তিনটা মাছের নাম লেখতে বলা হইলো। ছোট বেলার কথা। মাথায় আসলো - ইচা, বইচা, পুটি; তাই লেখে ফেল্লাম। কুমিল্লায় আমরা চিংড়ি মাছকে ইচা মাছ বলি। আর বইচা মাছটা বড় হয়ে আর দেখি নাই। তাই শুদ্ধ নামটা কী হবে জানি না।
ঘটনা তা না, ঘটনা হইলো। আমার আশেপাশের তারা লেখলেন - ইলিশ, বোয়াল, রুই, কাতল...। শিক্ষক যিনি ছিলেন তিনি মুখ ভেংচে অপমান করলেন। সবার সাথে তুলনা করে করে অপমান করলেন। শুধু তাই না, আমাকে এই পড়ার আসরে আর ঠাঁই দেওয়া হবে না সিদ্ধান্ত হইলো। তখনো বুঝি নাই, আমার অপরাধটা কোথায়। কিন্তু ঘটনাটার পর আমার মনটা খুব হীন হয়ে গেলো। সবাই আমাকে দেখলে মুখ ভেংচায়ে বলে, ইচা, বইচা, পুটি...।
বড় হওয়ার পর অপরাধটা কী করেছিলাম তা বুঝতে পারলাম। ইংরেজীতে একটা কথা বলে, থিংক বিগ। এর বাংলাটাও সহজ। বড়ো ভাবো, ছোটখাটো কিছু ভাববা না। আমার অপরাধটা ছিলো, আমি বড়ো ভাবতে পারি নাই। আমি ছোট ভেবে ফেলছি। মনে যা আসে, তাই লেখা যায় না। মনের কথাকে ঘুড়ায়ে ফিড়ায়ে, ভেবে চিন্তে লেখতে হয়। সহজাত সরলাতার দাম নাই।
যারা সেইদিন ইলিশ, রুই, কাতল লিখেছিলেন। তারা আজ রুই, কতল টাইপ বড় মানুষ, সফল মানুষ। আমি থিংক বিগ করতে পারি নাই। তাই আমি বড় কেউ হইতে পারি নাই। মনে যা আসে, তাই এখনো লেখে ফেলি। একে ঘুড়িয়ে, প্যাচিয়ে ভেবে চিন্তে লেখতে পারি না। উপরওয়ালা সবাইকে থিংক বিগে এর গুন দেন না। কিন্তু ভাবনাটা বড় করা খুব দরকার। যে ভাবনায় ছোটদেরও ঠাঁই হয় সমান মমতায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৭