এলাকায় শোকের ছায়া। এমন ঘটনা প্রতি মাসেই হয় কিন্তু এবার ঘটনা ঘটেছে রাজার ছেলের সঙ্গে। ডাক্তারা কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না, কারন এমন দুর্ঘটনার চিকিৎসা তাদের ধরা-ছোয়ার বাহিরে।
ঘটনা ঘটছে বিকেল পাচটায়। সব ফড়িংদের ঘরে ফেরার সময়, সবাইকে জোর করে গাছে আনা হয়েছে, রাজার ছেলেকে তো আর জোর করা যায়না। মানুষের বাড়ি-ঘরের দিক গেছে, আর পড়ছে এক বাচ্ছার হাতে, আর রক্ষে কোথায় লেজে একটা সুতা বেঁধে দিয়েছে। অনেক কষ্টে গাছে ফিরে আসলেও এখন প্রান যায়-যায় অবস্থা। যত তাড়া-তাড়ি পারা যায় সুতা খুলে ফেলতে হবে। ফড়িং এলাকায় এখন অবদি সুতা খোলার কোনো ইতিহাস নেই।
ডাক্তার বাদেও অনেক বিজ্ঞানীও চেষ্টা করতেছে, কোনো ভাবেই সুতা কাটা যাচ্ছেনা। এদিকে রাজা একটু পর-পর জ্ঞান হারাছেন ছেলের এমন অবস্থা দেখে।
এলাকার সবচেয়ে বখাটে ফড়িং এসেছে রাজার সঙ্গে দেখা করার জন্য, তার কাছে নাকি একটা আইডিয়া আছে। অন্য সময় হলে রাজা দেখা করতো না কিন্তু আজ তো আর উপাই নাই।
--বলো তোমার আইডিয়া?
-মহারাজ, এই সুতা শুধু একজনেই কাটতে পারবে।
-কে
-পিপড়া
-কি!!!!!! তোমার মাথা কি ঠিক আছে? পিপড়ারা তো আমাদের জীবিত হোক আর মরা হোক মেরে কয়েক সেকেন্ডেই খেয়ে ফেলবে। -তাছাড়া আর উপাই নাই মহারাজ, আপনি আমাকে কিছু সৈনিক দেন আমি পিপড়া ধরে আনতেছি।
পুকুরের পানিতে বাঁচার জন্য ঘাসের পাতাও ধরে ফড়িং। উপাই না দেখে সৈনিক পাঠায় দিলেন। বখাটে ফড়িং এর নাম "ফন"
ফন সব সৈনিকে মুখে ঘাস নিতে বলল, তার পর তারা বের হলো মাকড়সার জাল খুঁজতে, কাজটা করতে হবে খুব সাবধানে কারন তারা নিজেরাও সেই জালে আটে যেতে পারে। অনেক কষ্টে একটা ছোট জাল খুঁজে পাওয়া গেলো। সাবাই সেটা মুখের ঘাস দিয়ে ধরলো। জালের শেষ মাথা গুলো ঘাসে আটকে সবাই গোল করে ধরেছে।
এবার শুরু হলো পিপড়া ধরা। কোথাও একা পিপড়া খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। সাবাই দলবল নিয়ে ঘুরতেছে।এমন মাথার উপর এক শালিক ঘুরা ফেরা শুরু করলো। বিপদের উপর বিপদ। উপাই না দেখে এক পাতার নিচে লুকালো তারা, ঠিক তখনি দেখতে পেলো এক বিশাল লাল পিপড়া। কোনো কথা নেই আটকে ফেলল পিপড়াকে।
-ভাই আমাকে এমন ভাবে ধরে না আনলেও পারতেন। ভালো করে বুঝায় বললেই আমি আসতাম।
-কিন্তু আপনারা তো আমাদের খেয়ে ফেলতেন তাহলে।
পিপড়া মুচকি হেসে বলল ধুর! আমরা ফড়িং খাইনা। আমরা নিরামিষাশী। যা পায় তাই খায় ছোট লাল পিপড়ারা। ওরা মাটির নিচে থাকে আমরা থাকি গাছে। এবার তো আমাকে জাল থেকে মুক্ত করেন।
রাজার আদেশে পিপড়াকে মুক্ত করা হলো, সেই জাল থেকে মুক্ত করাও কম ঝামেলার ছিলোনা।
প্রায় দুই ঘন্টা অপারেশন করে সুতা কাটা হলো।
এর পর এরকম দুর্ঘটনা ঘটলে সেই লালপিপড়াকে ডাকা হয়। লাল পিপড়ার নাম পল, ফড়িংরা তাদের গাছের একটা ডালের নাম রেখেছে পল।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫