somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকায় থাকেন? মন খারাপ, একটু বিশ্রাম প্রয়োজন নীলার কাছে যান।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নীলা গ্রহরত্নটি শনি গ্রহের রত্ন। শনি খুবই শক্তিশালি গ্রহ। তার প্রকোপ এবং বক্র দৃষ্টি থেকে বাঁচতে মানুষ নীলা রত্ন ব্যবহার করে থাকে। তবে যদি আপনি যানজট, হর্ণ, বায়ুদূষণ, গরম, আশেপাশের মানুষজনের আপনার পিছনের ফিসফিস করে আর আপনি ভাবছেন আপনি ক্লান্ত। ঈদ করে মাত্র বাড়ি থেকে আসলেন। চাইলেই তো আর ছুটি পাবে না। তাছাড়া ঈদে কতগুলো টাকা গেল। এখন আবার যাবেন কোথায়?

তাদের জন্য নীলাই সমাধান। নীলা আপনার ক্লান্তি দূর করবে। নীলা দিবে আগামীকাল সকালে আবারও নতুন উদ্যোগে কাজ করার শক্তি। এক খাটে প্রতিদিন শুয়েও যে মানুষটা দূরে চলে যায় নাগরিক ব্যস্ততার নামে। তার জন্য হলেও নীলার কাছে যান। বিশ্বাস করুন। নীলার সেই ক্ষমতা আছে।

হ্যাঁ। যারা জানেন তাদের জন্য নয়। যারা না জানেন তাদের জন্যই বলি। নীলা মার্কেট হল বাস অযোগ্য ঢাকার যে গল্প শুনেন তার বিপরীত চিত্র।এখানে মানুষে মানুষে আন্তরিকতা আছে। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তারা ঐক্যবদ্ধ। তাই তাদের ধারা সম্ভব হয়েছে সরকারী জায়গা দখল করে পূবাঞ্চলে ৩০০ফিট রাস্তার ধারে অস্থায়ীভাবে এই মার্কেট গড়ার।যদি আমি বলি এ দখল বৈধ এবং যৌক্তিক।


ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে কুড়িল বিশ্বরোড। তারপর সেখান থেকে অনেক গাড়ি পাবেন নীলা মার্কেটে যাবার। অর্থাৎ
ছুটিছাটার দরকার নেই। অফিস সেরে নীলা মার্কেট ট্যুর হয়ে যেতে পারে। নীলা মার্কেটে সন্ধ্যা মানেই মাছ, মাংস পোড়া উৎসব। খাদকদের চাহিদা অনুসারে প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার মাছ, মুরগী পোড়ানো হয়।কত রকমের যে কাবাব আর খাবার মিলে নীলার কাছে না গেলে বিশ্বাস হবে না। দাম যদি বলি তবে তুলনামূলক ভাবে একটু বেশি। কিন্তু তাদের ঐক্যবদ্ধতা আপনাকে দামের কাছে হার মানাবে।সে আপনি সবজি কিনুন আর কাবাব। দাম যাই হোক না কেন স্বাদে তারা আপোষহীন। নীলা মার্কেটের কাবাব নিয়ে কোন কিছু লিখতে চাই না। ছবিও দিতে চাই না। গিযে-খেয়- দেখে আসুন।


তবে যা দিতে চাই তাহল মিষ্টি






নীলা মার্কেট কি করে যাবেন। কি খাবেন তা তো বলে দিয়েছি।এখন যদি বলেন ঈদ ফেরা ভাঙ্গতি মাসে নীলার কাছে যাব না। তবে আসছে শরতে ৩০০ ফিট রাস্তার দুপাশে কাঁশবনের মাঝখান সাই সাই করে সাইকেল, মটর সাইকেল, চালিয়ে নীলার কাছে যাবার স্বাদ, স্বপ্নটা বুকে পুষে রাখুন।


নীলা মার্কেট যাবার আগেই বালু নদী পাবেন। বলতে পারেন এই নদী একটি রাষ্ট্রের সরকার কতটা ব্যর্থ হয় তার প্রমাণ।এই নদী নিরব সাক্ষী কেন ঢাকা বাস অযোগ্য শহরের তালিকায় ২য়। এই নদী তীর দাড়িয়ে আপনি বুঝতে পারবেন আমাদের পরিকল্পনাবিদরা কতটা অদূরদশী, ধনীবান্ধব আর প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসকারী।


ছোট ছোট লালমাটির টিলা, বনের মাঝ দিয়ে বালু নদী প্রবাহিত হয়েছিল। এখন বন নেই, টিলা নেই।বন টিলা যে দখলদার কেটে খেয়ে সাবার করেছে তার নাম রাজউক।পূবাঞ্চল আবাসনের নামে তারা গরীব কৃষক, জেলেদের জমি দখল করে। ধনীদের জন্য বাসস্থান গড়ছে। রাষ্ট্রের নীতি নিধারনী পর্যায়ে কত অমানবিক, অসভ্য হলে গরীবকে বাদ দিয়ে। ধনীদের জন্য ভতুর্কি দিয়ে আবাসন গড়ে বলতে পারে? এখানকার মানুষের জমি যে একবার কেড়ে নিয়েছে তা নয়। আজকের গুলশান,বনানি গড়তেও তাদের পূবপুরুষদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।

এই বালু নদীর তীর ঘেষে বিশাল বিল ছিল।বিলগুলো ছিল শত শত মাছ-পাখির আবাসস্থল। কিন্তু আবাসন কোম্পানীগুলো কয়েক যুগের ব্যবধানে সব হত্যা করে গড়ে তুলে বালুর ডিবি।শুধুই উন্নয়ন।আবাসন কোম্পানীগুলো নদীর তীরবর্তী কৃষকের জমি, বিল ভরাট-দখল করতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে তাদের কোম্পানী বড় বড় পদে বসিয়েছে। ফলে সব দখল সহজ হয়ে গেল।সব সরকারের আমলে এই দখলদাররা সুযোগ পেয়েছে। নির্যাতিত হয়েছে কৃষক,জেলে, স্থানীয় মানুষজন। পূবাঞ্চলে বেশির ভাগ পরিবারের নামে মামলা ছিল বা আছে। পূবপুরুষের ভিটা রক্ষায় কত লাশ আর রক্ত তাদের গিয়েছে বালু নদীতে মিশে তার কোন হিসেব নেই।বালু নদীর মতই এখানকার স্থানীয় মানুষরা সংকীণ হয়ে আসছে।


নীলা মার্কেট থেকে কাবাব,পিঠা, মিষ্টি, মুড়ি, বার্গার, বিরিয়ানি, ভাত, সবজি, ডাল খেয়ে। সোজা দক্ষিণে চলতে থাকুন। কিছু দূর গেলে একটা নদীর অংশ পাবেন। সচ্ছ পানির নদী। এখনো বর্ষায় চাঁদের আলো এখানে লুটিপটি খায়। জেলেরা মাছ ধরে।কৃষকরা এই নদীর পানি দিয়ে সবজি ফলায়।

নদী থেকে বাতাস জলে স্নান করে আপনাকে প্রশান্তি দিবে। এই নদীর তীরে দাঁড়িয়ে যদি বলতেই পারেন। আমি বালু নদীর যে স্বাদ, সৌন্দর্য পেয়েছি তা আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে চাই। তবে ঢাকা আর বাস অযোগ্য শহরের তালিকায় ২য় স্থানে থাকবে না। তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বংশী, বালু,শীতলক্ষাকে ভালবাসুন। তাদের পক্ষে কন্ঠ ছাড়ুন। হয় জোর জোরে কিংবা ফিসফিস করে প্রেমিকার কানে কানে। কারণ এক কান, দু কান করেই সব কানে ছড়িয়ে যাবে। এ উন্নয়ন চাই না। এই উন্নয়ন রুখতে হবে। আমরা সচ্ছ, প্রবাহমান বালু, বংশী, বুড়িগঙ্গা,শীতলক্ষা, গঙ্গা, যমুনা,তিতাস, তালমা, তিস্তা , জলঢাকা ডাহুক ডুডুয়া , মহানন্দা ,সংকোশ, রায়ডাক , তোর্সা,মেচী , মূর্তি ,ফুলহার,ব্রহ্মপুত্র, মিসিসিপি, আমাজান, নীল নদ, ইয়াংজি, ইয়েনিছি, ওবি, ইয়োলো রিভার, পারানা, আমুর, কঙ্গো চাই।


আপনাদের নীলা ভ্রমণ আনন্দময় হোক। ঢাকা বাসযোগ্য নগরী হোক। এই প্রত্যাশা রইল।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩১
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×