যায় না, তখন আমি আমার কথা শুনতে পাই। ভেতরের সত্ত্বাটা নিজের জমানো সব সুখ-দুঃখ এক এক করে আমাকে বলে যায় তখন। সারাদিনের বিরতিহীন অভিনয়ে সে তখন অনেক ক্লান্ত! মায়াই হয় তার জন্য! অন্যের খুশির জন্য নিজের কষ্টকে আড়াল করে, "আমি ভাল আছি" এই মুখোশটা পরে বাইরের পৃথিবীর সামনে দাঁড়ানো, আর অবিরাম অভিনয় করে যাওয়া - এই কাজটা আসলেই বড় ক্লান্তিকর। আগে একদম পারতাম না আমি কাজটা করতে। মন খারাপ থাকলে যে কেউ আমাকে দেখে ধরে ফেলতে পারতো তা। কিন্তু এখন বেশ ভালমতই রপ্ত করে ফেলেছি গুণটা (আসলেই কি এটা গুণ?? আমি জানি না!)। অনেক সুবিধা এখন। বারবার আর সেই একি প্রশ্নের জবাব দিতে হয়না, "তোমার মন খারাপ কেন?" আর এই "গুণ" এর খারাপ দিক হল, ক্লান্তিটা। যেটা নিজের একাকী সময়টায় বেশ কষ্ট দেয়।

রাতের একাকী সময়টুকু তাই ভেতরের সত্ত্বাতার সাথেই কাটাই আমি। আমার ভেতরের আমিটা অনেক পাগল! কত কি যে স্বপ্ন দেখে সে! যার বেশিরভাগই পূরণ হবার কোন সম্ভাবনা বাস্তবিক অর্থে নেই। কিন্তু তাকে এটা কে বোঝাবে? নিজের স্বপ্নের জগৎ নিয়ে নিজের খেয়ালেই মাতোয়ারা সে! আর রাতের এই অদ্ভুত সময়টায় আমাকে তার এসব কথাই বলে যায় সে। কখনো কখনো অভিমান করে, জীবনের অনেক আঘাতের বিরুদ্ধে। কখনো হাসে, জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা মনে করে। কখনো কাঁদে, না পাওয়ার বেদনা সইতে না পেরে। আবার কখনো একদম থম মেরে বসে থাকে বাস্তবতাকে মেনে নিতে না পেরে। অনেক কিছুই বোঝানোর চেষ্টা করি তাকে আমি। কিন্তু কখনোই কিছু বোঝে না সে। অনেক একরোখা মেয়েটা! নিজে যা বোঝে তাই যেন শুধু ঠিক, আর কিচ্ছু না! আমি বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত এখন। আর বোঝানোর চেষ্টাও করি না। থাক সে তার মত। সারাটা দিনতো অন্যের জন্যই বাঁচে বেচারি। এই সময়টা নিজের মতই থাক!

এভাবে নিজের সাথে গল্প করতে করতে আমার রাতগুলো কাটে এখন। বেশ ভাল সময় বলা যায়! সারাদিনের ব্যস্ততায় নিজেকে সময় দেয়া হয়না একদমই, তাই এই সময়টায় তাই করি যা করতে আমার মন চায়! একটা কথা বলা দরকার। রাতজাগা মানুষরা সাধারণত চাঁদ দেখতে খুব ভালবাসেন। কিন্তু আমার অবস্থা ভিন্ন। আমার জানালা দিয়ে চাঁদ দেখা যায় না। কিন্তু আমার আর চাঁদ দেখতে ইচ্ছাও করেনা কেন যেন। রুমের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে আধো আলো-আধো অন্ধকারে বসে থাকতেই ভাল লাগে। সম্ভবত খুব একটা রোমান্টিক না আমি, তাই এমন হয় !! আমার কিন্তু খুব ভাল লাগে এভাবে থাকতে। একদম নিজের একটা জগৎ মনে হয় চারপাশটাকে তখন। যেখানে আমি ছাড়া কেউ নেই, কিচ্ছু নেই, এমনকি চাঁদ মামাও না! কিন্তু আবার আমি চাইলেই যে কাউকে আমার কাছে আমার খুশিমত নিয়ে আসতে পারি তখন। কল্পনার শক্তি যে অসীম! তাই একদম নিজের মত করে সাজিয়ে নেয়া যায় এই সময়টা। যেটা দিনের বেলায়, মানুষের ভীড়ে কখনোই সম্ভব না। আর এজন্যই now i just love to be insomniac!!

i'm in love with this magical "night" immensely. may be it's gonna sound kinda weird!! bt i must say, i felt it several times that "insomnia" could be blessing sometimes!!

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫৯
২২টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×