হ্যা, শুয়োরের পালগুলো এদিকেই এসেছিল, ওরা এখন চলে গেছে। অনেকগুলো শুয়োর পুকুরের ধারে জঙলাটায় গড়াগড়ি খেয়ে গেলো। ওখানে এখনও বিচ্ছিন্ন, এবরো থেবরো হয়ে অাছে ঘাস, লতাপাতা। একটি ছোট্ট শুয়োর শিশু পড়ে রয়েছিল এখানে, বাকিগুলোকে ওদের দলের মালিক নিয়ে গেছে সারিহীনভাবে মার্চপাস্ট করাতে করাতে।
অামি?
অামি তখন চা খাচ্ছিলাম। ও হ্যা দু অাঙুলের ফাকে একটি সিগেরেটও পুড়ছিলো।
তারপর?
তারপর, শিশুটির দিকে সকলের দৃষ্টি গেলো। শিশুটির চোখগুলো ছিল মানুষের চোখের মতোই শান্ত,স্থির অার কিছুটা অাতঙ্ক মিসৃত। মানুষ দেখে শিশুটির চোখে ছিল ভালবাসার মিনতি অার পাশাপাশি ভয়। ওর চোখ বলছিলো, মানুষের সমাজ ওর ভালো লাগে। ও মানুষের মাঝে থাকতে চায়।
এরপর, একজন বলশালী শিশুটিকে ধরে একটি বস্তায় ভরলো। শিশুটি তখনও তাদের ভাষাটি অায়েত্তে অানতে পারে নি। বোধহয় কাঁদছিল কিংবা অার্তনাদ করছিলো অদ্ভুত চিৎকারের মতো শব্দ করে। কিন্তু, সকলেই সকলের মতামত ব্যাক্ত করলো শিশুটিকে নিয়ে।
কেউ বললো শুয়োরের মালিক তার দল নিয়ে দক্ষিণ দিকে গেছে। একটু এগোলেই দলে ফিরিয়ে দিয়ে অাসা যাবে। কেউ বললো এতো ঝামেলা পোহাবার কি প্রয়োজন? শহরের উত্তরে যে মেতর পট্টি অাছে সেদিকে ফেলে অাসলেই হয়। মেতরদের সাথেই ওর যোগ্য স্থান। অন্যজন বললো এটাও নিষ্প্রয়োজন। বরং, শুয়োরের বাচ্চাটিকে বসতির বাইরে যে কোনদিকে বস্তাবন্দি করে ফেলে অাসলেই হয়।
তারপর, মানুষজন শলা পরামর্শ করে শুয়োর শিশুটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলো। অামার খুব তারা ছিলো বলে, ওঠে পরলাম। সর্বশেষ সিদ্ধান্তটি অার জানতে পারি নি।
অামি শুধু ভাবলাম, কী অার হতো শিশুটিকে এই সমাজে রেখে দিলে? এমনিতেও তো অজস্র শুয়োর বৎস্যক অামাদের সমাজে তৈরি হচ্ছে। মানুষ যখন শুয়োর হয়ে যায়। হয়তোবা শুয়োরও মানুষ হয়ে যেতে পারতো।
-
শুয়োর শিশু সমীকরণ~/~সৌরভ মাহমুদ্
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:২২