দেশে ধনী গরীবের মাঝে বাড়ছে দুরত্ব। এই দুরত্ব অর্থনৈতিক ও সামাজিক দুরত্ব। এই দেশে প্রকটভাবে বাড়ছে দারিদ্রের হার। প্রতিদিন অজস্র মানুষ অনাহারে নিদ্রায় যাচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দরিদ্র এইসব পরিবারের শিশু কিশোররা। যদিও দেশে শিশুশ্রম নিরোধে রয়েছে আইন, তবুও দারিদ্রের নির্মম কষাঘাত এই পরিবারগুলোকে বাধ্য করছে তাদের শিশু সন্তানদেরকে শ্রমে নিয়োজিত করতে। তারা যে কেবল শিক্ষা ও ন্যুনতম চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাই নয় বঞ্চিত হচ্ছে পুষ্টি থেকেও। রাষ্ট্র এখানে নির্বিকার।
অন্যদিকে এক শ্রেনীর মানুষ বিত্তের পাহাড় গড়ছে। মোটামুটিভাবে দেশের সব বিত্তবানই কমবেশি কর ফাঁকি দেয়ায় অভ্যস্থ। তারা দিনে দিনে হয়ে উঠছে বিধাতা। মাত্র দুইশ পরিবার দেশের কয়েক কোটি মানুষের সামগ্রিক সম্পদের চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক। স্বাধীনতার মাত্র চার দশকের মধ্যে কিভাবে তারা অর্জন করেছে এই বিশাল বিত্ত?
মূলত দূর্নীতিই তাদের বিত্ত অর্জনের মূল উৎস।
দূর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত রাজনীতিকরা নিজেরা দূর্নীতি করতে যেয়ে আরো বেশি দূর্নীতিবাজ করে তুলেছে আমলাতন্ত্রকে। ব্যবসায়ীরা চিরকালই সুবিধাবাদী। তারাও এক শ্রেনীর রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যাংকের সহায়তায় প্রতি বছর রাষ্টকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে।
এদেশে রাজনীতিকরা আজ ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা আজ রাজনীতিক। সব একাকার হয়েছে। রাষ্ট্র যন্ত্রের আপদমস্তক তারা অধিগ্রহন করেছে।
এমন সব বিপনী বিতানে রাতের ঢাকা জ্বলজ্বল করে যেখানে কেনাকাটা করা দুরে থাক ঢুকে দেখার সাহস পায় না লক্ষ জনতা। কিন্তু দেদারসে বানিজ্য করছে এই বিপনী বিতানগুলো। কারা যায় সেখানে ক্রেতা হয়ে?
বিদেশীরা? না, সেখানে যায় এদেশেরই কিছু মানুষ। যারা শোষন করার সুযোগ পেয়েছে দিনের পর দিন।
মানুষ কিন্তু শোষন দীর্ঘদিন সহ্য করে না। এটাই মানুষের স্বাভাবিক প্রকৃতি। দীর্ঘকালীন শোষন সৃষ্টি করে দীর্ঘ বঞ্চনার আর দীর্ঘ বঞ্চনায় সূচনা হয় বিপ্লবের। আর বিপ্লবের দাবানল একবার দাউ দাউ করে জ্বলা শুরু করলে ছোট্ট এই বাংলাদেশে শোষকেরা পালানোর সুযোগ পাবে কি?